এত ভাল ফলাফল করেও তা দেখে যেতে পারলো না পটুয়াখালীর মেধাবী শিক্ষার্থী সাজিদুল ইসলাম মুন্না। এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল বের হওয়ার এক মাস ১১ দিন আগে গ্যাস্ট্রলিভার (গ্যাস্ট্রিক) রোগে সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে যায় সাজিদুল মুন্না। সে এ বছরের এসএসসি পরীক্ষায় পটুয়াখালী সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছে।
গত ৩১ মে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হলে সাজিদুল ইসলাম মুন্না’র বাবা-মা ও সহপাঠীদের কষ্ট ও বেদনা আরও বাড়িয়ে দেয়। সন্তানের এত সুন্দর ও ভাল রেজাল্টের খবরে আনন্দের বদলে কান্নায় ভেঙে পড়েন সাজিদুল মুন্নার বাবা-মা। পুরো দিনই তাদের কেটেছে চোখের জলে।
পটুয়াখালীর ডিস্ট্রিক স্পেশাল ব্রাঞ্চ (ডিএসবি)’র উপ-পরিদর্শক মো. মামুনুর রশিদ ও মোসা. সাবিনা ইয়াসমিন দম্পতি’র তিন পুত্র সন্তানের মধ্যে সাজিদুল ইসলাম মুন্না বড়। তাদের পৈত্রিক বাড়ি বরিশালের বাকেরগঞ্জে। বাবার চাকরির সুবাদে সাজিদুল ইসলাম মুন্না পটুয়াখালী সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতো এবং এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে জিপিএ-৫ অর্জন করে। কিন্তু সাজিদুল মুন্না তার এই সুন্দর রেজাল্ট দেখে যেতে পারলো না।
সাজিদুল মুন্নার বন্ধু মো. রফিকুল ইসলাম রাহাত বলে, ‘সাজিদুল ইসলাম মুন্না ভাল ছাত্র ছিল। তাই সে জিপিএ-৫ পেয়েছে। আমরা ওর ভাল বন্ধু ছিলাম। আজ আমাদের বড় কষ্ট হচ্ছে বন্ধু এত ভাল রেজাল্ট করলো, অথচ সে নিজেই তার রেজাল্টটি দেখে যেতে পারলো না। আমাদের আজ কষ্ট হচ্ছে ওর জন্য। আমরাও ভাল রেজাল্ট করেছি, কিন্তু আমাদের মধ্যে আজ আনন্দ নেই। সাজিদুল মুন্না বেচেঁ থাকলে আজ আমরা অনেক আনন্দ ও মজা করতাম’।
সাজিদুল ইসলাম মুন্নার বাবা মো. মামুনুর রশিদ বলেন, ‘এ রেজাল্ট দিয়ে আমি কি করবো। আমার ছেলেই নেই। কাকে নিয়ে এই ভাল রেজাল্টের আনন্দ করবো। ছেলেটাকে বাচাঁনোর জন্য চেষ্টার কোন ত্রুটি করিনি। ঢাকায় অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি, কিন্তু বাঁচাতে পারিনি। সবাই আমার ছেলেটার জন্য দোয়া করবেন’।
মা সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘ছেলের রেজাল্ট আমাকে আরও কষ্ট দিচ্ছে। ছেলেটা বেঁচে থাকলে আজ সে আমাদের নিয়ে কত আনন্দ করতো। সব আনন্দই আজ ম্লান হয়ে গেছে’ এ কথা বলেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন সন্তানহারা এই মা।