বিয়ানীবাজারের শেওলা স্থলবন্দর বাংলাদেশ সীমান্তে অবস্থিত। একটু দূরে নতুনভাবে নির্মিত হয়েছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। এটির অবস্থানও বাংলাদেশ সীমান্তে। এপারে বাংলাদেশ সীমান্তকে বলা হয় শেওলা আর ওপারে ভারতীয় সীমান্তকে বলা হয় সুতারকান্দি। বিস্ময়কর হলেও সত্য, বাংলাদেশ সীমান্তের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ঠিকানায় লেখা হয়েছে সুতারকান্দি স্থলবন্দর। কি কারণে, কেন এমন হলো, এর উত্তর নেই কারো কাছে। উল্টো প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের এ নিয়ে কোনো অনুশোচনা নেই। সরজমিন দেখা যায়, শেওলা স্থলবন্দরে প্রাণিসম্পদ কোয়ারেনটাইন স্টেশন নির্মাণের পর ভবনের প্রধান ফটকে ভারতীয় স্থলবন্দরের ঠিকানা যুক্ত করেছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। ভিত্তিপ্রস্তর ফলকসহ যাবতীয় কাগজপত্রে শেওলা না লিখে সুতারকান্দি স্থলবন্দর লেখা রয়েছে। এ নিয়ে বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ী, স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের অসচেতনতাকে দায়ী করেছেন। নাম বিভ্রাটের বিষয়টি ধরা পড়ে গতকাল বিজিবি-বিএসএফ পতাকা বৈঠকের প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেখে। দুই দেশের সীমান্ত বাহিনী সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে প্রাণিসম্পদ কোয়ারেনটাইন স্টেশনের সভাকক্ষে বৈঠক করে। গণমাধ্যমে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ৫২ ব্যাটালিয়নের দেয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে প্রাণিসম্পদ কোয়ারেনটাইন স্টেশন সুতারকান্দি স্থলবন্দর উল্লেখ করা হলে তথ্য বিভ্রাট দেখা দেয় সাংবাদিকদের মধ্যে। শেওলা স্থলবন্দর ব্যবহারকারী কয়লা ব্যবসায়ী জাহেদ ইকবাল বলেন, শুল্ক স্টেশন, ইমিগ্রেশনসহ সব জায়গায় শেওলা লেখা থাকলেও প্রাণিসম্পদ কোয়ারেনটাইন স্টেশনে সুতারকান্দি লেখা রয়েছে। ফলে অনেকের কাছে প্রশ্ন দেখা দেয় ভবনটি বাংলাদেশের না ভারতের। এটা দায়িত্ব্বশীলদের খামখেয়ালীপনার কারণে হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে নির্মিত এ কোয়ারেনটাইন স্টেশনের গোড়াতেই গলদ রয়েছে। ডিও লেটার থেকে শুরু করে একনেকে অনুমোদন পর্যন্ত প্রাণিসম্পদ কোয়ারেনটাইন স্টেশন নির্মাণের প্রতিটি পদক্ষেপে দায়িত্বশীলরা শেওলা স্থলবন্দরের স্থলে সুতারকান্দি স্থলবন্দর নাম ব্যবহার করেছেন। অথচ বাংলাদেশের শেওলা স্থলবন্দরের ওপাশে ভারতের সুতারকান্দি স্থলবন্দর। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রঞ্জিত কুমার আচার বলেন, ভবন নির্মাণের শুরুতে আমাদের কাছে ভুলটি ধরা পড়ে। বিষয়টি একাধিকবার ঊর্ধ্বতন দায়িত্বশীলদের অবহিত করা হয়েছিল।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী আরিফুর রহমান বলেন, আসলে এটি অনিচ্ছাকৃত ভুল। লোকমুখে শুনে হয়তো দায়িত্বশীলরা এমনটি করেছেন। এটি সংশোধন করার জন্য দায়িত্বশীলদের অবহিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে দায়সারা ভাব দেখান জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আতিয়ার রহমান। শেওলা স্থলবন্দরের জায়গায় সুতারকান্দি স্থলবন্দর লেখায় কোনো সমস্যা হয়নি বলে মন্তব্য করেন তিনি। বিষয়টি অমার্জনীয় উল্লেখ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ড. একেএম মনিরুল হক বলেন, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে সংশোধন করা হবে।