সুরুতুন্নেছা। ভোলার লালমোহন উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের রাঁয়রাবাদ এলাকার শিউলি বাড়ি তার। বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়ে গিয়েছেন তিনি। বয়স গিয়ে ঠেকেছে পঁচাশিতে। এক ছেলে এক মেয়ের জননী তিনি। ছোট ছোট এই দুই সন্তানকে রেখে প্রায় ৩০ বছর আগে পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন স্বামী মকবুল মিয়া। স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে বুক চাপা কষ্ট নিয়ে বড় করেছেন দুই সন্তানকে। এদের বড় করতে গিয়ে মানুষের বাসায় ঝিয়ের কাজ করতে হয়েছে তাকে। গত পনের বছর আগে মেয়ে আনোয়ারা বেগমকে বিয়ে দিয়েছেন স্থানীয়দের কাছ থেকে সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে। এখন বড় ছেলে মো. ফারুকের সঙ্গেই দিন কাটে সুরুতুন্নেছার। তবে ভালো নেই ফারুকও। দিনমজুরের কাজ করে সংসার পরিচালনা করেন ফারুক। আছে তারও পরিবার। তাদের চাহিদাই সামলাতে পারেন না ফারুক। তবুও মাকে সুখে রাখার জন্য তার চেষ্টা অবিরত। ফারুকের এই সামান্য আয়ে পূরণ হয় না কোনো চাহিদাই। তাই সরকারি কিছু সহযোগিতার জন্য অনেক দৌড়ঝাঁপ করেছেন সুরুতুন্নেছা। তবে এখানে এ সকল সুরুতুন্নেছাদের পোড়া কপাল! আর এখানে অসহায়দের জন্য খুব কমই করুনা হয় সমাজপতি আর জনপ্রতিনিধিদের। তার জন্যই এতো অসহায় হয়েও সুরুতুন্নেছার পঁচাশি বছরেও জোটেনি কোনো বয়স্ক অথবা বিধবা ভাতা। আক্ষেপ করে এ প্রতিনিধিকে সুরুতুন্নেছা বলেন, বয়স অনেক হয়েছে। এখন অনেক রোগ বাসা বেঁধেছে শরীরে। মাঝে মধ্যে মানুষের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে ডাক্তার দেখাতে হয়। এমনকি পরিধান করার কাপড়গুলোও মানুষের কাছ থেকে সাহায্য হিসেবে নেয়া। তিনি আরো বলেন, বাপ এ দুনিয়ায় আমার কেউ নাই। তাই স্থানীয় চেয়ারম্যান আর মেম্বারদের কাছে অনেক দৌড়েও কোনো লাভ হয়নি। পঁচাশি বছর বয়সেও জোটেনি সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা। মৃত্যুর আগে হয়তো আর জুটবেও না সরকারি কোনো সহযোগিতা। তবে বাবা আমার জন্য কোনো সহযোগিতা করতে পারো কিনা দেইখো।এব্যাপারে বদরপুর ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদুল হক তালুকদার বলেন, আপাতত বয়স্ক অথবা বিধবা ভাতার জন্য নাম দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। সামনে সুযোগ হলে তার নাম দেয়া হবে।