হেমন্ত হয়ে ওঠার গল্প

প্রথম আলো প্রকাশিত: ১৬ জুন ২০২০, ১১:৩০

গত শতাব্দীর আশির দশকের কথা। বঙ্গসংস্কৃতি সম্মেলন হচ্ছে কলকাতার ময়দানে। সম্মেলনের এক সন্ধ্যায় ছিল দুই বন্ধুর আড্ডা। গল্প, গান আর কবিতা দিয়ে পূর্ণ ছিল সে আয়োজন। বন্ধু দুজন হচ্ছেন গায়ক হেমন্ত মুখোপাধ্যায় আর কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়। আড্ডার মধ্যেই সুভাষ মুখোপাধ্যায় প্রশ্ন করেছিলেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়কে, ‘তোমার চুল কৃত্রিম রঙে আবৃত কেন?’ অর্থাৎ সুভাষ মুখোপাধ্যায় জানতে চেয়েছিলেন, হেমন্ত কেন কলপ লাগান চুলে।

প্রশ্ন শুনে ময়দানে জড়ো হওয়া দর্শক-শ্রোতারা হাততালি দিয়ে উঠলেন। হাসিতে ভরে গেল সারা ময়দান। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় সঙ্গে সঙ্গে সপ্রতিভ স্বরে বললেন, ‘তুমি কবি মানুষ, পাকা চুলের সঙ্গে কবি ইমেজটা খাপ খেয়ে যায়। আমি যদি একমাথা পাকা চুল নিয়ে প্রেমের গান করি, তাহলে কি শ্রোতারা শুনবে?’ করতালিতে মুখর হয়ে ওঠে ময়দান। সুভাষ মুখোপাধ্যায় বন্ধুর পিঠ চাপড়ে দেন। ১৯৩৫ সালে বেতারে গাওয়া সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের লেখা একটি গান মনে করে তা থেকে দুটো লাইন শুনিয়েছিলেন হেমন্ত। মাঠভর্তি দর্শকের কাছে সে ছিল এক অভিনব প্রাপ্তি। পূজার সময় আকাশবাণী কলকাতায় ‘মহালয়া’ আমরা অনেকে শুনেছি। সে সময় এর সংগীত পরিচালক ছিলেন পঙ্কজ মল্লিক।

কোনো এক কারণে বেতার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় তিনি সে সময় অনুপস্থিত ছিলেন। ১৯৪৪ সালে মহালয়ার ভোরে ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ নামে যে সংগীতালেখ্যটি প্রচারিত হয়েছিল, তার সংগীত পরিচালক ছিলেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। হেমন্তের বয়স তখন মাত্র ২৪। কতটা প্রতিভাধর হলে এ রকম তরুণ বয়সী একজনকে এত বড় একটি কাজের দায়িত্ব দেওয়া যায়! এই কাহিনি এখানে বলে রাখলাম, হেমন্তের হেমন্ত হয়ে ওঠার পথের গল্পটা বলব বলে।

ভবানীপুরের মিত্র ইনস্টিটিউশন মূলত বড়লোকদের স্কুল ছিল। কেরানি বাবার ছেলে হেমন্ত সেখানে পড়তেন। তখন দশম শ্রেণির ছাত্র। প্রবেশিকা পরীক্ষা শেষ হলেই কলেজের ঢুকবেন। ক্লাসের মাঝে অফ পিরিয়ডে হইচই করছিল ক্লাসের ছেলেরা। কোরাস গাইছিল। হঠাৎ সেখানে এসে হাজির হলেন স্কুলের অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার। সবাই চুপ। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, ‘কারা গান করছিল?’ এবারও কেউ কথা বলে না। হেমন্ত সরল মনে বলল, ‘আমি, স্যার!’ ‘আমার সঙ্গে অফিসে এসো।’ লাল কালি দিয়ে রেজিস্টার খাতা থেকে হেমন্তের নাম কেটে বললেন, ‘যাও, এবার গান গেয়ে বেড়াও! স্কুল থেকে তোমায় তাড়িয়ে দেওয়া হলো।’ ক্লাসের বন্ধুরা সবাই বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল। স্কুল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, এ কথা শুনে তারা অবাক হলো। ক্লাস এইটের দেবকুমার রায় ছিল একটু বেপরোয়া (বড় হয়ে তিনি পুলিশ অফিসার হয়েছিলেন)। তিনি অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার মশায়ের কাছে গিয়ে বললেন, ‘অপরাধ আমরা সবাই করেছি, তাহলে আমাদের সবাইকে তাড়ান। শুধু ওকে শাস্তি দিচ্ছেন কেন?’ মাস্টারমশাই হুংকার দিলেন, ‘গেট আউট!’
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us