২৬ বাংলাদেশি হত্যা : পালিয়ে বাঁচা একজনের ভয়াল বয়ান
প্রকাশিত: ২৯ মে ২০২০, ১৩:৫৬
লিবিয়ায় এক মানবপাচারকারীর স্বজনদের হাতে ২৬ বাংলাদেশিসহ ৩০ জন অভিবাসী খুন হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরও ১১ বাংলাদেশি। তাদের মধ্যে ছয়জন এখন শঙ্কামুক্ত। তবে পাঁচজনের অবস্থা গুরুতর। এই পাঁচজনের মধ্যে দুজনের অপারেশন হয়েছে। বাকি তিনজনকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে।
শুক্রবার জাগো নিউজকে এসব তথ্য জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, পাচারকারীদের গুলিতে আহত ১১ জনকে ১৮০ কিলোমিটার দূরের শহর থেকে ত্রিপলি শহরের হাসপাতালে আনা হয়েছে। সেখানে তাদের চিকিৎসা চলছে। ওই ঘটনায় বেঁচে যাওয়া এক বাংলাদেশি দূতাবাসকে তথ্য দিচ্ছেন। তবে তিনি বর্তমানে কোথায় রয়েছেন তা জানা যায়নি বলে জানান ড. মোমেন।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশিসহ ৩০ অভিবাসী শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করেছে মানবপাচারকারী চক্রের এক সদস্যের পরিবারের লোকজন। নিহত বাকি চারজন আফ্রিকান। সাহারা মরুভূমি অঞ্চলের মিজদা শহরের এ ঘটনা ঘটে; যাতে ওই ১১ জন বাংলাদেশি আহত হন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ওখানে একজন বাংলাদেশি বেঁচে গেছেন। তিনিই আমাদের দূতাবাসকে তথ্য দিচ্ছেন। তবে তিনি লুকিয়ে আছেন। একজন ধর্মীয় ব্যক্তি তাকে আশ্রয় দিয়েছেন। ওই বাংলাদেশির কাছ থেকে পাওয়া তথ্য মতে, যতটুকু জানতে পেরেছি, আমাদের বাংলাদেশিরা পাচারকারীদের প্ররোচনায় পড়ে সেখানে গেছেন। ইউরোপে যাওয়ার লোভে প্রায় ১০-১২ হাজার ডলার করে প্রত্যেকে দিয়েছেন। তাদের সাথে কয়েকজন আফ্রিকানও ছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, এক পর্যায়ে পাচারকারীরা আরও টাকা চাচ্ছিল। এটা নিয়ে তাদের মধ্যে বচসা হয়। তখন চার আফ্রিকানের মধ্যে একজন ওই পাচারকারীদের নেতাকে মেরে ফেলে। তার প্রতিশোধ নিতে নিহত পাচারকারীর পরিবার এবং বাকি পাচারকারীরা এলোপাথাড়ি গুলি ছোড়ে। এতে এক রুমের মধ্যে থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে ৩০ জন মারা যায়, যাদের ২৬ জনই বাংলাদেশি। এছাড়া ১১ জন বাংলাদেশি আহত হন।
ড. মোমেন বলেন, একজন বাংলাদেশি অক্ষত ছিলেন। তিনি পালিয়ে একটি ফার্মেসিতে আশ্রয় নেন। পাচারকারীরা ওই ফার্মেসিও ভেঙে ফেলে। তবে ওই বাংলাদেশি সেখান থেকেও পালাতে সক্ষম হন। সেখান থেকে একটি বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। তবে ভয়ে তার অবস্থান জানাচ্ছেন না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, এসব বাংলাদেশিরা দেশের কোন কোন জেলা থেকে গেছেন তা এখনও জানা যায়নি। তবে আমাদের দূতাবাস কর্মকর্তারা জীবিত উদ্ধার হওয়ার ব্যক্তিদের কাছ থেকে এসব তথ্য জানার চেষ্টা করছেন।