You have reached your daily news limit

Please log in to continue


‘জীবনমুখী অর্থনীতি’ ও জিনিসপত্রের দাম

‘অর্থনীতিতে ভালো কাজ করতে হলে প্রথমেই মনে রাখতে হবে, মানুষ আসলে মানুষই।’ এই বক্তব্য যুক্তিবাদী অর্থনীতি থেকে জীবনমুখী অর্থনীতিতে উত্তরণের অন্যতম পথপ্রদর্শক ২০১৭ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ রিচার্ড থেলারের। থেলার দেখিয়েছেন, ঠিক কোন কোন জায়গায় মানুষের সিদ্ধান্ত যুক্তিহীন হয়ে যায় এবং কীভাবে তাদের ফিরিয়ে আনা যায় যুক্তির পথে—তার গবেষণা মূলত সে বিষয়ে। কীভাবে ব্যবস্থায় সামান্য পরিবর্তনের মাধ্যমেই মানুষকে তার নিজের ভালোর পথে ফিরিয়ে আনা যায়, থেলারের গবেষণার বড় অংশজুড়ে রয়েছে সেই তত্ত্ব। ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রাষ্ট্রের। থেলারসহ তাঁর সঙ্গীরা যার নাম দিয়েছেন ‘লিবার্টারিয়ান প্যাটার্নালিজম’ বা ‘উদারপন্থী নিয়ন্ত্রণবাদ’।

থেলার তাঁর বিখ্যাত ‘মিসবিহেভিং: দ্য মেকিং অব বিহেভিয়ারাল ইকোনমিকস’ (অশোভন আচরণ: আচরণগত অর্থনীতির উদ্ভাবন) গ্রন্থে বলেছিলেন, ‘অভিজ্ঞতা থেকে শিখতে গেলে দুটি উপাদান আবশ্যকীয়: বারবার অভ্যাস বা চর্চা করা এবং অবিলম্বে তাদের প্রতিক্রিয়া গ্রহণ করা’ (...টু লার্ন ফ্রম এক্সপেরিয়েন্স টু ইনগ্রেডিয়েন্টস আর নেসেসারি: ফ্রিকোয়েন্ট প্র্যাকটিস অ্যান্ড ইমিডিয়েট ফিডব্যাক)।

আর এভাবেই থেলার মানুষের আচরণগত অর্থনীতির বা জীবনমুখী অর্থনীতির মূলে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এটা অনস্বীকার্য যে ২০০ বছরের বেশি সময় ধরে উৎপাদন, ভোগ, চাহিদা-জোগান, শ্রম, পুঁজি, বাজার প্রতিযোগিতা ইত্যাদি অর্থনীতির প্রতিটি ক্ষেত্রে মানুষের আচরণ বিশ্লেষণের সব থেকে উল্লেখযোগ্য মৌলিক উপাদান ছিল যুক্তিবাদী অর্থনীতি। বেশ কিছুকাল আগেও আচরণবাদী অর্থনীতির বাস্তবতা নিয়ে অনেকে সংশয়ে ছিলেন। কিন্তু রিচার্ড থেলার ‘অশোভন আচরণ’ (মিসবিহেভিং) ও ‘কনুই দিয়ে মৃদু ধাক্কা’ (নাজ) উদ্ভাবনী প্রকল্পের মাধ্যমে মানুষের আচরণগত অর্থনীতিকে মূলধারার অর্থনীতির আবশ্যকীয় অঙ্গ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন।

আচরণবাদী অর্থনীতি নামক ধারাটির অন্যতম জনক থেলার। মানুষের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের মধ্যে যে অসংখ্য ‘বায়াস’ বা যুক্তিহীন পক্ষপাত থাকে, সেগুলোকে যে আসলে গোটাকয়েক খুব সহজ ধারণার মাধ্যমেই ব্যাখ্যা করা যায়, এ কথাটা সবচেয়ে স্পষ্টভাবে থেলারই বলেছেন। র‍্যাশনালিটি। যুক্তিগ্রাহ্য। অর্থনীতির যেকোনো কলেজপাঠ্য বই খুললেই খোঁজ মিলবে ‘র‍্যাশনাল ম্যান’-এর, যে সব সময় নিজের ভালোর কথা মাথায় রেখে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেয়। বিশ শতকের মাঝখান থেকে অর্থনীতির দুনিয়ায় প্রশ্ন উঠতে থাকে এই র‍্যাশনালিটি নিয়ে। রিচার্ড থেলারও সেই প্রশ্নই তুলেছেন। তাঁর প্রশ্নটি এসেছে মনস্তত্ত্বের দুনিয়া থেকে—মনস্তত্ত্ব আর অর্থনীতির মিশেলেই তৈরি হয়েছে ‘আচরণবাদী অর্থনীতি’র ধারা। থেলারের মতে, হরেক কারণে মানুষ এমন সিদ্ধান্ত নেয়, যা যুক্তিসংগত নয়। এই আপাত-যুক্তিহীনতাকে ধরেই তৈরি করতে হবে অর্থনীতির তত্ত্ব।

ধ্রুপদি অর্থনীতির মূল স্তম্ভ—মানুষ অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত যুক্তিসম্মতভাবে নেয়, এই বিশ্বাস। এর অর্থ, নিজের ভালো বুঝতে পারার ও নিজের সাধ্য অনুযায়ী সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা। চাহিদা, জোগান, আয়, ব্যয়, সঞ্চয়, পেশা নির্বাচন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিমা, পেনশন—সব ক্ষেত্রেই এই বিশ্লেষণী কাঠামো ব্যবহার করা হয় এবং এই কাঠামোর অবধারিত যুক্তি হলো, অন্যের ওপর প্রতিক্রিয়া (যেমন পরিবেশদূষণ), কিছু সমষ্টিগত পরিষেবা (যেমন আইনশৃঙ্খলা, অবকাঠামো) এবং সামাজিক কিছু লক্ষ্য (যেমন দারিদ্র্য দূরীকরণ, সর্বজনীন শিক্ষা) বাদ দিলে ব্যক্তিগত অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তে যত দূর সম্ভব হস্তক্ষেপ না করাই ভালো।

আচরণবাদী অর্থনীতির ধারার পথিকৃৎ হলেন মনস্তত্ত্ববিদ ড্যানিয়েল কানেমান আর আমোস টভেরস্কি। মনস্তত্ত্ববিদ হওয়া সত্ত্বেও ২০০২ সালে অর্থনীতির নোবেল পুরস্কার পান কানেমান (যাতে টভেরস্কির ভাগীদার হওয়া অনিবার্য ছিল, কিন্তু তিনি তাঁর ছয় বছর আগে মারা যান)। রিচার্ড থেলার তাঁদেরই উত্তরসূরি। তিনি তাঁদের দ্বারা অনুপ্রাণিত (তাঁর কিছু কিছু গবেষণা তাঁদের সঙ্গে যৌথ) হলেও, গত কয়েক দশকে আচরণবাদী অর্থনীতিকে হালকা কৌতূহল উদ্রেককারী নতুন ঝোঁক (যাকে বলা হচ্ছে ‘জীবনমুখী অর্থনীতি’) থেকে মূলধারার অর্থনীতির আবশ্যক অংশ হয়ে ওঠাতে থেলারের ভূমিকা অবিসংবাদিত।

যেকোনো পরিবর্তনেরই প্রথম প্রতিক্রিয়া নেতিবাচক; যা আছে দিব্যি তো আছে, এ ধরনের রক্ষণশীল মানসিকতা আমাদের সবার মধ্যেই বিরাজমান। যুক্তিসম্মত নির্বাচন বা চয়নের তত্ত্বের ওপর অর্থনীতিবিদদের নির্ভরতার কারণ এই নয় যে তাঁরা মনে করেন, সবাই সব সময় সব তথ্য বিশ্লেষণ করে এবং তার সম্ভাব্য সব প্রতিক্রিয়া ভেবে নিয়ে অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নেন। বিশ্লেষণী দিক থেকে দেখলে এর মূল আকর্ষণ হলো, এতে মানুষের ব্যক্তিগত এবং সামগ্রিক আচরণবিধি নিয়ে নির্দিষ্ট একটা ধারণা পাওয়া যায়। যেমন দাম বাড়লে চাহিদা কমবে এবং জোগান বাড়বে। একই জিনিসের দুই জায়গায় দুই দাম হলে, কম দামের বাজার থেকে বেশি দামের বাজারে জিনিস চলে যাবে। থেলার ও তাঁর সহ-গবেষকেরা বেশ কয়েক দশক ধরে নানা ধরনের পরীক্ষার মাধ্যমে দেখালেন, খুব নির্দিষ্টরূপে কিছু মানুষ যে যুক্তির পথ থেকে বিচ্যুত হয়, তার সমর্থনে প্রমাণের ভার অনস্বীকার্য। পাশাপাশি তিনি এবং অন্য গবেষকেরা দেখালেন, অর্থনীতির মূলধারার তত্ত্বের কাঠামোকে খানিকটা অদলবদল করে নিলে, এ ধরনের আচরণকে ব্যাখ্যা করা মোটেই কঠিন নয়।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন