করোনা ভাইরাসের ভয়ভীতিকে উপেক্ষা করে ক্ষুধার জ্বালা নিবারণের জন্য ঘর ছেড়ে রাস্তায় নামছে নিম্ন আয়ের মানুষ। এসব মানুষ লকডাউন উপেক্ষা করে বেরিয়েছেন শুধু মাত্র পরিবারের সবার মুখে খাবার যোগাতে। রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও মিরপুর এলাকা ঘুরে নিম্নআয়ের মানুষের সাথে কথা বলা এমনটাই জানা যায়। মোহাম্মদপুর ভাঙা মসজিদ বস্তি এলাকার বাসিন্দা টায়ার বিক্রেতা মো. জামাল বলেন, আজ ১৫ দিন পরে বাসা থেকে বের হয়েছি। যা টাকা ছিল তা দিয়ে ডাল-ভাত খেয়ে পরিবার নিয়ে দিন পার করছি। পেটের দায়ে এখন রাস্তায় নামছি। বন্ধের আগে রিকশা চালাইতাম। বন্ধের প্রথম দিকে দুই-একদিন রিকশা নিয়া রাস্তায় নাম ছিলাম। তখন রাস্তায় পুলিশ রিকশা আটকে রাখত ঘণ্টার পর ঘণ্টা। তাই এখন টায়ার কেনাবেচা করি। কোনো ত্রাণ বা সাহায্য পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারি লোকজন আমাদের কিছু দেয় না। যাদের আছে তাদেরকেই বেশি করে দেয়। আমার ইনকামে পরিবার চলে। টায়ার বেচাকেনা করে দিনে ৩০০- ৪০০ টাকা পাই। এই টাকা নিয়ে ঘরে ফিরে যামু। মিরপুর ৭ নম্বরের রিকশা ও ভ্যান গাড়ি মেরামত মিস্ত্রি আব্দুল হক বলেন, ২৬ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত আর বাসা থেকে বের হই নাই। ২২ এপ্রিল বুধবার বাসা থেকে বের হইছি। জমানো টাকা পয়সা যা ছিল তা দিয়ে প্রায় একমাস চলেছি। এখন আর হাতে কোন টাকা পয়সা নেই। ক্ষুধার জালায় রাস্তায় নেমেছি কাজ করতে। পরিবারের সদস্যদের মুখে খাবার জোগাতেই রাস্তায় বেরিয়ে আসা। এরমধ্যে আমি মাত্র একদিন ত্রাণ পেয়ে ছিলাম। এতে ছিল ২ কেজি চাল,১ কেজি আলু ,১ কেজি লবণ। এখন আর ত্রাণ পাইতেছি না। করোনা ভাইরাস উপেক্ষা করে বেঁচে থাকার জন্য আমার রাস্তায় নামা।