ব্যাংকটির ঋণের ৫২ শতাংশই খেলাপি, অনেক গ্রাহক লাপাত্তা, আবার অনেকে যোগাযোগ করলেও টাকা ফেরত দিচ্ছে না। ২০০৮ সালে রাষ্ট্র খাতের বেসিক ব্যাংক ৫৪ কোটি টাকা নিট মুনাফা করেছিল। আর ২০১৯ সালে ব্যাংকটির নিট লোকসান ৭৫৬ কোটি টাকা। ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৪ সালের ৬ জুলাই পর্যন্ত ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ছিলেন সরকারঘনিষ্ঠ শেখ আবদুল হাই ওরফে বাচ্চু। এই পাঁচ বছরে পুরো ব্যাংকটিকে ডুবিয়ে দিয়েছেন তিনি। আর তাঁর অপকর্মের দায় এখনো বয়ে বেড়াতে হচ্ছে বেসিক ব্যাংককে। শিগগিরই ব্যাংকটি ঘুরে দাঁড়াবে—এমন সম্ভাবনা আছে বলেও মনে করেন না সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। ব্যাংকটির ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, আত্মসাৎ করা অর্থ আদায়ের পরিমাণ কম। আবদুল হাইও রয়ে গেছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, সাবেক চেয়ারম্যানের আমলে বড় যেসব ঋণ দেওয়া হয়েছে, তাঁদের অনেককে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অনেকে দেশের বাইরে পালিয়ে গেছেন। যাঁরা দেশে আছেন, তাঁদের বেশির ভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেও টাকা ফেরত আনা যাচ্ছে না। অনেকে আবার পুরো ঋণের টাকা পাননি বলেও দাবি করছেন। এ কারণে আবদুল হাই বিদায় নেওয়ার ছয় বছরেও ব্যাংকটির পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হচ্ছে না। একনজরে ব্যাংকটির আর্থিক চিত্র এ রকম, গত বছরের (২০১৯) ডিসেম্বর শেষে আমানত ছিল ১৩ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা, আর ঋণ ১৫ হাজার ১৭৬ কোটি টাকা। ঋণ আমানত অনুপাতের সীমা ১০৩ শতাংশ, যদিও তা ৮৩ দশমিক ৫০ শতাংশের মধ্যে থাকার নিয়ম। বিতরণ করা ঋণের মধ্যে খেলাপি হয়ে গেছে ৭ হাজার ৮৫৭ কোটি টাকা, অর্থাৎ ঋণের প্রায় ৫২ শতাংশই খেলাপি। গত বছরে ব্যাংকটি নিট লোকসান করেছে ৭৫৬ কোটি টাকা। ব্যাংকের ৭২টি শাখার মধ্যে লোকসানে আছে ২৬টি। বেসিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে গত জুলাইয়ে যোগ দিয়েছেন রফিকুল আলম। গত রোববার তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নিয়ে ব্যাংকটিকে একটা পর্যায়ে আনতে চেষ্টা করছি। গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ঋণ আদায়ে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছি।