বিনোদন দুনিয়ার তারকাদের রোজনামচা গুছিয়ে রাখাই ছিল তার কাজ। সে কাজে যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছিলেন তিনি। অল্প বয়সেই জনসংযোগের কাজে পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছিলেন দিশা সালিয়ান। ক্যারিয়ারের শুরুতে তিনি ছিলেন পাবলিক রিলেশনস ম্যানেজার। পরে হয়ে ওঠেন সেলেব্রিটি ট্যালেন্ট ম্যানেজার। কাজ করতেন কর্নারস্টোন স্পোর্টস অ্যান্ড এন্টারটেনমেন্ট লিমিটেডে। এই কনসালটেন্সির মালিক অভিনেতা সোহেল খানের শ্যালক বান্টি সাজদেহ।
অভিনয় জগতের তারকাদের পাশাপাশি বহু নামী খেলায়াড়ের ট্যালেন্ট ম্যানেজারের পরিষেবা দেয় এই সংস্থা। এই সংস্থার কর্মী হিসেবে দিশা ডিল করতেন বিনোদন জগতের তারকাদের সঙ্গে। কাজ করেছেন বরুণ শাহ, ভারতী সিংহ, রিয়া চক্রবর্তী এবং কিছু সময়ের জন্য ঐশ্বর্যা রাই বচ্চনের সঙ্গেও। নিজের কাজে দক্ষ হিসেবে পরিচিতি ছিল ঝকঝকে তরুণী দিশার। ক্যারিয়ারের শুরুতে তিনি কাজ করেছিলেন সুশান্ত সিংহ রাজপুতের ম্যানেজার হিসেবে।
বলিউডের অন্দরে যাদের আনাগোনা, তারা জানেন, ইন্ডাস্ট্রিতে সুশান্তের প্রতিষ্ঠার পিছনে বিরাট অবদান রয়েছে সেলিব্রিটি ট্যালেন্ট ম্যনেজার দিশা সালিয়ানের। কিন্তু পরে সুশান্তের ম্যানেজার হিসেবে আর দেখা যায়নি তাকে। যদিও দিশা নিজেই ছেড়েছিলেন, না কি সুশান্ত তাকে সরিয়েছিলেন, সেই বিষয়টি স্পষ্ট নয়। গত ৮ এবং ৯ জুনের সন্ধিক্ষণে রহস্যমৃত্যু হয় দিশার। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মুম্বইয়ের মালাডের একটি বহুতল থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় তার। বাবা মায়ের সঙ্গে দিশা থাকতেন মুম্বইয়ের দাদারে।
গত ৮ জুন রাতে তিনি কয়েক জন বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে গিয়েছিলেন মালাড ওয়েস্টের একটি ফ্ল্যাটে। ফ্ল্যাটের মালিক দিশার প্রেমিক, অভিনেতা রোহন রাই। পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, রাতের খাওয়াদাওয়ার পরে বন্ধুদের সঙ্গে মদ্যপান করেছিলেন দিশা। রাত একটা নাগাদ সুরাসক্ত অবস্থায় ১২ তলা ফ্ল্যাটের খোলা জানালা দিয়ে নীচে পড়ে যান তিনি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছয় রাত আড়াইটে নাগাদ। সে সময় খোলা রাস্তায় রক্তের স্রোতে পড়েছিলেন দিশা। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। মেয়ের মৃত্যুতে কোনও ষড়যন্ত্র সন্দেহ করেননি দিশার বাবা মা। তাদের দাবি, নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে ইদানীং উদ্বিগ্ন ছিলেন দিশা। তবে রোহনের সঙ্গে মেয়ের সম্পর্ক নিয়ে আপত্তি ছিল তাদের।