You have reached your daily news limit

Please log in to continue


কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ফল আসবে কি?

সন-তারিখ মনে নেই। বেশ কয়েক বছর আগে ‘কিশোর গ্যাং’ নামের শব্দযুগল প্রথম পত্রিকার পাতায় জায়গা করে নিচ্ছিল। রাজধানীর উত্তরাসহ আরও কয়েকটি এলাকায় তৈরি হয়েছিল কিশোর-তরুণদের সংগঠিত সন্ত্রাসী গ্রুপ। তারা মারামারি, জমিদখল, চাঁদাবাজি, যৌন হয়রানি প্রভৃতি বিভিন্ন সমাজবিরোধী কাজে কথিত বড় ভাইদের লাঠিয়াল হিসাবে দায়িত্ব পালন করত। এসব দলে অংশগ্রহণ ছিল বখাটে টোকাই থেকে শুরু করে ভদ্র ঘরের উচ্ছন্নে যাওয়া ছেলেদের। সেসময় জাতীয় দৈনিকে আমি একাধিক কলাম লিখেছিলাম। বলেছিলাম, এ ছোট বিষবৃক্ষ এখনই উপড়ে না ফেললে পরে এর দৃঢ়মূল প্রোথিত হবে সর্বত্র। লিখেছিলাম, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ানো উঠতি সন্ত্রাসীদের নিষ্ক্রিয় করে সুপথে ফিরিয়ে আনা কঠিন নয়; কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের, পুলিশ-র‌্যাবের মতো চৌকশ বাহিনী কাম্য ভূমিকা পালন করতে পারেনি। ফলে রক্তবীজের মতো দ্রুততার সঙ্গে কিশোর গ্যাং দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। যে বিষফোড়ার মূলোচ্ছেদ করা যেত সহজেই, তা এখন এ দেশে চলমান সন্ত্রাসে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

অনেকে বলেন, আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দক্ষতা প্রশ্নাতীত। তারা কত সফলভাবে জঙ্গি দমন ও নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে। অথচ এ বাহিনীই দীর্ঘদিনেও চার্জশিট দিতে পারেনি সাগর-রুনী হত্যাকাণ্ডের। আবার সূচনায়ই সহজে নিয়ন্ত্রণযোগ্য কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে শুধু ব্যর্থই হয়নি, সারা দেশে ভয়ংকরভাবে ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ করে দিয়েছে। বড় বড় অঘটন ঘটাচ্ছে এ কিশোর-তরুণ সন্ত্রাসীরা। ভয়ানক হত্যাকাণ্ডেও জড়িত হচ্ছে। আপাতত শেষ দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা চট্টগ্রামে এক চিকিৎসকের হত্যাকাণ্ড। কিশোর গ্যাংয়ের হাত থেকে নিজ সন্তানকে বাঁচাতে গিয়ে কিশোর সন্ত্রাসীদের হাতে গুরুতর আহত হন তিনি। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা যান।

সম্ভবত এ মর্মান্তিক ঘটনার পর শেষ পর্যন্ত আমাদের দেশের শেষ আশ্রয়স্থল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মুখ খুলেছেন। তিনি কিশোর গ্যাংকে নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ দিয়েছেন। শুধু এটুকু নির্দেশে কতটুকু কাজ হবে, আমরা বলতে পারব না। কারণ, আমরা ঘরপোড়া গরু। ভেতরে ক্যানসার ঢেকে রেখে ওপরে মলম লাগিয়ে আপাতত শান্তি দেখতে চাই। ক্ষত সৃষ্টির প্রকৃত কারণ খুঁজতে চাই না। গত সপ্তাহে যুগান্তরে প্রকাশিত আমার কলামের প্রসঙ্গটি এখানে একটু টানতে হবে। বর্তমান সময়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এখন সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ প্রভৃতি নানা নেতিবাচক চরিত্র হিসাবে সাধারণ্যে ছাত্রলীগ পরিচিত। একথা তাদের নিয়ন্ত্রকরা জানেন না এমন নয়। কিন্তু এ ধারার ছাত্ররাজনীতির দীক্ষা নিয়ে ছাত্রলীগের ছেলেরা ভবিষ্যতে রাজনীতি ও দেশোদ্ধার করবেন বলে প্রকাশ্যে নেতারা মতামত দেন। গোপনে সন্ত্রাসের মদদ দিয়ে বাইরে শান্তি প্রতিষ্ঠার সবক দিলে কী লাভ হবে! গত লেখার পর পাওয়া দুটি টেলিফোনের প্রসঙ্গ টানতে হচ্ছে। একটি আমার সাবেক ছাত্রের, আরেকটি দেশের একজন প্রবীণ প্রথিতযশা প্রকাশকের। ছাত্রটি প্রায় পঁচিশ বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে এখন কলেজের অধ্যাপক। ওর সরল প্রশ্ন-স্যার, এ লেখাটি কি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পড়বেন? আমি বললাম মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বা নীতিনির্ধারকদের সময় কোথায় তারা এসব ছাইপাশ পড়বেন! আমরা লিখি তোমাদের মতো সাধারণ পাঠকের জন্য। যাতে জনসচেতনতা তৈরি হয়। জনগণ ফুঁসে উঠলেই মহাজনরা সতর্ক হন। লেখাটিতে আমি ছাত্রলীগ প্রসঙ্গে কতগুলো প্রশ্ন রেখেছিলাম। জানি এসব প্রশ্নের উত্তর নেতাদের পক্ষে দেওয়া কঠিন। তাছাড়া আমাদের ‘জননেতারা’ সাধারণ মানুষের প্রশ্নের উত্তর দেন না। শ্রদ্ধেয় প্রকাশক বললেন, আপনার লেখার শিরোনাম অনুযায়ী, ক্ষমতাবানদের সপ্তাকাশ থেকে কি নামাতে পারলেন? আমি বললাম, যারা জেগে ঘুমান, তাদের যেমন জাগানো যায় না, তেমনই যারা সপ্তাকাশে চড়ে মহানন্দে স্বর্গসুখ ভোগ করেন, তাদের মাটিতে নামানো সুকঠিন।

শুরু থেকে কিশোর গ্যাং দমন না করার ফলে এখন তা কঠিনভাবে ছড়িয়ে পড়েছে দেশজুড়ে। ১৯ এপ্রিল যুগান্তরে প্রকাশিত একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক সাভারেই পাড়া-মহল্লায় শতাধিক কিশোর গ্যাং গড়ে উঠেছে, যারা ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাদের লাঠিয়াল হিসাবে খুন, জমিদখল, ডিশ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজি, প্রতিপক্ষকে দমন প্রভৃতি কাজে জড়িত থাকছে। প্রতিবেদনের বলা হয়েছে, গত এক মাসে সাভারে কিশোর গ্যাংয়ের হাতে চারটি খুনের ঘটনা ঘটেছে। কিশোর গ্যাংয়ের মূল উচ্ছেদ করার গ্রিন সিগন্যাল না পেলে এদেশের বাস্তবতায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাধ্য কী এদের দমন করে! কারণ স্থানীয় প্রভাবশালীরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে কিশোর গ্যাংয়ের পৃষ্ঠপোষক। এরা নিজেদের অবৈধ কার্যসিদ্ধি করে এ সন্ত্রাসী ছেলেদের দিয়ে। উল্লিখিত প্রতিবেদনে পৃষ্ঠপোষক নেতাদের নামধাম ও অপকর্মের কথা বিস্তারিত লেখা হয়েছে। দলের ঊর্ধ্বে দেশকে রাখতে পারলে, তবেই না এসব সন্ত্রাসমুক্তির চিন্তা করা যায়। কিশোর গ্যাংয়ের আশ্রয়দাতা প্রধানত রাজনীতিসংশ্লিষ্ট ‘বড় ভাইরা’। আর এরা যত সক্রিয় থাকেন, তত নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কিশোর-তরুণ অপরাধীরা একের পর এক সন্ত্রাসী কার্যক্রম করে পার পেয়ে যাচ্ছে। এদের আশ্রয়দাতাদের ব্যূহ ভেদ করার সাধ্য কোনো বাহিনীরই নেই। এ কারণে আমরা মনে করি, শুধু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কিশোর গ্যাং দমনের নির্দেশ দিলেই হবে না, এর জন্য রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত প্রয়োজন। দলের ভেতরের ক্ষত সারাতে হবে আগে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন