৪ হাজার কলেজ শিক্ষকের বিনা বেতনে ২৮ বছর

বাংলা ট্রিবিউন প্রকাশিত: ১০ জুন ২০২০, ২৩:১০

একই কলেজের ডিগ্রি স্তরের শিক্ষকরা বেতনসহ সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেলেও অনার্স-মাস্টার্স নন-এমপিও স্তরের শিক্ষকরা তা পান না। দেশের ৩১৫টি এমপিওভুক্ত কলেজের প্রায় ৪ হাজার শিক্ষক বিগত ২৮ বছর ধরে এই বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন।

জেলা শহর ও উপজেলা সদরের কলেজগুলোতে টিউশন ফি থেকে এসব শিক্ষকদের যত সামান্য বেতন-ভাতা দেওয়া হয়। আর জেলা ও উপজেলা সদরের বাইরের কলেজগুলোয় প্রতিষ্ঠান থেকে কোনও বেতন-ভাতা দেওয়া হয় না। পরীক্ষা এবং ভর্তির সময় খরচ বাবদ কিছু টাকা দেওয়া হলেও বছরের আর কোনও সময়ই কোনও অর্থ পান না তারা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কলেজের অনার্স-মাস্টার্স স্তরের এসব শিক্ষকদের সংসার চলে টিউশনি করে। এছাড়া আর্থিক যৎসামান্য সামর্থ্য নিয়ে অনেকেই ছোট ব্যবসা করেও সংসার চালান। মফস্বলের অনেক কলেজের শিক্ষকরা যাদের সামান্য জায়গা-জমি রয়েছে তারা সেখানে বাড়তি পরিশ্রম দিয়ে সংসার খরচের দায় মেটান। বছরের পর বছর তাদের এভাবে চললেও নতুন করে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে করোনার এই মহাদুর্যোগের সময়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জনবল কাঠামো অনুযায়ী ডিগ্রিস্তর পর্যন্ত পরিচালিত এমপিওভুক্ত কলেজগুলোয় ১৯৯৩ সালে অনার্স-মাস্টার্সের অনুমোদন দেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ বিধি-বিধান অনুযায়ী নির্ধারিত স্কেলে শিক্ষকদের মূল বেতন দেওয়ার শর্তে অনার্স-মাস্টার্সের বিষয় অনুমোদন নেয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট কলেজের টিউশন ফি থেকে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা দেওয়ার নির্দেশনা দেয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে। এই পর্যায়ে কলেজগুলোর জনবল কাঠামোতে স্থান পায় না অনার্স ও মাস্টার্স স্তরের শিক্ষকদের পদ। ফলে সরকারি বিধিবিধানের আলোকে এমপিওভুক্ত হওয়ার সুযোগ বঞ্চিত হন তারা।

দেশের ৫ শতাধিক কলেজের অনার্স-মাস্টার্স স্তরের শিক্ষকরা এই পরিস্থিতির মধ্যে পড়েন। তবে গত কয়েক বছরে দুই শতাধিক কলেজ জাতীয়করণ করে সরকার। বাকি থাকে ৩১৫টি কলেজ।

কলেজগুলোয় এই পরিস্থিতি উত্তরণে বিষয়টি অবহিত করা হলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৬ সালের জুন মাসে দেশের বেসরকারি সব অনার্স-মাস্টার্স কলেজগুলোর অধ্যক্ষ এবং গভর্নিং বডির সভাপতিকে বেতন-ভাতা ঠিকমত দেওয়ার নির্দেশনা দেন। কিন্তু তাতে পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হয়নি। এই অবস্থায় বিকল্প খুঁজতে থাকেন শিক্ষকরা।

শিক্ষকরা সংগঠনের ব্যানারে এমপিওভুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দেওয়াসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন। কলেজের জনবল কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত করে এমপিওভুক্তির মাধ্যমে উচ্চশিক্ষায় বৈষম্য দূর করার আহ্বান জানাতে থাকেন তারা।

শিক্ষকরা তাদের দাবিতে তুলে ধরে বলেন, আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির কারণে রাজধানীর বাইরের কলেজের বেশির ভাগ শিক্ষার্থী নারী। প্রতি পাঁচ বছরে ৪ লক্ষাধিক শিক্ষার্থী স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করেন ৩১৫টি কলেজ থেকে। দেশে নারী শিক্ষার উন্নয়ন ও মানসম্মত শিক্ষার প্রয়োজনে উচ্চশিক্ষায় বৈষম্য দূর করার দাবি জানান শিক্ষক নেতরা।

এসব পরিস্থিতির এক পর্যায়ে কলেজের জনবল কাঠামোতে এই স্তরের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তির জন্য ২০১৭ সালে হাইকোর্টে মামলা রিট করেন কুড়িগ্রাম জেলার মহিলা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক হারুন-অর-রশিদ ও অন্যান্য শিক্ষকরা। হাইকোর্টে বেতন কাঠামোতে অন্তর্ভুক্তির আদেশ দিলে সরকার পক্ষ আপিল করে। আপিল আদেশে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন আদালত। আদালতের এই নির্দেশনার পর বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দেন-দরবার করে বাংলাদেশ নিগৃহীত অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক পরিষদ। কিন্তু গত দেড় বছরেও কোন কার্যক্রম নেই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ঘটনা প্রবাহ

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us