লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে পপি আক্তার (২০) নামের ৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূকে ধর্ষণ ও নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার শ্বশুরের বিরুদ্ধে। গত ২১শে সেপ্টেম্বর রাতে এ ঘটনা ঘটে চর পোড়াগাছা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের লিটনের বাড়িতে। এ ঘটনায় পপির পিতা কমলনগর উপজেলার চর বসু এলাকার রেণু মিয়ার ছেলে আবদুর রহিম বাদী হয়ে লক্ষ্মীপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। এজাহারে উল্লেখ করেন, বিগত দেড় বছর পূর্বে পপিকে হারুন বাজার এলাকার শরীফের সঙ্গে বিয়ে দেন। বিয়ের পর থেকে শ্বশুর-শাশুড়ি ১ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য তাকে প্রায়ই শারীরিক মানসিক নির্যাতন করে। টাকা দিতে অস্বীকার করায় তারা পপিকে মারপিট ও পাশবিক নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করে লাশ উপজেলা হাসপাতালের সামনে ফেলে রেখে যায়। এদিকে, হাসপাতালের কর্মরতরা বেওয়ারিশ হিসেবে ইমার্জেন্সিতে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। থানায় খবর দিলে পুলিশ তার সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য বেওয়ারিশ হিসেবে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল প্রেরণ করে। পথিমধ্যে পপির স্বজনরা তাকে শনাক্ত করলে লাশ থানায় এনে পুনরায় সুরতহাল করা হয়। পপির বাবা লোকমুখে খবর পেয়ে বেয়াই বাড়ি গিয়ে তাদের ঘরে তালা দেখে থানায় এসে মৃতদেহের শরীরে মারাত্মক নির্যাতনের চিহ্ন দেখেন। থানায় মামলা করতে চাইলে কর্তৃপক্ষ মামলা গ্রহণ না করায় ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। স্থানীয় ছালাউদ্দিন বাড়ির শহীদের স্ত্রী পারভিন, ছালাউদ্দিনের ছেলে মফিজ, ফছিয়লের স্ত্রী নুরজাহানসহ অনেকে জানান, লিটন ও তার স্ত্রী কহিনুর অসামাজিক কাজের সঙ্গে জড়িত। কোরবানির ঈদের দিন বিকালে পপি তার শ্বশুর বাড়িতে আসে। ইতিপূর্বে লিটন তার পুত্রবধূকে প্রায়ই কুপ্রস্তাব দেয় ও ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। যা স্থানীয় গণ্যমান্যরা সালিশ বৈঠকে মীমাংসা করে দেয়। ঘটনার রাতে লিটন তার পুত্রবধূ পপিকে যৌতুকের দাবিতে নানান ধরনের অশ্লীল গালিগালাজ করে। গভীর রাতে লিটন তার পালক ছেলে শরীফকে ঘর থেকে বের করে দিয়ে জোরপূর্বক তার যৌন লালসা চরিতার্থ করে। স্থানীয় কয়েকজনসহ লিটন পালাক্রমে সারারাত পপির ওপর যৌন নির্যাতন চালায়। নির্যাতনের কারণে পপির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে লিটন তার স্ত্রীসহ পপির মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে আত্মহত্যার নাটক সাজায়। ভোরে পপিকে মুমূর্ষু অবস্থায় তার শাশুড়ি হাসপাতালের সামনে রেখে পালিয়ে যায় বলে তারা জানায়। মৃত গৃহবধূ পপিকে গোসল করানো মনছুরের স্ত্রী মিনারা, তোফায়েলের স্ত্রী খুকু মনি জানান, তার শরীরের বিভিন্ন অংশে পাশবিক নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। হতভাগ্য গৃহবধূ পপি হারুন বাজার এলাকার লিটনের (পালক পিতা) ছেলে শরীফ হোসেনের স্ত্রী। এ বিষয়ে থানা অফিসার ইনচার্জ এটিএম আরিচুল হক জানান, পপির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছি। রিপোর্ট আসার পর বলা যাবে আর বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।