চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায় মোহাম্মদ নাছির (৪৪) নামের এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় তাঁর বাবা মুক্তিযোদ্ধা আলী মদন ও ছোট ভাই লোকমান আহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার চরণদ্বীপ ইউনিয়নের খলিল তালুকদার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়িতে দায়িত্বরত সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. আলাউদ্দিন তালুকদার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘রাত ১টা ৪০ মিনিটে বাবা ও ছেলেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। ছেলেক ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। বাবা চিকিৎসাধীন আছেন।’
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে স্থানীয় হাছি মিয়ার দুই ছেলে শওকত ও জসিমকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে একটি পিস্তল, একটি এলজি, পাঁচটি গুলি, দুটি কার্তুজ, ছুরি, চাপাতি ও দা উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, রাতে চরণদ্বীপের এক ধনাঢ্য ব্যক্তি খলিল তালুকদার বাড়ি এলাকায় জাকাতের টাকা বিলি করছিলেন। এ সময় স্থানীয় হাছি মিয়ার ছেলে জসিম ও মুক্তিযোদ্ধা আলী মদনের ছেলে লোকমানের মধ্যে বাদানুবাদের সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। এ সময় জসিমের ভাই শওকত বন্দুক নিয়ে এ ঘটনায় অংশ নিয়ে লোকমানকে মারধর করতে থাকেন। পরবর্তী সময়ে লোকমানকে বাঁচাতে নাছির ও তাঁর বাবা আলী মদন এগিয়ে এলে তাঁরা গুলিবিদ্ধ হন। জানা গেছে, নিহত নাছির চরণদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল আলমের অনুসারী। তিনি যুবলীগ নেতা। তাঁর বিরুদ্ধে থানায় অস্ত্র, ছিনতাইসহ সাতটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন নাছির। তাঁকে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। অন্যদিকে অভিযুক্ত শওকত আরেক যুবলীগ নেতা মাহলুমের অনুসারী। নাছির ও শওকতের মধ্যে আধিপত্য নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল করিম বলেন, ‘নাছির ও শওকতরা প্রতিবেশী পরিবার। তাদের মধ্যে আধিপত্যের দ্বন্দ্ব পুরোনো। প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি, গতকাল শুক্রবার রাতে জাকাত বিতরণের সময় ঝগড়া হয় এবং পরে গোলাগুলি হয়েছে। এতে নাছির নিহত ও তাঁর বাবা মুক্তিযোদ্ধা আলী মদন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় হাছি মিয়ার ছেলে শওকত হোসেন (৪৫) ও জসিম উদ্দিনকে (৩৮) আটক করেছি।