ছবি সংগৃহীত

প্রিয় গন্তব্য: রাঙ্গামাটির ধুপপানি ঝর্ণা

রাঙ্গামাটির অত্যন্ত সুন্দর একটি ঝর্ণা হল ধুপপানি ঝর্ণা।

খন্দকার ইশতিয়াক মাহমুদ
লেখক
প্রকাশিত: ০৭ মে ২০১৭, ১৬:৪২ আপডেট: ১৯ আগস্ট ২০১৮, ১৯:৩২
প্রকাশিত: ০৭ মে ২০১৭, ১৬:৪২ আপডেট: ১৯ আগস্ট ২০১৮, ১৯:৩২


ছবি সংগৃহীত
ভরা বর্ষায় এত বেশি পানি হয় যে, পানি পুরো সাদা হয়ে যায়। ছবি: মামুন রিয়াদ।
 
(প্রিয়.কম): গত কয়েক বছর ধরে ধুপপানি ঝর্ণাটি ভ্রমণ-প্রিয় মানুষদের মাঝে জাগিয়েছে সাড়া। এর বিশাল আকার, গাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশ সব মিলিয়ে এটা মানুষকে আকর্ষণ করে প্রচণ্ড ভাবে। আগে এটির বিষয়ে মানুষ খুব কমই জানত। এর পরে ২০০০ সালের দিকে এক বৌদ্ধ ধ্যান সন্ন্যাসী গভীর অরণ্যে ধুপপানি ঝর্ণার নিচে ধ্যান শুরু করেন। প্রথমে তিনি এই জায়গায় একনাগাড়ে প্রায় তিন মাস ধ্যান করেন। পরে স্থানীয় লোকজন তা জানতে পারার পরে তারা ভক্তি ও শ্রদ্ধার সাথে ঐ বৌদ্ধ ধ্যান সন্ন্যাসীকে দিনের নির্দিষ্ট কিছু সময় বা উপলক্ষে সেবা করতে গেলে এই ঝর্ণাটি আস্তে আস্তে মানুষের কাছে পরিচিত লাভ করে।
 
স্থানীয় তঞ্চঙ্গ্যা শব্দে ধুপ অর্থ সাদা আর পানিকে পানিই বলা হয় অর্থাৎ সাদা পানির ঝর্ণা। মূলত এই ঝর্ণার পানি স্বচ্ছ এবং যখন অনেক উচু থেকে তার জল আছড়ে পড়ে তখন তা শুধু সাদাই দেখা যায়। তাই একে ধুপ পানির ঝর্ণা বলা হয়। সমতল থেকে এর উচ্চতা প্রায় ১৫০ ফুট। এই ঝর্ণায় নানান বন্য প্রাণী হরিণ, বুনো শুকর, বনবিড়াল, সাপ নিয়মিতভাবে আসে পানি পান করার জন্য। এমনকি মাঝে মাঝে সেখানে বাঘ ভাল্লুকের পায়ের ছাপও চোখে পড়ে । এই ঝর্ণার পানি আছড়ে পড়ার শব্দ প্রায় ২ কিলোমিটার দূর থেকে শোনা যায়। আর বর্ষাকালে আরও দূর থেকে শোনা যায়।
 

ধুপপানি পাড়া, এখান থেকে ২০০ ফুট নিচে নামলে দেখা পাবেন ঝর্ণার।

কোথায়: ধুপপানি ঝর্ণা রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার ফারুয়া ইউনিয়নের ওড়াছড়িতে এর অবস্থান।
 
কীভাবে: ঢাকা থেকে কাপ্তাই গিয়ে সেখানের লঞ্চঘাট থেকে একটা ট্রলার ভাড়া করে ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিটে যাওয়া যাবে বিলাই-ছড়ি। খাওয়া দাওয়া যাওয়ার পথে বিলাই-ছড়ি বাজারে করে ভাল হবে।
 
কাপ্তাই থেকে বিলাই-ছড়ি দুইভাবে যাওয়া যায়। ট্রলার রিজার্ভ করে অথবা লোকাল ট্রলারে করে। যদি ট্রলার রিজার্ভ করতে চান সেক্ষেত্রে ভাড়া নিবে ১০০০-১৫০০ এর মধ্যে। অবশ্যই দামাদামি করে নিবেন। আর লোকাল ট্রলারে করে গেলে ৫৫ টাকা করে পড়বে প্রত্যেক জনের। আর লোকাল ট্রলার প্রথমটা ছাড়ে কাপ্তাই-ঘাট থেকে সকাল ৮.৩০ টায়। তারপর ১/১.৩০ পর পর ছেড়ে যায়। চেষ্টা করবেন সকালে কাপ্তাই থেকে বোট এ উঠতে, দুপুর ১২ টার পর আর্মিরা ঝর্ণার দিকে যেতে দেয় না। বিলাইছড়ি থেকে আরও ২ ঘণ্টা পাহাড়ি ঢলের নদী পার হতে হবে উলুছড়ি পর্যন্ত। উলুছড়িতে গাইড নেবেন অবশ্যই, গাইড ফি ৫০০ টাকার মত পড়বে।
 
হালকা নাস্তা করে নেবেন, উলুছড়ি থেকে কোষা নৌকা করে পাহাড়ি ঢলের পানি পাড় হয়ে নেবেন (টাকা আলোচনা সাপেক্ষ), এবার হেঁটে ধুপপানি পাড়া (২.৩০ ঘণ্টার ট্রেকিং)। অবশ্যই গাইডের দেখানো পথে যাবেন, ২.১৫-২.৩০ ঘণ্টার মধ্যে ধুপপানি পাড়ায় পৌঁছে যাবেন। ধুপপানি পাড়া থেকে আর ২০০ মিটার নিচে নামলেই স্বর্গীয় ধুপপানি জলপ্রপাত, সময় লাগবে ৩০ মিনিট এর মত।
 
বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর সম্মানার্থে রবিবার ছাড়া আর কোনদিন ধুপপানিতে যাওয়া নিষেধ। তাই যাবার আগে সময় সেভাবে মিলিয়ে নেবেন। এছাড়াও বিলাইছড়ি যাওয়া আসার পথে আলিখিয়াং আর্মি ক্যাম্পে রিপোর্ট করতে হয়। ভোটার আইডি বা পরিচয় পত্র লাগবে। না থাকলে পুরো ট্রলার আটকে দিতে পারে। তাই সেভাবে প্রস্তুতি নিয়ে যাবেন।
 
সম্পাদনা: ড. জিনিয়া রহমান।
আপনাদের মতামত জানাতে ই-মেইল করতে পারেন [email protected] এই ঠিকানায়।

পাঠকের মন্তব্য(০)

মন্তব্য করতে করুন


আরো পড়ুন

loading ...