রাজবাড়ীতে বিয়ের ২০ বছর পর স্বামী-সতীনের ভাই ও মায়ের বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতন ও যৌতুকের অভিযোগে মামলা করেছেন দুই সন্তানের মা লতা আক্তার (৩৯)। তিনি রাজবাড়ী থানায় মঙ্গলবার এ মামলা করেন।
মঙ্গলবার সকাল ৯টায় লতার স্বামী ও সতীন সেলিনা, সেলিনার মা নুরজাহান বেগম ও ভাই শামীম সরদার মিলে লতা ও তার মেয়ে মৌমিতাকে বেদম মারপিট করে ঘরে আটকে রাখে। তাদের কোনো খাবারও দেয়া হয় না। পরে লতার বাবা ও ভাইকে ফোনে সংবাদ দেয়। এরপর তারা গিয়ে এলাকবাসীর সহায়তায় লতা ও তার দুই মেয়েকে উদ্ধার করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করান। পরে হাসাপাতাল থেকে লতা তার দুই মেয়েসহ বর্তমানে সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের মর্জ্জোৎকোল গ্রামে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
লতা আক্তার ও তার দশম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে মৌমিতা যৌতুক লোভী মালেক ও তার পরিবারের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেছেন। থানায় লিখিত অভিযোগে লতা আক্তার বলেন, ২০০০ সালের ১০ জুলাই রাজবাড়ী সদর উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের মাটিপাড়া গ্রামের মালেক মিয়ার সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর লতার বাবা আব্দুর রশিদ সেখ মেয়ে জামাই মালেক মিয়াকে রাজবাড়ী স্বাস্থ্য বিভাগে চাকরি পাইয়ে দেন। বর্তমানে মালেক মিয়া ফরিদপুর আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত।
মিজানপুর ইউপি চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান বলেন, ঘটনা তিনি জানেন। লতা ও তার বাবা নিরীহ মানুষ। মালেক ও লতার সংসারে দুটি মেয়ে সন্তান জন্ম নেয়। তাদের বড় মেয়ে মৌমিতা মাটিপাড়া কাজী ছমির উদ্দিন হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী। এরই মধ্যে যৌতুক লোভী মালেক মিয়া ২০১৯ সালের ২৫ জুলাই প্রথম স্ত্রী লতাকে না জানিয়ে মাটিপাড়ার পার্শ্ববর্তী বারলাহুরীয়া গ্রামের হাতেম সরদারের মেয়ে দুই সন্তানের মা এক রিকশা চালকের স্ত্রী সেলিনাকে (৩৪) বিয়ে করেন। তখন লতা ও এলাকবাসী দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দিতে চাপ দেয়। এতে মালেক কৌশলে সেলিনার কাবিনের পাঁচ লাখ টাকা লতার বাবার বাড়ি থেকে এনে দিতে বলে এবং লতাকে দুই সন্তানসহ তাড়িয়ে দেয়। এই পরিস্থিতিতে লতা রাজবাড়ীর আমলী আদালতে দুটি মামলা করেন।