You have reached your daily news limit

Please log in to continue


কিশোর লিটু কখনো হকার কখনো যোদ্ধা

১৯৭১ সালে লিটু কর্মকারের বয়স ১২-১৩ বছর। কিশোর বয়সেই লিটু কর্মকার পাক হানাদার বাহিনীর নিষ্ঠুরতা দেখেছেন। দেখেছেন পাক বাহিনী নতুন বাজারের রাস্তা দিয়ে কতটা সতর্কতার সঙ্গে এগিয়েছে। বাবাকে ধরে নিতে দেখেছেন, যার খোঁজ আর কোনো দিন পাওয়া যায়নি। আবার মুক্তিকামী মানুষের সাহসও দেখেছেন লিটু কর্মকার।

প্রসঙ্গক্রমে একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেন লিটু কর্মকার। বরিশাল দখলের দিন বিকেলে মড়কখোলা এলাকায় মানুষ জটলা করে উত্তর দিকে আগুন জ্বলতে দেখছিল। সাড়ে তিনটার দিকে দক্ষিণ দিক থেকে ওয়াপদার একটি জিপ এসে ব্রিজের ওপর থামে। চালক ও তার পাশে একজন। দুজনের সঙ্গেই রাইফেল। গামছায় মোড়ানো ছিল বাড়তি গুলি। তারা আগুনের উৎসের দিকে যেতে চাইলো। এই জিপে উঠে পড়লো দুরন্ত কিশোর লিটু কর্মকার ও তার সমবয়সী বন্ধু অনিমেশ। জিপটি কয়েক কিলোমিটার সামনে যাবার পর হঠাৎ পাক বাহিনী হামলা চালায়। এরা ধান ক্ষেতে লুকিয়ে ছিল। প্রথম দফার ব্রাশফায়ারে ড্রাইভারের পাশে থাকা ব্যক্তিটি গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে যায়। অবস্থা বেগতিক দেখে চালক দ্রæত পিছনের দিকে জিপ চালাতে শুরু করেন অবিশ্বাস্য গতিতে। প্রায় দুই কিলোমিটার ব্যাকে আবহাওয়া অফিসের সামনে এসে ড্রাইভার পাক আর্মির প্রতি গুলিবর্ষণের জন্য উদ্ধত হয়। কিন্তু অনুনয়- বিনয় করে তাকে নিবৃত্ত করে কিশোর অনিমেশ। তার বাসায় ফেরে সন্ধ্যা নাগাদ। রাত আটটার দিকে লিটু কর্মকার ও তার অপর দুই ভাই ঘরের সঙ্গে লাগোয়া দোকানের চালায় শুয়ে দেখেছে নতুন বাজারের রাস্তা দিয়ে নিচু হয়ে পাক বাহিনীর সতর্ক অনুপ্রবেশ।

বরিশাল দখল করার একদিন পর ২৭ এপ্রিল লিটু কর্মকারের বাবা উপেন্দ্র কর্মকারকে পাক বাহিনী ধরে নিয়ে যায়। এরপর আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। অনেকেই তাকে পালিয়ে যেতে পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি নিজের মাটি ছেড়ে যেতে চাননি। বলেছিলেন, আমি রাজনীতির ধারেকাছে নেই। আমাকে কেন মারবে! হয়তো তিনি ধারণা করতে পারেননি পাক বাহিনীর লক্ষ্য হচ্ছে গণহত্যা। যে কারণে তিনি কারও সাবধান বাণী আমলে নেননি। এমনকি কানে তোলেননি সন্তানদের কথাও। লিটু কর্মকার জানালেন, বিভিন্ন স্থানে লাশ পড়ে থাকার কথা বাবাকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। বরং বলেছিলেন, ভয় পেলে তোরা যা, আমি যাবো না! আসলে তিনি নিজের মাটি ছাড়তে চাননি। দেশের মাটির প্রতি তার এই মমতার মূল্য দিতে হয়েছে পাক বাহিনীর হাতে প্রাণ দিয়ে।

লিটু কর্মকার জানান, ২৭ এপ্রিল সকাল ৮টার দিকে নতুন বাজার এলাকায় মিলেটারি এসে দোকানপাটের ঝাঁপ খোলায়। বিভিন্ন জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। অনেকের লুঙ্গি খুলে পরীক্ষা করে। পাকিস্তানি পতাকা উড়িয়ে নির্ভয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে বলে। এ সময় উপেন্দ্র কর্মকারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওইদিনই বেলা সোয়া তিনটার দিকে পাক বাহিনী এসে তাকে চোখ বেঁধে নিয়ে যায়। সঙ্গে ছিল স্থানীয় সহযোগীরা। এরপর উপেন্দ্র কর্মকারের আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

শুধু তাই নয়, উপেন্দ্র কর্মকারের তিন ছেলেকেও হত্যা করার জন্য এসেছিল পাক বাহিনী। ভাগ্যক্রমে পিছন দিয়ে তারা পালিয়ে বেঁচেছেন। তিনজনের মধ্যে তখন কেবল যতিন কর্মকার ১৮ বছরের সদ্য যুবক এবং বাকি দুজন কিশোর। রবিন কর্মকারের বয়স ১৪-১৫ বছর, আর সবচেয়ে ছোট লিটু কর্মকারের বয়স ১২-১৩ বছর। এদিকে তাদের বড় ভাই ২০-২২ বছরের সচিন কর্মকার আগেই মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন বেগের সঙ্গে।

বাবাকে পাক আর্মি ধরে নেওয়া প্রসঙ্গে লিটু কর্মকার বলেন, দুপুর বেলা কিছু ভাঙ্গার শব্দ পেয়ে তিনি দোতলা থেকে নিচে নামেন। দেখলেন পাক আর্মি ঝাঁপ ভাঙ্গার চেষ্টা করছে। তিনি দ্রæত উপরে গিয়ে তার বাবাকে বিষয়টি জানান। তার মা অমঙ্গলের আশঙ্কা করে ছেলেদের দ্রæত পালিয়ে যেতে বলেন। মায়ের আদেশে যতিন ও লিটু দোতলা দিয়ে লাফিয়ে পড়ে বাড়ির পিছন দিয়ে পালিয়ে যায়। এদিকে পালাবার সুযোগ না পেয়ে রবিন ঘরের ভিতরই লুকিয়ে ছিল মোড়ানো শীতলপাটির মধ্যে। সে দেখেছে তার বাবা উপেন্দ্র কর্মকারকে ধরে নেওয়ার দৃশ্য।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন