অভাবের তাড়নায় শত বছরের বৃদ্ধা মাকে মহাসড়কের পাশে রেখে গেলেন বয়োবৃদ্ধা ছেলে-মেয়ে। বৃদ্ধার নাম সুফিয়া খাতুন। তার ছেলে-মেয়ে দুজন। তারাও বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছেন। তাদেরকে প্রতিদিন অভাব আর দরিদ্র্যতার সঙ্গে যুদ্ধ করে বাঁচতে হচ্ছে। ভিটেমাটি কিছুই নেই। সংসার চলে কষ্টে। শেষ পর্যন্ত মাকে রাস্তায় ফেলে গেছেন তারা।
তাই সুফিয়া খাতুনকে কেউ নিতে যাচ্ছেন না। বৃদ্ধা সুফিয়া চোখে দেখেন না। কানেও কম শোনেন। তাকে ১৭ ফেব্রুয়ারি ফেলে যাওয়া হয় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। প্রথমে তিনি কিছু বুঝে উঠতে পারেননি। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পরও আপন কাউকে কাছে না পেয়ে চিৎকার শুরু করেন। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল ইসলাম খান ঘটনাস্থলে যান। তিনি সুফিয়াকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির পর উপজেলা প্রশাসন চিকিৎসার পাশাপাশি অন্য বন্দোবস্তও করে দিয়েছে। এখন তিনি শারীরিকভাবে সুস্থ। কিন্তু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির প্রায় চার মাস পরও সুফিয়াকে তার পরিবারের সদস্যরা কেউ নিতে আসছেন না। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহীনুর আলম বলেন, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে সুফিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
তিনি শারীরিকভাবে সুস্থ হলেও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। করোনা সংক্রমণকালে বৃদ্ধা সুফিয়া খাতুনের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘ সময় ভর্তি থাকাটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এদিকে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সকালে উপজেলা প্রশাসন সুফিয়ার ছেলে মোখলেছুর রহমানের খোঁজ পান। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেকে এনে কথা বলা হয়। এ সময় তাদের পারিবারিক অসচ্ছলতার কথা জানা যায়।