কোভিড হাসপাতালে নন-কোভিড চিকিৎসা: জনশক্তি ও অবকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন

বাংলা ট্রিবিউন প্রকাশিত: ১৩ জুন ২০২০, ২০:৫৭

দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরু থেকেই চিকিৎসাব্যবস্থা নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন মানুষজন। করোনা আক্রান্ত এবং সাধারণ রোগী সবাইকেই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে হাসপাতালগুলোতে। পজিটিভ সার্টিফিকেট হাতে না থাকায় করোনা আক্রান্তরা যেমন করোনার জন্য নির্ধারিত হাসপাতালে ভর্তি হতে পারছেন না, তেমনি করোনা আক্রান্ত নন-এমন রোগীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন। হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ঘুরে রোগীরা ভর্তি হতে পারছেন না, এমনকি ঘুরে ঘুরে অ্যাম্বুলেন্সে মৃত্যু হয়েছে এমন সংবাদও গণমাধ্যমও এসেছে। বেসরকারি হাসপাতালগুলোর সঙ্গে একাধিকবার বৈঠকের পরও যখন এই সমস্যার কোনও সুরাহা হচ্ছিলো না, তখন এর সমাধানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একাধিক নির্দেশনা জারি করে। দেশে ৫০ শয্যা ও এর বেশি শয্যার যেসব হাসপাতাল রয়েছে, সেসব হাসপাতালে কোভিড এবং নন-কোভিড রোগীদের চিকিৎসা দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক নির্দেশনাতে বলা হয়, সব বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে সন্দেহভাজন কোভিড রোগীদের চিকিৎসার জন্য পৃথক ব্যবস্থা থাকতে হবে। চিকিৎসা সুবিধা থাকা সত্ত্বেও জরুরি চিকিৎসার জন্য আসা কোনও রোগীকে ফেরত দেওয়া যাবে না। দেশের কোনও সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতালে উল্লিখিত নির্দেশনা অমান্য করলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রচলিত বিধান অনুসারে লাইসেন্স বাতিলসহ প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তবে ৫০ শয্যার বেডে কীভাবে করোনার চিকিৎসা দেওয়া হবে জানতে চাইলে কোভিড-১৯ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক জাতীয় সমন্বয় কমিটির উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, 'কাছাকাছি তো কোনোভাবেই করোনা রোগীদের সঙ্গে অন্যদের রাখা যাবে না। কোভিড ছোঁয়াচে রোগ, অসুস্থদের থেকে সুস্থদের দূরে রাখতে হবে, যেন কেউ কারও সংর্স্পশে না আসতে পারে। পাশাপাশি ওয়ার্ডও যদি হয় তাহলেও তো সমস্যা।'

তিনি মনে করেন, কোভিড রোগীদের জন্য সম্পূর্ণ পৃথক ব্যবস্থা করা যদি সেটা সম্ভব হয় তাহলে রক্ষা হতে পারে। নাহলে এটা হিতে বিপরীত হয়ে যাবে।

এদিকে সব হাসপাতালে কোভিড ও নন-কোভিড রোগীর চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখা দরকার এবং তা বাস্তবায়ন করা উচিত জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বেনজির আহমেদ বলেন, 'নন-কোভিড রোগীরা এই সময়ে চিকিৎসা নিতে পারছে না, অথচ অনেকেরই জরুরি চিকিৎসা দরকার। কিন্তু তারা চিকিৎসা করাতে গিয়ে সমস্যা পড়ছেন। তাই যারা করোনাতে আক্রান্ত, তারাও যেন সহজে চিকিৎসা পান, সেজন্য এই চিকিৎসা সুবিধা শুধু শহরে সীমাবদ্ধ রাখলে হবে না, এই সুবিধা জেলা-উপজেলাতে নিয়ে যেতে হবে।'

এজন্য প্রস্তুতি দরকার উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'এজন্য গাইড-লাইন তৈরি করে দিতে হবে। কোভিড-নন কোভিডদের আলাদা রাখতে হবে, চিকিৎসক, নার্সসহ সব স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে।' এছাড়াও ইনফেকশন কন্ট্রোলের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রয়োজন মন্তব্য করে অধ্যাপক বেনজির আহমেদ বলেন, 'যেন তারা নিজেরা আক্রান্ত না হন এবং নন-কোভিড রোগীরা যেন হাসপাতালে এসে কোভিডে আক্রান্ত না হন তা নিশ্চিত করতে এই বিশেষ প্রশিক্ষণ লাগবে। তবে একসঙ্গে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা গেলে কোভিড আক্রান্তরা যেমন ভালো চিকিৎসা পাবেন, পাশাপাশি নন-কোভিড রোগীদের চিকিৎসা চাহিদাও পূরণ করা যাবে।'

অন্যান্য দেশের মতোই একই হাসপাতালে কোভিড-নন কোভিড রোগী থাকবে মন্তব্য করে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)-এর উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, 'পরামর্শক কমিটি এটা বলেছে। কারণ অন্য রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে এলেও পরীক্ষা করার পর অনেকেই কোভিড ধরা পড়েছে। তাই এসব রোগীদের জন্য ফ্যাসিলিটিগুলো একই জায়গায় থাকা উচিত। আবার করোনা আক্রান্ত রোগীর অন্য চিকিৎসা দরকার হতে পারে।' তাই এই সিদ্ধান্ত ঠিক আছে এবং সব হাসপাতালে করোনা রোগী আসতে পারে এটা মনে করে চিকিৎসকসহ অন্যদের সঠিকভাবে সুরক্ষা নিয়ে চিকিৎসা দিতে হবে বলেও মনে করেন তিনি।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ঘটনা প্রবাহ

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us