গরীবের ওপর করোনার অর্থনৈতিক প্রভাব

বার্তা২৪ মোঃ রাকিবুল ইসলাম প্রকাশিত: ২৪ মার্চ ২০২০, ২৩:৩১

পুরো বিশ্ব আজ ভয়ঙ্করভাবে বিপর্যস্ত। করোনা নামক প্রাণঘাতী ভাইরাসটি বিশ্বের প্রায় ১৮৮টি দেশে ছড়িয়েছে। ইতোমধ্যে প্রাণহানি ঘটেছে সহস্র লোকের। বাংলাদেশেও সম্প্রতি ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। এখনো পর্যন্ত সরকারি হিসাব মতে ৩৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন, এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে চারজনের। আইসোলেশন এবং কোয়ারেন্টাইনের হিসাব করলে মোটের ওপর কমবেশি লাখ খানেক লোক ঘরবন্দী। মাদারীপুরের শিবচর, ঢাকার টোলারবাগ, গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর এরই মধ্যে লকডাউন করা হয়েছে।পরিস্থিতির ভয়াবহতা বিবেচনায় সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একযোগে কাজ করছে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো ও ব্যক্তি পর্যায়ে অনেকেই এগিয়ে আসছেন করোনাভাইরাস বিপর্যয় মোকাবেলায় সাহায্য করার জন্য। সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাক্রমে মানুষজনকে বলা হচ্ছে প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না যেতে। পুরো বাংলাদেশের কথা যদি বলা হয় তাহলে আমাদের বিবেচনায় নেওয়া উচিত জনসংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বের অষ্টম সর্বোচ্চ জনসংখ্যার দেশ। আর রাজধানী ঢাকার কথা যদি বলা হয়, তাহলে বলতে হবে ঢাকার চেয়ে জনবহুল শহর পুরো পৃথিবীতে আছে হাতে গোনা কয়েকটি। বিভিন্ন সূত্রের হিসাব মতে, রাজধানী ঢাকায় দুই কোটির বেশি লোক বাস করে। শুধু এই দুই কোটি লোক নয়, এদের সাথে দুই কোটি মানুষের পরিবার-পরিজনদের জীবন নির্বাহ হয় ঢাকা শহরের অর্থনীতির ওপর ভিত্তি করে। আবার প্রশাসনিক কেন্দ্র হওয়ার কারণে রাজধানী ঢাকার ওপর চাপটা একটু বেশি। এই শহরে যেমন সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ, ব্যবসায়ী ও উচ্চবিত্ত মানুষের বাস; তেমনি এখানে একটা বড় অংকের নিম্নবিত্ত মানুষের বাস। এই সব নিম্নআয়ের ও ছিন্নমূল মানুষেরা রাজধানী ঢাকার আশেপাশে প্রায় ১৩টি বস্তিতে বসবাস করে এবং ছোটখাটো কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে।তাদের বেশিরভাগই অপ্রচলিত বিভিন্ন সেবা খাত বা অপ্রাতিষ্ঠানিক পেশার সঙ্গে যুক্ত। অনেকেই কাজ করে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে। এদের কেউ রিকশাচালক, কেউ বাসাবাড়িতে গৃহস্থালির কাজ করে, কেউ শরবত বিক্রি করে, কেউ ঝাল মুড়ি বিক্রেতা। তারা এভাবেই নানা ছোটখাটো কাজের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করছে। শুধুমাত্র ঢাকা নয়, পুরো বাংলাদেশের কথা বিবেচনা করলে দেখা যাবে নিম্ন আয়ের মানুষের সংখ্যা নেহায়েত কম নয়।বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর এক হিসেব মতে, বাংলাদেশে বিশ দশমিক পাঁচ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে বাস করে এবং দশ দশমিক পাঁচ শতাংশ মানুষ অতি দারিদ্র্য সীমার নিচে বাস করে। এই পরিসংখ্যানটা রীতিমত উদ্বেগের বিষয়। এমনিতেই করোনা ভাইরাসের প্রভাবে বিশ্বব্যাপী অর্থনীতি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। উন্নত বিশ্বের দেশ সমূহে অর্থনীতির চাকা প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। সারা বিশ্বের অর্থনৈতিক যে মন্দাভাব সেটার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বাংলাদেশে। বিজিএমইএ এবং বিভিন্ন জাতীয় পত্র-পত্রিকা ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সূত্র অনুযায়ী বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি গার্মেন্টস শিল্পের ক্রয়াদেশ কমতে শুরু করেছে।দেশব্যাপী করোনা আতঙ্কে জনমানুষের সাধারণ জীবনযাত্রা ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম প্রায় স্থবির। এমতাবস্থায় বিশ্বব্যাংক আশঙ্কা করছে বৈশ্বিক জিডিপি কমতে পারে প্রায় এক শতাংশ পর্যন্ত যেটা গত চল্লিশ বছরের সূচকে সবচেয়ে বেশি। বিপর্যয়কর এই অবস্থার মধ্যেই বাংলাদেশের নিম্নআয়ের মানুষজন মুখোমুখি হতে যাচ্ছে নির্মম বাস্তবতার। ঢাকা শহরের যারা ক্ষুদ্রআয়ের পেশাজীবী তারা দলে দলে গ্রামে পাড়ি জমাচ্ছে কারণ এখানে মানুষ চলাচল এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সীমিত হয়ে আসছে। তবে ক্রমান্বয়ে সারা দেশ জুড়েই এই অর্থনৈতিক স্থবিরতা বিরাজ করার আশঙ্কা রয়েছে। মরার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে আছে বিত্তবান মানুষদের আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে মজুত প্রবণতা। অসাধু ব্যবসায়ীদের পণ্য মজুদ করে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা। নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে অতি মুনাফা লাভের চেষ্টা। এমন অবস্থায় মজুরিভিত্তিক জীবিকার ওপর নির্ভরশীল মানুষেরা বেশ দ্বিধাগ্রস্ত। এ মানুষগুলো কোনটির মোকাবেলা করবে! করোনাভাইরাস নাকি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির?
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ঘটনা প্রবাহ

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us