গেল কয়েক বছর ধরেই টিভি নাটকে নানা অনিয়ম চলে আসছে। শুটিংয়ের বিশৃঙ্খলা, সঠিক সময়ে শুটিং সেটে অভিনয়শিল্পীদের অনুপস্থিতি, শিল্পীদের সময়মতো পারিশ্রমিক না দেয়াসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। আর এ মাধ্যমটিতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এবার উদ্যোগ নিচ্ছে টেলিভিশন নাটকের সংগঠনগুলো। তার জন্য টেলিভিশন নাটকে আসছে নতুন নীতিমালা। এই নীতিমালার মধ্যে অন্যতম হলো টেলিভিশন চ্যানেলে নাটক চালাতে প্রযোজকের অনাপত্তিপত্র লাগবে। খুব শিগগিরই এ নীতিমালা চালু হবে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে। এমনটাই জানালেন টিভি প্রযোজক এসোসিয়েশনের সভাপতি ইরেশ যাকের। তিনি বলেন, আমরা টেলিভিশন সংগঠন ‘অ্যাটকো’কে আমাদের নীতিমালা পেশ করেছি। এরইমধ্যে তাদের সঙ্গে আমাদের বসা হয়েছে। এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এখন টেলিভিশন সংগঠনে নীতিমালাটি পেশ হলেই এ নিয়ম চালু হবে। আমরা চাই সব কিছু একটি সুন্দর নীতিমালার মধ্য দিয়ে পরিচালিত হোক। আমাদের সঙ্গে টিভি নাটকের অন্য সংগঠনগুলোও আছেন। কিন্তু প্রযোজকের অনাপত্তিপত্র নিয়ে অনেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করছেন। বিশেষ করে যারা সংগঠনের বাইরে প্রযোজনা করছেন তাদের কি হবে? এ নিয়ে জানতে চাইলে ইরেশ বলেন, নতুন প্রযোজকদের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হওয়ার কারণ নেই। তারা যদি সঠিকভাবে নাটক নির্মাণ করে, শিল্পী ও পরিচালকদের কোনো অভিযোগ না থাকে তাহলে নাটক প্রচারের সময় আমরা সহযোগী সদস্য হিসেবে তাদের নাটক প্রচারের অনুমতি দিবো। এ বিষয়ে অভিনয় শিল্পী সংঘের সভাপতি ও অভিনেতা শহিদুজ্জামান সেলিম বলেন, এটি আমাদের টিভি নাটকের জন্য খুব ভালো একটি উদ্যোগ। যত তাড়াতাড়ি এ নীতিমালা চালু হবে ততোই আমাদের জন্য ভালো। কারণ প্রযোজক যদি তার অর্থ ফেরত না পান তাহলে পরবর্তীতে কিভাবে নাটক নির্মাণ করবে? এ নীতিমালা চালু হলে টিভি চ্যানেলগুলো প্রযোজকদের টাকা বকেয়া রাখবে না বলে আমি মনে করি। কারণ অনেক টিভি চ্যানেলে প্রযোজকদের অর্থ বকেয়া আছে। এ বিষয়ে পরিচালক সাগর জাহান বলেন, টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে নাটক প্রচারে অনেক অভিযোগ রয়েছে। আমরা অনেক কষ্ট করে নাটক নির্মাণ করি। কিন্তু চ্যানেলগুলোর কাছ থেকে সঠিক সময়ে টাকা পাই না। এক্ষেত্রে সংগঠন হয়ে একটি নাটক যদি প্রচারে আসে তাহলে সবার জন্যই ভালো। অনেক সময় চ্যানেলগুলো নাটক প্রচারের পর বাজেট নিয়ে টালবাহানা করে। সেক্ষেত্রে সংগঠন হয়ে নাটক চ্যানেলে প্রচার হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া যাবে। আমি মনে করি এ নীতিমালার সঙ্গে সবাই একাত্মতা প্রকাশ করবে। অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী মনে করেন ইন্ডাস্ট্রির শৃঙ্খলা ফেরাতে এটি ভালো উদ্যোগ। যারা পেশাগতভাবে নাটকে কাজ করে এটি তাদের জন্য অবশ্যই ভালো। বেশ কয়েক বছর ধরে অনিয়মে ভরে গেছে এই অঙ্গন। এটা একটা পেশা। এখানে অবশ্যই নীতিমালার প্রয়োজন। সঠিক নীতিমালা না থাকার কারণে কোনো জবাবদিহিতা হচ্ছে না। আমি এ ইন্ড্রস্ট্রির একজন মানুষ হিসেবে বলবো আমাদের সব সংগঠনগুলোকে একসঙ্গে কাজ করার জন্য। তাহলে সব ধরনের অনিয়ম দূর হবে। এখন সময় এসেছে সব কিছুকে একটি নিয়মের মধ্যে নিয়ে আসার।