ভালো উৎপাদন এবং লাভজনক হওয়ায় বাংলাদেশে উদ্ভাবিত বিটি বেগুনের কৃষক ভোক্তা পর্যায়ে গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে। বিটি বেগুন চাষের ফলে কৃষকের বার্ষিক আয় প্রায় ২১ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। হেক্টরপ্রতি এ বর্ধিত আয়ের পরিমাণ প্রায় ৬৬৪ মার্কিন ডলারের সমান। এছাড়া প্রচলিত বেগুন উৎপাদনের চেয়ে বিটি বেগুনের চারটি জাতের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রায় ২০ শতাংশ হারে।
কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. টনি শেলটন ২০১৯ সালে ‘বিটি বেগুন চাষ করেন এবং করেন না’ এ রকম একটি বিষয় নিয়ে কৃষকের মাঝে একটি সমীক্ষা চালান। ‘ফ্রন্টিয়ারস ইন বায়োইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি’ জার্নালে গত ২৫ মে প্রকাশিত সমীক্ষা অনুসারে জানা যায়, বাংলাদেশে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার কৃষক বর্তমানে প্রায় ৫০ হাজার ৯৫৫ হেক্টর জমিতে বেগুন উৎপাদন করেন। বিটি বেগুন উৎপাদনকারী কৃষকের শতকরা ৮৩ ভাগ উৎপাদিত ফসলের ওপর সন্তুষ্ট এবং প্রায় ৮০ ভাগ কৃষক তাদের ফসলের গুণগত মান নিয়ে সন্তুষ্ট।
যেসব কৃষক বিটি বেগুন উৎপাদন করেননি তাদের মধ্যে ৫৯ শতাংশ কৃষক তাদের উৎপাদিত ফসল নিয়ে সন্তুষ্ট। গবেষণাটি বাংলাদেশের বেগুন উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ পাঁচ জেলা বা অঞ্চল বিশেষ করে রংপুর, বগুড়া, রাজশাহী, যশোর, ও টাঙ্গাইলে পরিচালনা করা হয়। ১৯৫ জন বিটি বেগুনচাষী এবং ১৯৬ জন কৃষক যারা বিটি বেগুন চাষ করে না—এমন দুটি দলের মাঝে সরাসরি সাক্ষাত্কার গ্রহণের মাধ্যমে সমীক্ষাটি চালানো হয়।বিটি বেগুন উৎপাদন করেন না এমন কৃষকের শতকরা ২৮ ভাগ জানিয়েছেন ফল ও ডগা ছিদ্রকারী পোকা তাদের ফসলের বড় একটি অংশ আক্রান্ত করে ফসল নষ্ট করে, যেখানে বিটি বেগুন চাষ করা কৃষকরা এ ধরেনের কোনো সমস্যার সম্মুখীন হন না। বিটি বেগুনের উচ্চফলনশীলতা, অধিক আয় ও ফসলের মানের কারণে চার ভাগের তিন ভাগ কৃষক বলেছেন আগামী মৌসুমেও তারা আবার এ বেগুন উৎপাদন করবেন। শেলটন তার গবেষণায় আরো জানান, শতকরা ৪০ ভাগ কৃষক এখনো বিটি বেগুন চাষ করেননি বা এ সম্পর্কে কিছু জানেন না।