পরিপক্ব আম পাড়ার দুই থেকে তিনদিনের মধ্যেই চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে পাকা আমের সুঘ্রাণ। আম হয়ে উঠে নরম। গায়ে ধারণ করে লাল-হলুদ বর্ণ। ছিলে ভেতরের তুলতুলে নরম ফাইবার বা আঁশ মুখে দিলেই গলে যায়। রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভালো জাতের আম তো বটেই, অধিকাংশ গুঁটিজাতের পাকা আমেরও চিরচারিত গুণ বা বৈশিষ্ট্য এগুলো।
কিন্তু এবারই ঘটছে ভিন্ন! নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও পাকছে না আম। অনেক ক্ষেত্রে গাছ থেকে পাড়ার ৭ দিনেও নরম হচ্ছে না! গায়ে ধরছে না সেই লাল-হলুদ বর্ণও। সুস্বাদু জাতের আম বলে খ্যাতি থাকা পাকা আমেও মিলছে ‘মাছিপোকা’!
আম পাকার এই বৈপরীত্যে ‘ভ্যাবাচ্যাকা’ খেয়ে গেছেন অধিকাংশ বাগান মালিক ও পাইকার ব্যবসায়ী। বছরের পর বছর আম ব্যবসা করেও এবার আমের ‘মতিগতি’ কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছেন না তারা। আর এমন ঘটনা গভীরভাবে ভাবিয়ে তুলেছে ফল গবেষক ও কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাদেরও। তারা রীতিমতো উদ্বিগ্ন।
গবেষক ও কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন- আবহাওয়ার চরম বৈপরীত্যের কারণে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। প্রকৃতির চরম প্রতিকূলতায় অতি লোভনীয় ও রসালো ফল আমের ঐতিহ্যবাহী স্বাদ, গন্ধ ও মিষ্টতা থেকে এবার বঞ্চিত হবেন ভোক্তারা।
চলতি বছর আমের ওপর দিয়ে ভয়াবহ বিপর্যয় গেছে বলে মনে করেন রাজশাহী ফল গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলিম উদ্দিন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি রাজশাহী অঞ্চলে আমসহ বিভিন্ন ফল নিয়ে গবেষণা কাজ করছেন। তাঁর ধারণা- ‘আবহাওয়ার বৈপরীত্যই রসালো ফল আমের স্বাদ, গন্ধ ও মিষ্টতা কেড়ে নিয়েছে।’