দৈনিক ও গত এক সপ্তাহে নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষ দশে। আর এ পর্যন্ত মোট আক্রান্তের বিবেচনায় বাংলাদেশ শীর্ষ ২০ দেশের মধ্যে আছে। কিন্তু এসব দেশের মধ্যে করোনার নমুনা পরীক্ষার ক্ষেত্রে সবচেয়ে পিছিয়ে দুই দেশের একটি বাংলাদেশ।
বাংলাদেশে প্রতি ১০ লাখ মানুষের মধ্যে গড়ে ২ হাজার ৮৭৬ জনের করোনা (কোভিড-১৯) শনাক্তকরণের পরীক্ষা হচ্ছে। বাংলাদেশের চেয়ে অল্প কম পরীক্ষা হচ্ছে মেক্সিকোতে। আর দক্ষিণ এশিয়ার আটটি দেশের মধ্যে তুলনা করলে বাংলাদেশের চেয়ে কম পরীক্ষা হচ্ছে কেবল আফগানিস্তানে।
যদিও বাংলাদেশে সংক্রমণ বৃদ্ধির এই সময়ে বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষার সংখ্যা ও আওতা আরও বাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন। কারণ, পরীক্ষা বাড়লে আরও বেশিসংখ্যক আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হবে। তাতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রে সহজ হবে।
দেশে বর্তমানে ৫৯টি ল্যাবরেটরিতে কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ পরীক্ষা হচ্ছে। এর মধ্যে ঢাকায় ২৯টি এবং ঢাকার বাইরে ৩০টি। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫ হাজার ৯৯০ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে, যা এ পর্যন্ত এক দিনে সর্বোচ্চ পরীক্ষা। গত ১৪ মে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছিলেন, শিগগির দৈনিক পরীক্ষা ১৫ হাজারে উন্নীত করা হবে। এ ঘোষণার প্রায় এক মাস পরে গত বুধবার সেই লক্ষ্যে পৌঁছানো গেছে।
পরিসংখ্যান নিয়ে কাজ করা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস শুরু থেকে করোনাবিষয়ক হালনাগাদ তথ্য দিয়ে আসছে। তাতে দেখা যায়, মোট আক্রান্তের সংখ্যায় শীর্ষ ২০টি দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান গতকাল পর্যন্ত ছিল ১৯তম।
ওয়ার্ল্ডোমিটারসের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বাংলাদেশে প্রতি ১০ লাখে ২ হাজার ৮৭৬ জনের করোনার পরীক্ষা করা হচ্ছে, যা শীর্ষ ২০ দেশের মধ্যে সবচেয়ে দ্বিতীয় কম। শীর্ষ ২০-এর মধ্যে সবচেয়ে কম পরীক্ষা হচ্ছে ১৪ নম্বরে থাকা মেক্সিকোতে। দেশটিতে প্রতি ১০ লাখে পরীক্ষা হচ্ছে ২ হাজার ৮৬৬ জনের। এর চেয়ে একটু ভালো অবস্থানে আছে ভারত ও পাকিস্তান। পাকিস্তানে প্রতি ১০ লাখে পরীক্ষা হচ্ছে ৩ হাজার ৬৬৭ জনের আর ভারতে ৩ হাজার ৮৮৯ জনের।
বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুতে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় প্রায় একই সময়ে। পেরুতে প্রতি ১০ লাখে ৩৮ হাজার ৯২৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। গতকাল পর্যন্ত দেশটিতে শনাক্ত হয়েছে ২ লাখ ১৪ হাজার ৭৮৮ জন রোগী।
দক্ষিণ এশিয়ার আটটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের চেয়ে কম পরীক্ষা হচ্ছে শুধু আফগানিস্তানে। দেশটিতে প্রতি ১০ লাখে ১ হাজার ৩৮১ জনের পরীক্ষা করা হচ্ছে। ভুটানে প্রতি ১০ লাখে ২৬ হাজার ৬২২, নেপালে ১০ হাজার ৬৪৮, শ্রীলঙ্কায় ৩ হাজার ৮১৮ এবং মালদ্বীপে ৫৩ হাজার ৫৯৪ জনের পরীক্ষা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, মালদ্বীপের জনসংখ্যা সাড়ে পাঁচ লাখের মতো।