বাংলা চলচ্চিত্রের শক্তিমান অভিনেতা মিশা সওদাগর। এ পর্যন্ত আটশ’র বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। ১৯৮৬ সালে এফডিসিতে হওয়া ট্যালেন্ট হান্ট প্রতিযোগিতায় তিনি প্রথম হন। প্রথমে নায়ক হিসেবে ঢালিউডে কাজ শুরু করেন। তখন থেকেই তার অভিনয়ের জগতে পথচলা শুরু। ঢালিউডে শুরুর দিকে নায়ক হিসেবে দুটি সিনেমা করলেও পরে খলনায়ক চরিত্রে তাকে পরিচালকরা বেশি প্রাধান্য দেন এবং সেখানে তিনি এক পর্যায়ে আকাশচুম্বি সফলতা পান। তাই চলচ্চিত্র জগতে খল অভিনয়কেই পেশা হিসেবে বেছে নেন তিনি। বর্তমানে শাকিব খান যেমন ঢালিউডের এক নম্বর নায়ক ঠিক তেমনই খল অভিনেতা হিসেবে মিশা সওদাগরও নাম্বার ওয়ান। শাকিব খানের প্রায় প্রতিটি ছবিতে তিনি খল অভিনেতা হিসেবে অভিনয় করেন। শাকিব খান বর্তমানে সিনেমাতে অভিনয়ের পাশাপাশি ‘এসকে ফিল্মস’ নামে নিজের প্রযোজনা সংস্থা থেকে নিয়মিত ছবি প্রযোজনা ও সিনেমা হলে উন্নত প্রজেকশন মেশিনের ব্যবস্থা করছেন। এ প্রসঙ্গে মিশা সওদাগর বলেন, শাকিব ছাড়া অন্য কেউ তো এগিয়ে আসেনি। এ সুপারস্টার নিজে প্রযোজনার পাশাপাশি সিনেমা হলে প্রজেকশন মেশিনের ব্যবস্থা করছেন। শাকিব খানকে এজন্য সাধুবাদ জানাতে চাই। তিনি নিজ উদ্যোগে এগিয়ে এসেছেন। আমি চাই শাকিবের মতো আরো দশজন এগিয়ে আসুক। কারণ একা শাকিব ইন্ডাস্ট্রির হাল ধরলে হবে না। মিশা সওদাগর আরো বলেন, এবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতির নির্বাচন হয়েছে। এই কমিটির কাছ থেকে অনেক কিছুই আশা করছি আমরা। চলচ্চিত্রের উন্নয়নে এরইমধ্যে বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছে প্রযোজক পরিবেশক সমিতি। চলচ্চিত্রের উন্নয়নে সিনেপ্লেক্স, সেন্ট্রাল সার্ভারসহ যেসব বিষয় নিয়ে আমরা পিছিয়ে আছি সেসব বিষয়ে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতাও বেশ জরুরী। মিশা সওদাগরের হাতে এখন নতুন চারটি ছবি। এরমধ্যে শুরু করেছেন বদিউল আলম খোকন পরিচালিত ‘আগুন’ এর কাজ। মিশা সওদাগর বলেন, এ ছবিতে আমাকে প্রভাবশালী একটি চরিত্রে দর্শকরা দেখতে পাবেন। ছবিতে আমি সাত ভাইয়ের মধ্যে সবার বড়। কাহিনীতে দর্শকরা দেখতে পাবেন, এলাকায় অনেক প্রভাব থাকে আমার। সকলে মানে। সব মিলিয়ে দর্শকরা আমাকে ব্যতিক্রমী একটি চরিত্রে দেখতে পাবেন। পুরো কাহিনী বা চরিত্র এখনই বলতে চাই না। এ ছবির পর শাকিব খানের এসকে ফিল্মসের ব্যানারে নতুন ছবি ‘বীর’ এর কাজও শুরু করবো। ছবিটি পরিচালনা করবেন কাজী হায়াত। এ ছবির গল্পটাও বেশ চমৎকার। নতুন আরো দুটি ছবি নিয়ে কথা হচ্ছে। সেগুলোর কাজও শুরু করতে চাই। চল”ি”ত্রের বর্তমান সময়টা একদমই ভালো যাচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে মিশা সওদাগর বলেন, সত্যি বললে সার্বিক দিক বিবেচনা করলে সত্যিই চলচ্চিত্রের অবস্থা বর্তমানে ভালো না। তবে শিল্পী, প্রযোজক ও পরিচালকসহ সকলে একসঙ্গে চেষ্টা করলে এবং ভালো কাজ উপহার দিলে সামনে ভালো কিছু হবে বলে আশা করছি। সবশেষে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন নিয়ে জানতে চাইলে বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় এই খল অভিনেতা বলেন, আমি বেশ কিছুদিন দেশের বাইরে ছিলাম। আর আগস্ট মাস শোকের মাস। এই মাসে নির্বাচনের তো প্রশ্নই আসে না। কারণ নির্বাচন মানেই শিল্পীদের মনে আনন্দ। চারদিকে হইচই হবে, ভোট হবে, আনন্দের মিছিল হবে। তাই চলতি মাসে তফসিল ঘোষণা এবং আগামী মাসে শিল্পী সমিতির নির্বাচন হবে। এটাই চুড়ান্ত। অক্টোবরে নির্বাচন হবে এটা হান্ড্রেড পার্সেন্ট চূড়ান্ত। এ কথার সূত্র ধরেই মিশার কাছে প্রশ্ন, আপনি কি এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদে অংশ নিবেন? জবাবে তিনি বলেন, শিল্পী সমিতি একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। আর আমি এর সংবিধানটা ভালোভাবে জানি। তাই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা দেওয়ার আগ পর্যন্ত এ বিষয়ে আমি মন্তব্য করতে চাই না। আর করাও আইনত ঠিক হবে না।