‘বাহে হামরা বিদেশ যামো ধান কাইটপ্যার জন্যে’

মানবজমিন প্রকাশিত: ০১ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

কন না বাহে বন্যা আর বৃষ্টিতে বইসে বইসে দিনপার করেছিলাম। বহুত কষ্টে দিন পার করতে নাগছে। ‘এলাকাত তেমন কাজকাম নাই। সুদের ওপর টাকা তো নেয়া আছেই এর ওপর ধারদেনা করতে করতে কাহিল হয়া গেছি। সরকারিভাবে মাটি কাটার কামও শুরু হইলেও তা তুলনামূলক অনেক কম। এমন করি কি আর জীবন বাঁচে বাহে। এই জন্য ধান কাইটপ্যার জন্য হামরা বিদেশ যাবার নাগছি। আমার এলাকার অনেকে ইতিমধ্যে চলিও গেছে। কথা হয় রমনা নৌকা ঘাটে নৌকা ও রেলস্টেশনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষায় থাকা বেশ কয়েকজন দিনমজুরের সঙ্গে। এ ছাড়াও কথা হয় বাসের অপেক্ষায় থাকা মাছাবান্দা গ্রামের দিনমজুর সৈয়দ আলীর সঙ্গে। কথায় কথায় কথাগুলো বলেন তারা। নৌকা ঘাট, রেল স্টেশনসহ বাস কাউন্টারগুলো ঘুরে দেখা গেছে দিনমজুরদের ভিড়। সকলেই ছুটছে কাজের সন্ধানে। তবে এই বিদেশ তাদের কাছে ময়মনসিংহ, জামালপুর, দিনাজপুর, বগুড়া, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান। সৈয়দ আলীর মতো শত শত শ্রমিককে অপেক্ষা করতে দেখা যাচ্ছে। তারা এসেছেন চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন গ্রাম থেকে। শ্রমিকরা জানান, গত কয়েকদিন ধরে প্রতিদিন এলাকার দিনমজুর শ্রমিকরা উপজেলার বাইরে যাচ্ছেন। কাজের সন্ধানে কম ভাড়ায় ‘বিদ্যাশ’ যাওয়া এই দিনমজুরদের বাস শ্রমিকরা নাম দিয়েছে ‘মফিজ’। ‘নরমাল’ গাড়িখ্যাত অর্ধশত বাস এ ধরনের প্যাসেঞ্জার পরিবহন করে টিকে আছে। এই দিনমজুররা বছরে অন্তত দুবার এই দেশের ভেতর ‘বিদেশ’ গমন করেন। আর কর্মস্থলে থাকেন দুই-তিন মাস। এরপর উপার্জিত অর্থে সুদে আসলে দাদনের টাকা মিটিয়ে আবারো কপর্দকশূন্য হয়ে পড়েন। দিনমজুররা জানান, এখনো এলাকায় সেই ভাবে ধানকাটা শুরু হয়নি। টিআর কাবিখাসহ গ্রামীণ অবকাঠামো নির্মাণকাজও শুরু হয়নি এখনো। তাই দিনমজুরদের হাতে কাজ নেই। কাজের সন্ধানে প্রতিদিন দিনমজুররা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাসের ছাদে, ট্রেনের ছাদে বসে ছুটছে বিভিন্ন এলাকায়। কোথাও ধান কাটার খবর পেলে দলবদ্ধ হয়ে কাঁচি, বাকুয়া আর ব্যাগ নিয়ে আসছে বাস টার্মিনালসহ স্টপেজগুলোতে। দিনমজুররা জানান, আমন ধান রোপণের পর থেকে মাঠে তেমন কোনো কাজ নেই। তার ওপর দফায় দফায় বন্যার কবলে পড়ে বিপর্যস্ত তারা। ধারকর্জ করে বেকার সময়টা কোনোমতে পার করলেও এখন আবার চড়া সুদে দাদন নিয়ে পথ খরচার ব্যয় মেটাতে হচ্ছে তাদের। দীর্ঘদিন বেকার থাকায় পথ খরচার টাকাও নেই অনেকের। দাদন নিয়ে পথে বেরুনো দিনমজুর তাই কম খরচে যেতে চান গন্তব্যে। পানি পথে, ট্রেনের ছাদে এরকম ফ্রি আর বাসের ছাদে হাফ ভাড়া তাই জীবিকার এই যাত্রায় জীবনের ঝুঁকি নিতেও আপত্তি নেই তাদের। তবুও যেতে হবে কাজের জন্য করতে হবে কাজ পেটে দিতে হবে ভাত তাই ছুটছে তো ছুটছেই।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us