ওয়েছ খছরু,অতিথি প্রতিবেদক:এক সময় খেই হারিয়ে ফেলেছিলো সিলেট যুবলীগ। নেতৃত্ব দেয়ার মতো নেতা খুঁজে পায়নি। এ কারণে বর্তমান সিলেট জেলা যুবলীগের সভাপতি তাজপুর ডিগ্রি কলেজের সাবেক ভিপি শামীম আহমদকে ৬ নম্বর সহ-সভাপতি থেকে টপকিয়ে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা হয়েছিলো। মহানগরের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিলো আলম খান মুক্তিকে। এই দুই জনের হাত ধরে বর্তমান সময়ে যুবলীগ অনেকটা শক্তিশালী। এ কারণে সিলেট যুবলীগের সম্মেলনকে ঘিরে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। উত্তেজনাও তৈরি হয়েছে। খাদিমপাড়া হয়েছে রণক্ষেত্র। আর এবারের যুবলীগের কমিটিতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের দৌড়ঝাঁপও বেশি। ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দিয়ে তারা পরিপক্কতা অর্জনের পর এবার সিলেট যুবলীগে নেতৃত্বে ভাগ বসাতে চান। এ কারণে যুবলীগের সম্মেলনকে সামনে রেখে প্রতিদিনই চলছে শোডাউন-পাল্টা শোডাউন। সিলেট যুবলীগের সিনিয়র নেতারা জানিয়েছেন- ২০০৩ সালে জেলা যুবলীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে জগদীশ চন্দ্র দাসকে সভাপতি ও আজাদুর রহমান আজাদকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি গঠন করা হয়। নির্ধারিত সময় পেরিয়ে পাওয়ার প্রায় তিনবছর পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে আবু তাহের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, খন্দকার মহসিন কামরান ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। আবু তাহের কারান্তরীণ হলে জেলা যুবলীগের কমিটির সভাপতির পদ নিয়ে সংকট তৈরি হয়। দুর্দিনে সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হয় ভিপি শামীমকে। দীর্ঘ ১১ বছর ধরে এই কমিটি নেতৃত্ব দিচ্ছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে গত ৩০শে জুন সিলেট জেলা যুবলীগের বর্ধিত সভা হয়। এ সভার পর আগামী ২৭শে জুলাই সিলেট জেলা যুবলীগের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। এদিকে- সম্মেলনকে কেন্দ্র করে যুবলীগে দৌড়ঝাঁপের অন্ত নেই। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদকে ঘিরে সরব হয়ে উঠেছেন নেতারা। সভাপতি পদে এই মুহূর্তে আলোচনায় সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছেন দুর্দিনের কাণ্ডারি বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাবেক ভিপি শামীম আহমদ। তার সঙ্গে সভাপতি পদে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছেন মহানগর যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম উদ্দিন। এছাড়া সভাপতি পদে লবিং চালাচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরীর ঘনিষ্ঠজন মহানগর যুবলীগের বর্তমান কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান আসাদ। সাধারণ সম্পাদক পদে লড়াইয়ে রয়েছেন- জেলা পরিষদের সদস্য শামীম আহমদ, খাদিমপাড়ার চেয়ারম্যান আফসর আহমদ, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এডভোকেট মো. জাহাঙ্গীর ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বাবলা চৌধুরী। তবে সাধারণ সম্পাদক ছাত্রলীগের সাবেক নেতারাই এগিয়ে রয়েছেন। ২০০৫ সালে গঠিত সিলেট মহানগর যুবলীগের কমিটিতে সভাপতি ছিলেন, সৈয়দ শামীম আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন আবদুর রহমান জামিল। পরবর্তীতে শামীম ও জামিল আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে অন্তর্ভুক্ত হন। ওই সময় বর্তমান যুগ্ম আহ্বায়ক মুশফিক জায়গীয়দার হাল ধরেছিলেন। পরবর্তীতে মহানগর যুবলীগকে চাঙ্গা করতে ২০১৪ সালে আলম খান মুক্তিকে আহ্বায়ক করে মহানগর আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটি এখন সিলেট মহানগরে কমিটিকে চাঙ্গা করে তুলেছে। একইভাবে জেলায় শামীমের মতো মহানগরে মুক্তিও দুর্দিনের কাণ্ডারি হিসেবে হাল ধরেন। এবার মহানগর যুবলীগের সভাপতি হওয়ার দৌড়ে বেশ এগিয়ে আছেন আলম খান মুক্তি। কাউন্সিল হলেও মুক্তির পক্ষে যাবে জনরায়। তবে- মুক্তিকে একক ছাড় দিতে নারাজ প্রতিপক্ষ গ্রুপের নেতারা। এই পদে শক্ত অবস্থান নিয়ে লবিং চালাচ্ছেন সিনিয়র যুবলীগ নেতা শান্ত দেব। এর বাইরেও আরো কয়েকজন নতুন মুখ প্রার্থী হওয়ার জন্য লবিং চালাচ্ছেন। সাধারণ সম্পাদক হতে এগিয়ে আছেন সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মুশফিক জায়গীরদার। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন, ছাত্রলীগের সাবেক সিনিয়র নেতা জাকিরুল আলম জাকির। চলতি মাসের শেষ দিকে মহানগর যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে- সিলেট জেলা ও মহানগর যুবলীগের সম্মেলনকে সামনে রেখে গতকাল সিলেটে এসেছেন যুবলীগের সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা প্রেসিডিয়াম সদস্য এডভোকেট বেলাল হোসাইন ও সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক আতিক। তারা সম্মেলন সফল করতে বিভিন্ন পর্যায়ে নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।