করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে সাধারণ ছুটি আর বাড়ছে না। আগামী ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে অফিস করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামী ১৫ জুন পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। এই সিদ্ধান্তের ফলে ভাইরাসের সংক্রমণে কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে। এর আগে শিথিলতার কারণে অসচেতন যাতায়াতের পরিমাণ বেড়ে যায়, ফলে বাড়ে সংক্রমণের মাত্রাও। ৪ এপ্রিল পোশাক কারখানা খোলা নিয়ে বিভ্রান্তির কারণে পোশাক শ্রমিকদের ঢাকায় আসা এবং ফিরে যাওয়ার ফলে টেস্ট অনুপাতে সংক্রমণের হার ৪.৬ শতাংশ থেকে এক লাফে বেড়ে যায় ১২.৫ শতাংশে। এরপর ২৬ এপ্রিল সীমিত পরিসরে অফিস ও পোশাক কারখানা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হলে আবারও সংক্রমণ বাড়ার আভাস পাওয়া যায়। এরপর ১০ মে মার্কেট ও শপিং মল খুলে দেওয়া হলে টেস্ট অনুপাতে শনাক্তের হার গিয়ে পৌঁছায় ২০ শতাংশে।
বাংলাদেশে মোট আক্রান্তের বেশিরভাগ যেহেতু ঢাকা শহরে, তাই সাধারণ ছুটি না থাকার ফলে মানুষের চলাচলের মাত্রা ব্যাপক হারে বেড়ে যাবে। একইভাবে বাড়বে অসচেতন চলাচলও। ফলে অনুমান করা যায় যে শহরে সংক্রমণ আরও গতি পেতে পারে।
সর্বশেষ ২৬ মে’র তথ্যমতে ঢাকার ২০৯টি এলাকায় সংক্রমণ পাওয়া গেছে। এসব এলাকা মিলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ হাজার ৩৪৮ জন। তবে, এই ২০৯ এলাকার মধ্যে ১৬৭ এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা এখনও ৫০-এর নিচেই আছে। কেবল ৪২টি এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা ৫০-এর অধিক। এ থেকে বলা যায় ঢাকা শহরে আক্রান্তের মাত্রা এখনও প্রাথমিক পর্যায়েই রয়েছে। মানুষের চলাচল বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শহরে আক্রান্তের সংখ্যা ব্যাপক গতি পাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হবে।
২৬ মে অনুযায়ী ঢাকার ১৬টি এলাকায় করোনার সংক্রমণ ১০০ অতিক্রম করেছে। এলাকাগুলোর হচ্ছে মহাখালী, যাত্রাবাড়ি, কাকরাইল, মুগদা, মোহাম্মদপুর, রাজারবাগ, উত্তরা, মগবাজার, তেজগাঁও, লালবাগ, বাবুবাজার, ধানমন্ডি, মালিবাগ, খিলগাঁও, বাড্ডা ও গেন্ডারিয়া।
এসব এলাকার মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত সংক্রমণ বাড়ছে মহাখালী, যাত্রাবাড়ি, মোহাম্মদপুর ও মুগদায়। এসব এলাকার মধ্যে সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি গতিশীল মহাখালীতে। ২৯ এপ্রিলের পর প্রতি দশ দিনে এই এলাকায় নতুন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ১০০ জন। সর্বশেষ ২৬ মে’র উপাত্ত অনুযায়ী, মহাখালীতে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫৬ জন। আক্রান্তের সংখ্যার দিক থেকে এরপরেই আছে যাত্রাবাড়ি। এই এলাকাটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৩১৫ জন। মুগদা ও মোহাম্মদপুরে ২৫ এপ্রিল আক্রান্তের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৪১ ও ৪৯। ঠিক এক মাস পরে ২৫ মে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় যথাক্রমে ২৯৫ ও ২৮০-তে।