ভারতীয় টেলিভিশন দুনিয়ার জনপ্রিয় তারকা মুনমুন দত্ত। পড়াশোনায় বরাবরই ভালো ছিলেন তিনি। ইচ্ছে ছিল ডাক্তার হবেন। কিন্তু মানুষ ভাবে এক, হয় অন্যটা। মুনমুনের তাই হয়েছে। পোর্টফোলিও হাতে একসময় বলিউডে দরজায় দরজায় ঘুরেছেন তিনি। কিন্তু আজ টেলিভিশনে তার যে জনপ্রিয়তা তৈরি হয়েছে, তাতে বলিউড অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোন ও আলিয়া ভাটদেরও অনায়াসে টেক্কা দিতে পারেন। পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুরে জন্ম হয়েছিল মুনমুন দত্তের। তার মা-বাবা দুজনেই সংগীতচর্চার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। মুনমুন নিজেও গান শিখেছেন ছোট থেকে। কিন্তু বরাবর ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছে ছিল তার। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি। বরং স্কুল পাস করেই সাহিত্যের দিকে ঝোঁকেন। পুণে থেকে প্রথমে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর পাস করেন। তারপর সাংবাদিকতার কোর্সও করেন। কিন্তু চেহারায় আলাদা চটক থাকায় সেসময় থেকে মডেলিংয়ের অফার আসতে শুরু করে মুনমুনের কাছে।
সেই সূত্রেই গ্ল্যামার দুনিয়ায় চলাফেরা শুরু তার। তবে মডেলিং ও বিজ্ঞাপনে মুখ দেখালেও শুরু থেকেই বলিউডে অভিনয় করার ইচ্ছা ছিল মুনমুনের। তবে পার্শ্বচরিত্রের চেয়ে নায়িকা হতেই ইচ্ছুক ছিলেন তিনি। সেই মতো কাস্টিং ডিরেক্টরদের দরজায় কড়া নাড়তে শুরু করেন মুনমুন। নানা ছবির জন্য অডিশন দিতে শুরু করেন। কিন্তু কোথাও তেমন সুযোগ পাচ্ছিলেন না। এভাবে দীর্ঘদিন চলার পর ২০০৪ সালে ‘হাম সাব বারাতি’ নামে একটি টিভি সিরিয়ালে অভিনয়ের সুযোগ পান মুনমুন।
শুরুতে সিরিয়ালে অভিনয় নিয়ে ছুঁৎমার্গ থাকলেও, শেষমেশ রাজি হয়ে যান। এই সিরিয়ালে অভিনয় করার সময় ২০০৫ সালে কমল হাসান ও মনীষা কৈরালা অভিনীত ‘মুম্বাই এক্সপ্রেস’ ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেন মুনমুন। ২০০৬ সালে পূজা ভাট পরিচালিত ‘হলিডে’ ছবিতেও অভিনয় করেন তিনি। তবে তার বাইরে বলিউডে সে ভাবে কাজের সুযোগ আসছিল না তার কাছে। তাই টেলিভিশনেই মনোনিবেশ করেন। ‘হাম সাব বারাতি’ সিরিয়ালই তার জীবনের ঘুরিয়ে দেয়। এই সিরিয়ালে দিলীপ জোশীর সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন মুনমুন।
সেসময় নাট্যকার তারক মেহতার ‘দুনিয়া নে উন্ধা চশমা’ নামের ধারাবাহিক নাটক অবলম্বনে ‘তারক মেহতা কা উল্টা চশমা’ সিরিয়াল তৈরির কথা চলছিল। সেখানে ববিতা আইয়ারের চরিত্রের জন্য মুনমুনের হয়ে সুপারিশ করেন দিলীপ জোশী। বরাবরের মতো এই সিরিয়ালে অভিনয় নিয়েও ইতস্তত করছিলেন মুনমুন। কিন্তু সেসময় ব্যক্তিগত জীবনে বিস্তর ঝড়ঝাপটা চলছিল তার। তাই শেষমেশ ববিতা আইয়ারের চরিত্রে অভিনয় করতে রাজি হয়ে যান তিনি। তাতেই রাতারাতি তার জীবন পাল্টে যায়।