জানুয়ারি থেকে শুরু। এক শহর থেকে আরেক শহর। এক দেশ থেকে আরেক দেশ। এক মহাদেশ থেকে আরেক মহাদেশ। বিশ্বজুড়ে এই কমাসে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছাড়া যেন আর কোনো আলোচনা নেই। কতজন হারালেন প্রিয়জন। কেউ মৃদু, কেউ ভয়াবহ অভিজ্ঞতা নিলেন সংক্রমিত হয়ে। অন্যরা দুশ্চিন্তা, আতঙ্ক নিয়ে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কায় দিন যাপন করছেন। অনেকে হারালেন জীবিকা। অনেকের জীবিকা আজ হুমকির মুখে। হাঁপ ধরা এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে টিকে থাকতে হবে, তা নিয়ে নতুন পরিকল্পনা সাজানোর দিকে বিশ্বকে ঠেলে দিয়েছে করোনাভাইরাস।
ভয়াবহ এই সংকট পাল্টে দিচ্ছে চেনা বিশ্বটাকে। একটি ভাইরাস এসে যেন বিশ্বকে বুঝিয়ে দিল, কোনো দেশই ‘যথার্থ’ নয়। উন্নয়নশীল ভুবনের বাসিন্দারা উন্নত দেশগুলোর দিকে আফসোসের দৃষ্টিতে তাকিয়ে যে দীর্ঘশ্বাস ফেলতেন, আর উন্নত দেশগুলোর বাসিন্দারা গর্বিত ভঙ্গিতে তা দেখে তৃপ্তির ঢেকুর তুলতেন, এর সবই এখন মিলেমিশে একাকার। করোনায় পাল্টে যাওয়া চেহারা নিয়ে খোলনলচে বদলাতে চাইছে বিশ্ব।রূপান্তরের এই সময়ে সবচেয়ে বেশি দৃশ্যমান রেস্তোরাঁ, জিম, বার আর পার্ক। বিবিসি ফিউচারে তুলে আনা হয়েছে সেসব বিষয়। নতুন পরিকল্পনায় সাজাতে হবে নগরঅনেক দেশ এখন লকডাউন শিথিল করেছে। মুক্তির আনন্দ পেয়ে বাসিন্দারা তাঁদের পরিচিত জায়গাগুলোতে ছুটে যাচ্ছেন। তবে সেই চেনা জায়গাই এখন তাঁদের কাছে অচেনা ঠেকছে। জায়গাটি যে পাল্টে গেছে, তা নয়। তবে জায়গাটিতে অবস্থান করার জন্য যা কিছুর মধ্য দিয়ে তাঁদের যেতে হচ্ছে, তার সঙ্গে কয়েক মাস আগেও পরিচিতি ছিলেন না। মাস্ক পরতে হবে। একসঙ্গে প্রবেশ করতে পারবেন অল্পসংখ্যক মানুষ। কারণ, করোনার সংক্রমণ যদি আবার ছড়ায়, তাহলে ভ্যাকসিন না আসা পর্যন্ত নতুনভাবে এটা দীর্ঘমেয়াদি রূপে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকবে। এটা হতে পারে নয় মাস থেকে দুই বছরের জন্য।
বিজ্ঞানীরা আরও মনে করেন, ২০২০ সালে করোনাভাইরাস যা করেছে, ভবিষ্যতে নতুন ও একই ধরনের ভয়াবহ রোগ মানবতাকে পঙ্গু করে ফেলতে পারে।ভবিষ্যৎ নগর গড়ে তোলার পরিকল্পনায় যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের জন্য এই মহামারি একই সঙ্গে দুটো জিনিস শিখিয়ে দিল। এক. তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা।