ধানের জেলা দিনাজপুরে আমনের ভালো ফলন হলেও ঘরে ফসল তোলার আগ মুহূর্তে ক্ষেতে নেক ব্লাস্ট রোগ দেখা দিয়েছে। ব্লাস্টের আক্রমণে বিঘার পর বিঘা জমিতে ফলন বিপর্যয় ঘটছে। এ নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন কৃষক। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে এ রোগের প্রাদুর্ভাব হয়েছে বলে দাবি কৃষি বিভাগের। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে চলতি আমন মৌসুম ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষক।উত্তরের শষ্যভাণ্ডার দিনাজপুরে এবার ২ লাখ ৫৯ হাজার ৩৩ হেক্টর জমিতে আমন চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও চাষাবাদ হয়েছে আরো বেশি জমিতে। কিন্তু, ভালো ফলন হলেও ঘরে ফসল তোলার আগ মুহূর্তে ক্ষেতে নেক ব্লাস্ট রোগ দেখা দিয়েছে। ক্ষেতে বালাই নাশক স্প্রে করার পরও কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না কৃষক। ব্লাস্টের আক্রমণে বিঘার পর বিঘা জমিতে ফলন বিপর্যয় ঘটছে। আমন ফসল ঘরে তুলতে না পারায় দিশাহারা হয়ে পড়ছেন কৃষক। সদর উপজেলা ঝানঝিরা গ্রামের কৃষক দরিরুল ইসলাম জানালেন, তার ৩ বিঘা জমির ধান ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ হয়ে গেছে। ব্রি-৩৪ জাতের ধান রোপণ করে তার এলাকার আরো অনেক কৃষক সর্বস্বান্ত হয়েছে এবার। বিশেষ করে বর্গাচাষিরা পড়েছেন চরম বিপাকে। কীভাবে তারা জমির মাহাজনকে ধান দিয়ে পোশাবে। তাই, ব্লাস্ট রোগ আক্রমণে আমন ফসল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাওয়া কৃষকদের জন্য ফসলি বীমা চালু ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন অনেকে। আমন ক্ষেতে ব্লাস্ট রোগ আক্রমণের কথা স্বীকার করে দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. তৌহিদুল ইকবাল জানান, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে ব্রি-৩৪ জাতের সুগন্ধী ধানের কিছু এলাকায় এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। তা প্রতিকারে আমরা কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহায়তা দিচ্ছি। বৈরী আবহাওয়ার কারণে এই রোগ আক্রমণ বলে দাবি এ কৃষি কর্মকর্তার।সুগন্ধি ধানের জেলা হিসেবে খ্যাতি রয়েছে উত্তরের জেলা দিনাজপুরের। এই জেলার সুগন্ধি জাতের ধান সারা দেশেই সমাদৃত। জেলায় এবার সুগন্ধি জাতের ধান আবাদ হয়েছে, এক লাখ ৬শ’ ৫৪ হেক্টর জমিতে। বিস্তীর্ণ আমন ক্ষেত ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে কৃষকের স্বপ্ন এই ক্ষেতেই বিনষ্ট হয়ে গেছে। এইসব রোগাক্রান্ত ক্ষেতে বালাই নাশক প্রয়োগ করেও কোনো প্রতিকার না পাওয়ায় দিশাহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক। এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে আগামীতে ধান চাষ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষিবিদরা।