বিষ খেয়ে নাকি মাথায় গুলি করে হিটলারের মৃত্যু হয়েছিল?
প্রকাশিত: ২৩ মে ২০২০, ১২:০৪
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সঙ্গে অ্যাডলফ হিটলার নামটি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন নৃশংসতার জন্য তার নাম সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হয়। অ্যাডলফ হিটলার ছিলেন একজন জার্মান রাজনীতিবিদ। তিনি নাৎসি দলের নেতা ছিলেন এবং ১৯৩৩ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত জার্মানির চ্যান্সেলর ছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ্বে শেষ দিকে নিশ্চিত পরাজয় বুঝতে পেরে আত্মহত্যা করেন হিটলার। এটা অনেকটা প্রতিষ্ঠিত সত্য হলেও তার মৃত্যু নিয়ে অনেক সময় নানা জল্পনা কল্পনা ও ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে।
তবে একদল ফরাসি বিজ্ঞানীদের দাবি, তারা এই ধোঁয়াশার সঠিক সমাধান করতে পেরেছেন। ইউরোপীয় জার্নাল অব ইন্টারনাল মেডিসিন সাময়িকীতে ২০১৮ সালের মে মাসে হিটলারের মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়। একদল ফরাসি বিজ্ঞানী গবেষণাটি করেন।
নতুন এই গবেষণায় তারা প্রমাণ করেন, হিটলার ১৯৪৫ সালে সাইনাইড গ্রহণ করে এবং নিজের মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেছেন। ফরাসি গবেষক দলটি হিটলারের দাঁতের টুকরো এবং মাথার খুলি পরীক্ষা করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছান। গবেষকদের দাবি হিটলারের মাথার খুলি এবং দাঁতের বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে তার মৃত্যু সম্পর্কিত প্রচলিত অন্যান্য ষড়যন্ত্র তত্ত্ব এবং ধোঁয়াশার পরিসমাপ্তি ঘটেছে।
গবেষণা দলটির প্রধান ফিলিপ চার্লিয়ার বলেন, হিটলারের দাঁত এবং মাথার খুলি থেকে প্রমাণিত হয় হিটলার ১৯৪৫ সালেই মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এই দাঁত ও মাথার খুলি যে হিটলারেরই সে বিষয়েও তিনি নিশ্চিত। হিটলার ১৯৪৫ সালে বার্লিনে নিজের বাঙ্কারে আত্মহত্যা করেছিলেন এটা ব্যাপক প্রতিষ্ঠিত সত্য হলেও তার পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে গুজব ছড়িয়ে পড়ে।
এসব গুজবের মধ্যে অন্যতম ছিল, হিটলার ১৯৪৫ সালে আত্মহত্যা করেননি বরং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের পর একটি সাবমেরিনে আর্জেন্টিনায় পালিয়ে গিয়েছিলেন। আবার কেউ বলেছিলেন, তিনি অ্যান্টার্কটিকায় একটি গোপন ঘাঁটিতে পালিয়ে ছিলেন। তবে ফরাসি গবেষণা দলের প্রধান চার্লিয়ার দাবি করেন, তাদের গবেষণায় এসব গুজবের পরিসমাপ্তি ঘটেছে।
১৯৪৫ সালের শুরুর দিক থেকেই জার্মানি পতনের মুখে ছিল। তাদের সামরিক অভিযান ব্যর্থ হচ্ছিল। সোভিয়েত গোলন্দাজ বাহিনী ১৯৪৫ সালের ২০ এপ্রিল বার্লিনে বোমাবর্ষণ শুরু করে এবং ২১ এপ্রিল থেকে বার্লিনে প্রবেশ করতে থাকে। হিটলারের আদেশ মতো জার্মান জেনারেল স্টাইনার পাল্টা আক্রমণ করতে ব্যর্থ হওয়ার পরই তিনি বুঝতে পারেন জার্মানির পতন নিশ্চিত।
এসময় হিটলারকে তার সেনাপতিরা দক্ষিণ জার্মানিতে গিয়ে যুদ্ধ পরিচালনার অনুরোধ করেন। তবে তিনি বার্লিন ত্যাগ না করার সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। এরই মধ্যে তিনি আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন। হিটলার এসএস বাহিনীর চিকিৎসক হাসের নিকট আত্মহত্যার পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চান। চিকিৎসক হাস তাকে বন্দুকের গুলি এবং বিষ প্রয়োগের কথা বলেন।