নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার কুমরুল গ্রামের হনুফা বেওয়া স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর ২০১৮ সালে বীরাঙ্গনার স্বীকৃতি পান। তবে এখন পর্যন্ত তিনি কোনো ভাতা বা সুযোগ–সুবিধা পান না। প্রয়াত
হনুফা বেওয়া মুক্তিযোদ্ধা আজিমুদ্দিনের দ্বিতীয় স্ত্রী। মুক্তিযুদ্ধের সময়ের কথা স্মরণ করে হনুফা বলেন, তাঁর স্বামীর মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন শুনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাঁদের বাড়িতে আসে। তাঁকে ও তাঁর সতীনের বড় মেয়ে নজিমনকে নাটোর শহরের কানাইখালি ক্যাম্পে ধরে নিয়ে যায়। তিন দিন ধরে তাঁদের ওপর চলে পৈশাচিক নির্যাতন। পরে পালিয়ে কোনোরকমে জীবনরক্ষা করেন তাঁরা।
কথা বলে জানা গেল, হনুফার একমাত্র ছেলে শারীরিক প্রতিবন্ধী। তিনি ঢাকার রাস্তায় ফেরি করে জিনিস বিক্রি করেন। তাঁর পাঠানো টাকা আর স্বামীর ভাতার টাকার অর্ধেক দিয়ে চারজনের সংসার চলে। বাকি তিনজন ছেলের বউ ও দুই নাতি–নাতনি। পাটকাঠির বেড়ার ওপর টিনের চালের ঘর তাদের। ঘরের ভেতরে দুই সন্তানকে নিয়ে হনুফার পুত্রবধূ থাকেন। আর খোলা বারান্দার চকিতে ঘুমান হনুফা। ২০১৮ সালের গেজেটে (বীরাঙ্গনা ক্রমিক নম্বর-২০৭) তাঁর নাম প্রকাশিত হয়। কিন্তু এর কোনো সুযোগ–সুবিধা সত্তরোর্ধ্ব হনুফা এখনো পাননি।
হনুফা বেওয়া জানালেন, তাঁর স্বামী দিনমজুরের কাজ করতেন। সঙ্গে ভাতার টাকা দিয়ে কোনো রকমে সংসার চলতো। ১৯৮৮ সালে স্বামী মারা যান। আফসোস করে তিনি বলেন, 'যার ঘর নাই প্রধানমন্ত্রী নাকি তাঁকে ঘর বানাই দিচ্ছেন। তাই আমিও একটা ঘরের জন্য দরখাস্ত করিছি। সেডাও পাইনি। বাঁচি থাকতে ভাতা পাবো কিনা তাও জানিনি।'