মহাসড়কে চলাচলকারী যানবাহনের ‘পিপ-পিপ’, ‘প্যা-পু’ শব্দে সব সময় সরব থাকে পুরো এলাকা। যে সময়টুকু নীরব থাকে, তখন কানে ভেসে আসে হাতুড়ি দিয়ে ইট ভাঙার ‘টুশটাস’ শব্দ। সেখানে ইট ভেঙে খোয়া করে চলেছেন এক দম্পতি। মাথায় চুল পেকে একেবারে ধবধবে সাদা হলেও বয়স নিয়ে পরোয়া নেই তাঁদের। দৃঢ় মনোবল নিয়ে আপনমনে একের পর এক ইট ভেঙে যাচ্ছেন তাঁরা।
এই দম্পতি হলেন আকরাম আলী (৭৪) ও সুফিয়া বেগম (৬৩)। ঠাকুরগাঁও-দিনাজপুর মহাসড়কের পাশে সদর উপজেলার জগন্নাথপুর এলাকায় ইট ভাঙছিলেন আকরাম-সুফিয়া। সম্প্রতি তাঁদের কাছে গিয়ে পরিচয় জানাতেই হাসিমুখে কথা বলতে শুরু করলেন তাঁরা। সেই সময় শোনালেন করোনাকালের জীবনসংগ্রামের গল্প।
হাতুড়ি দিয়ে ইট ভাঙার ফাঁকে ফাঁকে আকরাম ও সুফিয়া জানালেন, উপজেলার জগন্নাথপুর এলাকার বাঙালিপাড়া আবাসনে তাঁদের বাস। সরকার থেকে পাওয়া ওই তিন শতক জমিই তাঁদের সম্বল। একটি স মিলে কাজ করতেন আকরাম। আর সুফিয়া বাড়িতেই থাকতেন। তখন তাঁদের সংসার ভালোই চলছিল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে আকরামের সেই কাজ এখন বন্ধ। কাজ হারিয়ে সংসারের চাকা সচল রাখতে ইট ভাঙা শুরু করেন তিনি। ওই আয়ে সংসারের খরচ না চলায় সুফিয়াও একসময় তাঁর সঙ্গে যোগ দিয়ে ইট ভাঙা শুরু করেন।