You have reached your daily news limit

Please log in to continue


আশিতেও উজ্জ্বল ড. ইউনূস

তাঁকে ঘিরে সব সময় থাকে বিশাল কর্মযজ্ঞ। করোনা পরিস্থিতিতেও তা থেমে নেই। ২৮ জুন তাঁর ৮০তম জন্মদিন। এই দিনটি ১০ বছর ধরে বৈশ্বিকভাবে পালন করা হয় সামাজিক ব্যবসা দিবস হিসেবে। এবারও ২৬ জুন থেকে মিউনিখে কেন্দ্রীয়ভাবে পালিত হচ্ছে দিবসটি। ভার্চ্যুয়াল স্পেসে এর সঙ্গে সংযুক্ত থাকছেন বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী, করপোরেশন, উদ্যোক্তা, শিক্ষাবিদ এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের সাবেক সভাপতি, আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির প্রেসিডেন্টসহ বিভিন্ন বরেণ্য ব্যক্তি। তিনি ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বাংলাদেশের একমাত্র নোবেল লরিয়েট। নোবেল-উত্তর জীবন তিনি সমর্পণ করছেন সামাজিক ব্যবসা ধারণার প্রসার এবং বাস্তবায়নে। এবার সামাজিক ব্যবসা দিবসেও আলোচনা থাকবে মূলত করোনা পরিস্থিতিতে এর বাড়তি উপযোগিতা নিয়ে। বিষয়টি ব্যাখ্যা করে ড. ইউনূস নিজে ‘নো গোয়িং ব্যাক’ নামে যে লেখাটি লিখেছেন, তা গত মাসে প্রকাশিত হয়েছে ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশের প্রচারমাধ্যমে। সেখানে তিনি করোনাকে বৈশ্বিক অর্থনীতি পুনর্গঠনের একটি সুযোগ হিসেবে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন। এ সুযোগ গ্রহণের জন্য সামাজিক ব্যবসার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁর চিন্তাভাবনার অভিঘাত থাকে পৃথিবীজুড়ে। করোনার বৈশ্বিক সংকটে তাঁর দিকনির্দেশনায় তিনি হয়ে উঠেছেন আরও প্রাসঙ্গিক, আরও উজ্জ্বল। ২. ড. ইউনূস প্রচলিত ধারার অর্থনীতিবিদ নন। শুধু গবেষণা, তত্ত্ব বা বিশ্লেষণে থেমে থাকেন না তিনি। নিজে তত্ত্ব ও ধারণার জন্ম দেন এবং তা সফলভাবে বাস্তবায়ন করে দেখিয়ে দেন। জামানতবিহীন ও যৌথ দায়দায়িত্বভিত্তিক ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্পের সাফল্য ২০০৬ সালে তাঁকে এবং তাঁর গ্রামীণ ব্যাংককে এনে দিয়েছিল নোবেল পুরস্কারের মতো সর্বোচ্চ বৈশ্বিক সম্মান। এ পর্যন্ত ৪২টি দেশে ১৩২টি প্রতিষ্ঠান অনুসরণ করেছে গ্রামীণ ব্যাংকের মডেল। তাঁর সামাজিক ব্যবসা ধারণা আরও গভীর জায়গায় সংস্কারের কথা বলে। এতে উদ্যোগ, বিনিয়োগ, উৎপাদন, বিতরণ, ভোগ—সব ক্ষেত্রে সামষ্টিক মানুষের কল্যাণ, অর্থনৈতিক সাম্য ও সুযোগের সমতার কথা বলা হয়েছে। তিনি শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব আর শূন্য কার্বন এমিশনের যে পৃথিবীর স্বপ্ন দেখেন, তা অর্জনে সবচেয়ে বড় কর্মপন্থা হিসেবে সামাজিক ব্যবসা ধারণা দিয়েছেন। এ ব্যবসা প্রচলিত পুঁজিবাদী ধারণার বিরোধী। এ ব্যবসার লক্ষ্যই হচ্ছে জনকল্যাণমূলক, মানুষের সমস্যা সমাধান (যেমন পানীয় জল, স্বাস্থ্যসেবা, পয়োনিষ্কাশন, সৌরবিদ্যুৎ সরবরাহ)। এতে বিনিয়োগকারী কোনো লভ্যাংশ গ্রহণ করেন না এবং লাভের টাকা বিনিয়োগ করা হয় সামাজিক ব্যবসা সম্প্রসারণ ও এর মাধ্যমে কর্মসংস্থান ও সামাজিক কল্যাণে। তবে ব্যবসার লাভ থেকে তিনি বিনিয়োগের টাকা তুলতে পারেন এবং কাজের জন্য যৌক্তিক পারিশ্রমিক নিতে পারেন বলে এতে তাঁর নিজেরও কর্মসংস্থান হয়, সঙ্গে থাকে সামাজিক দায়িত্ব পালনের তৃপ্তি। ড. ইউনূস তাঁর লেখায় বলেছেন, অতি কেন্দ্রীভূত, অতি পরিবেশবিনাশী, অতি পুঁজি শাসননির্ভর পৃথিবীকে বদলে ফেলতে হলে আমাদের অর্থনীতির প্রচলিত ‘হার্ডওয়্যার আর সফটওয়্যার’ পরিবর্তন করতে হবে। এ জন্য সম্ভবত ‘সফটওয়্যার’ হিসেবে তিনি সামাজিক ব্যবসা ধারণা দিয়েছেন। সামাজিক ব্যবসায় তিনি বেসরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি সরকারি সহায়তার (মূলধন, নীতি, কাঠামোগত) প্রয়োজনের কথা বলেছেন। সবচেয়ে বেশি বলেছেন ব্যক্তি মানুষের নিজের উদ্যোগের কথা। এ জন্য তিনি প্রচলিত শ্রম বিভাজনকে ভাঙতে বলেছেন। ব্যক্তি শুধু পরিবারের দেখাশোনা করবে ও কর দেবে, আর সরকার সব সমষ্টিগত সমস্যার দেখভাল করবে, তিনি তা ঠিক মনে করেন না। তিনি মনে করেন, সরকারের পাশাপাশি ব্যক্তিও স্বাস্থ্যসেবা, পানীয় জল সরবরাহ, কর্মসংস্থান জলবায়ু এসব সমস্যার সমাধান করবে। তিনি যে ইনক্লুসিভ ও অংশগ্রহণমূলক উদ্যোগের কথা বলেন, তা রাজনৈতিকভাবেও উদার গণতন্ত্রের ধারণার সঙ্গে সামঞ্জস্যমূলক। এটি তাই আশ্চর্য নয় যে তাঁর সামাজিক ব্যবসা উদ্যোগে সবচেয়ে বেশি সাড়া এসেছে উদার গণতান্ত্রিক দেশগুলো থেকে। সামাজিক ব্যবসায় এগিয়ে এসেছে ফ্রান্সের ডানোন ফুডস, ভিয়োলিয়া ওয়াটার, জার্মানির বিএএসএফ, জাপানের ইউনোক্লোসহ উন্নত বিশ্বের বহু নামীদামি কোম্পানি। অন্যান্য ক্ষেত্রেও এর প্রভাব আরও জোরালো হচ্ছে। ইতিমধ্যে ৩৩টি দেশে ৮৩টি বিশ্ববিদ্যালয়/কলেজে তাঁর নামে ইউনূস সোশ্যাল বিজনেস সেন্টার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে গবেষণা হচ্ছে তাঁর কাজ ও জীবনাদর্শ নিয়ে। সামাজিক ব্যবসার ওপর একাডেমিক কোর্স চালু হয়েছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। ড.মুহাম্মদ ইউনূসের জীবনী অন্তর্ভুক্ত হয়েছে কানাডা ও জাপানের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঠ্যপুস্তকে। পৃথিবীর মাত্র সাতজন ব্যক্তির একজন বাংলাদেশের ড. ইউনূস, যিনি পেয়েছেন নোবেল শান্তি পুরস্কার এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেনশিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম এবং কংগ্রেসনাল গোল্ড মেডেল। ৩. ড. ইউনূসের নোবেল প্রাপ্তি সারা বাংলাদেশে আলোড়ন তুলেছিল। বাংলাদেশের সব পর্যায়ের রাজনীতিবিদ, নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যম ও সাধারণ মানুষ এতে উদ্দীপ্ত হয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠতার সুযোগ হয়েছিল তখন থেকে। এরপর বিদেশে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আলোকোজ্জ্বল মঞ্চে তাঁকে দেখেছি। দেখেছি কীভাবে তিনি মধ্যমণি হয়ে থাকেন সারা বিশ্বের নামী ও সফল মানুষের মাঝে। তিন বছর আগে প্যারিসে সামাজিক ব্যবসা সম্মেলনে দেখেছি তাঁকে। ইতালির বোলোনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লুইজার হাতে ছিল তাঁকে নিয়ে লেখা বই। জাপান থেকে এটি বের হয়েছিল সে দেশের শিশুদের জন্য। ফ্রান্সের সিটি ইউনিভার্সিটি তার লেকচারের আয়োজন করেছিল। মাত্র ২ মিনিটের মধ্যে শেষ হয়েছিল এর অনলাইন রেজিস্ট্রেশন। ভারতের টাটা গ্রুপের সিও প্যারিসে এসেছিলেন মুম্বাইয়ে সামাজিক ব্যবসার অনুষ্ঠানের সম্মতির জন্য। আলবেনিয়ার এপোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক চেয়েছিলেন ইউনূস সেন্টার খোলার অনুমতি। সেবার প্যারিসের মেয়র তাঁকে ঘটা করে সম্মানিত নাগরিকত্ব দিয়েছেন, দিয়েছেন ইউনূস সেন্টার খোলার জায়গা। অনুরোধ করেছেন ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্যারিসে সামাজিক ব্যবসা সম্মেলন করার জন্য। এই অলিম্পিক আয়োজন হবে তার সামাজিক ব্যবসার থিমকে ধারণ করে। এর লোগো হবে তার থ্রি জিরো থিওরি নিয়ে।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন