‘কনে যাব, ঘরই তো নাই’

প্রথম আলো প্রকাশিত: ২৩ জুন ২০২০, ০৯:০৭

আফরোজা খাতুনের (৬০) স্বামী মারা গেছেন পাঁচ বছর আগে। তিন শতক জমির উপর তাঁদের দুটি বসতঘরে চার মেয়ে নিয়ে থাকছিলেন। ৫০ শতক জমিতে চিংড়ির ঘের। ঘেরে কাজের পাশাপাশি বাসাবাড়িতে কাজ করে চলতেন মা-মেয়েরা। করোনাকালে বাসাবাড়ির কাজ হারিয়েছেন তাঁরা। গত মাসে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ভেসে গেছে তাঁদের চিংড়ির ঘের। জলোচ্ছ্বাসের বাঁধভাঙা পানিতে ধসে পড়েছে বসতঘর দুটি। আম্পানের রাত থেকে এক মাস ধরে চার মেয়েকে নিয়ে থাকছেন হিজলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনে।

এখন কবে বাঁধ হবে, কবে ফিরতে পারবেন, সেই আশায় দিন গুনছেন তিনি। তবে ফিরবেনই বা কোথায়, ঘরই তো নেই। সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার হিজলিয়া গ্রামের আরও অনেকেই আফরোজা বেগমের মতো ঘর হারিয়েছেন। এক মাস ধরে ঘরেও ফিরতে পারছেন না তাঁরা। গতকাল রোববার প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে হিজলিয়া গ্রামে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যরা। ত্রাণ পেয়ে আফরোজা খাতুন বলেন ‘ত্রাণ না পালি খাব কী! ত্রাণ দেও। কিন্তু কবে বাড়ি ফিরতি পারব কতি পারো?

এভাবে কত দিন পারা যায়, খেয়ে না–খেয়ে আর বসে বসে?’ একটু পরে অন্যমনস্ক হয়ে বলেন, ‘কনে যাব, ঘরই তো নাই। দুটো ঘরই পড়ে গেছে। ঘর বাঁধব যে, তা টাকা পাব কনে?’ ২০ মে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের সঙ্গে আসা জলোচ্ছ্বাসে খোলপেটুয়া নদীর ১০ স্থান থেকে বাঁধ ভেঙ্গে তলিয়ে গেছে প্রতাপনগর ইউনিয়নের ১৭ গ্রাম। হিজলিয়া গ্রাম তার একটি। গ্রামের সব জায়গায় পানি হওয়ায় সেখানে পৌঁছাতে পারেননি বন্ধুসভার সদস্যরা। পরে সাতক্ষীরা-খোলা পাঁকা সড়কের এক জায়গায় জড়ো হওয়া আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত ৩০টি পরিবারের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। ত্রাণ নিতে এসেছিলেন একই গ্রামের সুখজান বিবি (৬৫)। নদীতে জাল টেনে মাছ ধরে আর অন্যের বাড়িতে কাজ করে চলতেন। আম্পানে তাঁর একমাত্র ঘরটি পড়ে গেছে। এখন থাকেন এক প্রতিবেশীর বাড়িতে। একই গ্রামের ইয়াকুব সানা (৭৫)। স্ত্রী, দুই ছেলে ও ছেলের বউ নিয়ে ছয়জনের সংসার।

এক ছেলে দিনমজুর, আরেক ছেলে নৌকা চালান। আম্পানে বাড়ির তিনটি ঘরের দুটি পড়ে গেছে। এক ঘরে সবাই থাকেন। এর আগে থেকেই করোনার কারণে সবার আয় বন্ধ। তিনি বলেন, ‘খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। এর আগে কেউ কোনো ত্রাণ দেয়নি। বাঁধ না বাঁধতি পারলি পানি নামবি না, সব ডুবিই থাকপে। এভাবে আর কত দিন চলা যায়!’ প্রথম আলো ট্রাস্টের ত্রাণ তহবিলে এ পর্যন্ত মোট জমার পরিমাণ ৩১ লাখ ৩১ হাজার টাকা।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us