বিয়ের পোশাক শুধু সুতোয় বোনা নয়। এর বুননে মিশে থাকে স্বপ্ন। বিয়ের পোশাক কেমন হবে, সাজ কেমন হবে—এসব নিয়ে অনেকেরই বিভিন্ন পরিকল্পনা থাকে। পোশাকে উঠে আসে কনের ইচ্ছের প্রতিচ্ছবি, স্বপ্নের ছায়া! একসময় বিয়ের পোশাক মানে ছিল লাল কাতান। বিবর্তন এসেছে সেই ধারাতে। তালিকায় যুক্ত হয়েছে নতুন নতুন সব নাম। দেশীয় নকশার পোশাকের কদরও বেড়েছে। বিশেষ দিনের আনকোরা পোশাকের খোঁজে কনে এখন ডিজাইনারের সেলাই ঘরের খোঁজও নিচ্ছেন। বিয়ের পোশাক নিয়ে কাজ করছেন যারা, সাফিয়া সাথী তাদের মাঝে অন্যতম। প্রায় এক দশক এই কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। নিজ ব্র্যান্ড ‘সাফিয়া’। এর পোশাকে দেশের কাপড়ই ব্যবহৃত হচ্ছে এবং নকশায় বিভিন্ন ডিজাইনের পাশাপাশি উঠে আসছে দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য-সংস্কৃতিও। দেশীয় এই ব্র্যান্ডের বিভিন্ন পোশাক এখন পাওয়া যাচ্ছে সওদায়।
সিঁদুর লাল লেহেঙ্গা মিলছে সওদায়
সওদাতে চলছে সাফিয়া ব্র্যান্ডের পণ্য সিঁদুর লাল লেহেঙ্গার নিলাম। এই লেহেঙ্গা সাফিয়া সাথী জানান, এটি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী সিল্ক কাপড়। অলংকরণ করা হয়েছে এম্ব্রয়ডারিতে। মোটিফে ফুল আর জ্যামিতিক ইন্সপিরেশন। লেহেঙ্গার বর্ডার পোশাকটির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে। এমন পোশাকে বিয়ের কনে অতুলনীয় সাজে সেজে উঠবে।
দেশের ফেব্রিকে সাফিয়ার কাজ
পোশাকের কারুকাজে দেশীয় ফ্রেবিক নিয়ে কাজ করছেন সাফিয়া। তিনি বলেন, পোশাক নকশায় আমি কাজ করি নিজ দেশের ফেব্রিক নিয়ে। এখন পর্যন্ত সব থেকে বেশি ব্যবহার করেছি রাজশাহীর রেশম ফেব্রিক। বাজেটের উপরে নির্ভর করে মসলিন আর জামদানিতেও তৈরি হয় আমার নকশার পোশাক। পরিবেশের প্রতি মায়া আমার। তাই কোন কাজে পরিবেশের সামান্য ক্ষতি চাই না আমি। প্রকৃতি প্রদত্ত ফেব্রিকেই তাই আমার পোশাক তৈরি হয়। পাশাপাশি আরও একটি কারণ রয়েছে। ফ্যাশন বিশ্বের দরবারে আমার দেশের প্রতিনিধিত্ব আমার প্রধান চাওয়া। জিওগ্রাফিক্যাল আইডেন্টিটির পণ্যের তালিকায় ইতোমধ্যে আমাদের দেশের যে সকল ফেব্রিক আছে, সেগুলি ব্যবহার করে কাজ করে যাচ্ছি নিয়মিত। এর বাইরে সকল ন্যাচার মেইড ফেব্রিক নিয়েই কাজ করি।
ব্র্যান্ড সাফিয়া’র স্বত্ত্বাধিকারী সাফিয়া সাথী।
বিশেষত্ব হ্যান্ড এমব্রয়ডারি
বিয়ের পোশাকে অরনামেন্টেশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সৃজনশীল সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলা-ই অরনামেন্টেশনের সার্থকতা। দিনে দিনে নানান রকম কৌশল যোগ হয়েছে এ তালিকায়। কিন্তু হাতের কাজের সৌন্দর্য তুলনাহীন। সাথি বলেন, বিয়ের পোশাকের অলংকরণে তাই আমি সব সময়ে প্রাধান্য দেই হাতের কাজের। নিখুঁত সৌন্দর্যে আমার ভরসা সব সময়েই হাতের কাজে। এক রঙা ফেব্রিককে নান্দনিক নকশায় অলংকৃত করে এই হাতের কাজ।
এক বাক্যে নিজের কাজের প্রকাশ—মেইড ইন বাংলাদেশ
সাফিয়া বলেন, মেইড ইন বাংলাদেশ—আমার কাছে এটা সেরা ট্যাগ লাইন। এই একটি লাইনে আমার কাজের বিস্তারিত রয়েছে। আমার ডিজাইনের পোশাকের শুরু থেকে শেষ সবই এই দেশেই। ইন্সপিরেশন থেকে শুরু করে তৈরি পরবর্তী অলংকরণ, কোয়ালিটি কন্ট্রোল, প্যাকেজিং সব ক্ষেত্রেই আমার দেশের মানুষের শ্রম সাফিয়া ব্র্যান্ডকে সমৃদ্ধ করেছে।
পাঠকের মন্তব্য(০)
মন্তব্য করতে লগইন করুন