জুড়ীতে গত ২১শে সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে শিল্প ও বাণিজ্য মেলা। আর এ মেলার নামে দেদারছে চলছে অবৈধ লটারি বিক্রি। লটারি বিক্রির অনুমোদন নিয়ে খোদ প্রশাসনই রয়েছে ধূম্রজালের মধ্যে। মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক (ডিসি) বলছেন, লটারি বিক্রির কোনো অনুমোদন নেই। ব্যবস্থা নেবে স্থানীয় ওসি। আর ওসি বলছেন, তাদের সম্ভবত বৈধ অনুমোদন রয়েছে।গত শনিবার সন্ধ্যায় মৌলভীবাজার সোসিও ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের উদ্যোগে জুড়ী উপজেলা প্রতিবন্ধী কল্যাণ সংস্থার সহায়তায় তৈয়বুন্নেছা খানম সরকারি কলেজ মাঠে শিল্প ও বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন করেন মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরিন। মেলা উদ্বোধনের পর থেকে আয়োজকরা নানা পুরস্কারের নামে শুধু জুড়ীতে নয় পার্শ্ববর্তী কুলাউড়া ও বড়লেখা উপজেলায় লটারি বিক্রি শুরু করেন। একেকটি উপজেলায় ৮-১০টি গাড়ি নিয়ে লটারি বিক্রি চলছে। এ গাড়িগুলো শুধু শহরে নয়, আশপাশের গ্রামেগঞ্জের বাজারে গিয়েও ২০ টাকা দরে প্রতি লটারি বিক্রি করছে। প্রতিদিন একেকটি গাড়ি গ্রামের সাধারণ মানুষকে পুরস্কারের লোভ দেখিয়ে হাজার হাজার টাকার লটারি বিক্রি করছে। প্রচার গাড়ি থেকে বলা হয়, এসব লটারির ড্র অনুষ্ঠিত হবে প্রতিরাতে। ড্র ফলাফল স্থানীয় স্যাটেলাইট চ্যানেলে প্রচারিত হওয়ার কথা বলা হয়। কিন্ত বাস্তবে কোন চ্যানেলে প্রচারিত হচ্ছেনা। কুলাউড়া উপজেলার বিজয়া বাজারের বাসিন্দা রাসেল, শাহাব উদ্দিন, কাওছার আহমদসহ অনেকেই জানান, গত চার দিন থেকে লটারি কিনছি, কিন্তু আজও কোন পুরস্কার পাইনি। তারা আরও বলেন, প্রতিদিন ২টি গাড়ি এই এলাকায় এসে শ’ শ’ লটারি বিক্রি করে যায়, কিন্তু এখনও পর্যন্ত এই অঞ্চলের কেউ কোন পুরস্কার পায়নি। কুলাউড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম শামীম জানান, পার্শ্ববর্তী উপজেলা জুড়ীতে মাসব্যাপী মেলা হচ্ছে আর কুলাউড়াতে দৈনিক ১০-১২টি গাড়ি র?্যাফেল ড্র’র টিকিট বিক্রি করছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় এই টিকিট বিক্রয় কি বৈধ অনুমোদিত? অনুমোদিত হলে প্রশ্ন- এটা কি জুয়া নয়? অনুমোদনবিহীন হলে আজই বন্ধের দাবি জানাচ্ছি।কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ইয়ারদৌস হাসান জানান, লটারি বিক্রির সম্ভবত বৈধ অনুমোদন রয়েছে। ফলে তাদের এভাবে বন্ধ করা যাবে না। বন্ধ করতে হলে নিশ্চিত হয়ে করতে হবে।এ ব্যাপারে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরিন সাংবাদিকদের জানান, লটারির বিক্রির অনুমোদন দেইনি। এটা বৈধ না। এসব বন্ধে ব্যবস্থা নেবেন সংশ্লিষ্ট ওসি। তারপরও এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।