শহীদুল আলম সাচ্চু, দুইবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত গুণী অভিনেতা। ছোটবেলা থেকেই অভিনয়ের সঙ্গে তার সখ্য থাকলেও নব্বই দশকের শুরুতে দারাশিকোর পরিচালনায় ‘অঞ্জলি’ সিনেমায় অভিনয়ের মধ্যদিয়ে একজন পেশাদার অভিনেতা হিসেবে তার যাত্রা শুরু হয়। এরপর তিনি একে একে চাষী নজরুল ইসলাম, শহীদুল ইসলাম খোকন, মতিন রহমান, কোহিনূর আক্তার সূচন্দা, প্রিয়দর্শিনী মৌসুমীসহ আরো অনেকের নির্দেশনায় চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। নারগিস আক্তার পরিচালিত ‘মেঘলা আকাশ’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ খল অভিনেতা হিসেবে প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন। এরপর তিনি গোলাম রব্বানী বিপ্লবের ‘বৃত্তের বাইরে’ সিনেমাতে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব চরিত্রাভিনেতা হিসেবে একই পুরস্কারে ভূষিত হন। তবে এই নিয়ে দুঃখ রয়ে গেছে তার। কারণ সাচ্চু তার মাকে কথা দিয়েছিলেন তিনবার তার মায়ের হাতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার তুলে দিবেন। কিন্তু সেই স্বপ্নপূরণের আগেই তার মা পরপারে চলে যান। একজন অভিনেতা হিসেবে নিজের অবস্থান নিয়ে সন্তুষ্ট সাচ্চু। তিনি বলেন, দেশের যে প্রান্তেই শুটিং করতে যাই না কেন সাধারণ মানুষ আমার প্রতি যে ভালোবাসা, শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন তাতে আমি মুগ্ধ। আবার দেশের বাইরে, বিশেষত যেখানে বাংলাদেশিরা থাকেন সেখানে গেলেও ভক্তদের ভালোবাসায় মুগ্ধ হই। আবার এমনও দেখা গেছে মক্কা-মদিনায় গিয়েছি সেখানেও আমাকে দেখে কেউ এগিয়ে এসে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন। অভিনয় না করলে সবার এতো ভালোবাসা পাওয়া হতো না। পরিশেষে একটি কথাই বলতে চাই, মানুষকে মানবিক হতে হবে, তাহলেই দেশ তথা পৃথিবী সুন্দর হবে। সাচ্চু দীর্ঘ পনেরো বছর ধরে চ্যানেল আইতে কর্মরত। বর্তমানে তিনি চ্যানেলটিতে জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা হচ্ছে ‘বেপরোয়া’ ও ‘নোলক’। অভিনয়ে তার যাত্রা শুরু সত্তর দশকের শুরুতে রাজধানীর গ্রীণ রোড স্টাফ কোয়ার্টারে। তবে তার আগে তিনি শেখ কামালের শিশু সংগঠন ‘পাক পাকালির ঝাক’র সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বাংলা একাডেমির বর্ধমান হাউজে প্রথম তিনি মঞ্চ নাটকে অভিনয় করেন। এরপর ‘কিশোর নাট্যম’র হয়ে ফিল্ড ড্রামা ‘আদি থেকে বিংশতী’তে অভিনয় করেন হারুন অর রশীদের নির্দেশনায়। টেলিভিশনে তিনি তিনশোর বেশি নাটকে অভিনয় করেছেন। তিনি অভিনয় শিল্পী সংঘের সাবেক সভাপতি। এছাড়া তিনি ‘দর্শক শ্রোতা পাঠক’ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক।