বর্ষাকালে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকে। বৃষ্টির জলে কিংবা ঘামে ভিজে মাথার ত্বক ও চুল তেল চিটচিটে হয়ে যায়। ভেজা চুল বেঁধে রাখলে চুলের গোড়া হয়ে যায় নরম। মাথার ত্বকে স্ক্যাল্পের সংক্রমণও হয়। এ জন্য এ সময় বাড়তি যত্নের প্রয়োজন।
‘কুঁচ-বরণ কন্যা রে তার মেঘ-বরণ কেশ।/ আমায় লয়ে যাও রে নদী সেই সে কন্যার দেশ॥’– কাজী নজরুল ইসলাম
মেঘ-বরণ কেশের প্রেমে পড়েন না এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। কবি-সাহিত্যিকরা বিভিন্ন সময় নারীর ঘন-কালো কেশের প্রশংসা করে লিখেছেন নানা গীত-কবিতা। এখন অবশ্য মানসিক চাপ, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস, ভেজাল খাবার, পুষ্টিহীনতা, ধুলাবালি ও ঘামের কারণে আগের তুলনায় চুল পড়া বেড়েছে। সাধারণ ঋতুর তুলনায় বর্ষাকালে চুল পড়ার পরিমাণ বেড়ে যায়। কারণ, এ সময়ের আবহাওয়া আর্দ্র থাকে। সেই সঙ্গে বারবার বৃষ্টিতে ভেজা, ভেজা চুল ভালোভাবে না শুকিয়ে বেঁধে ফেলা ইত্যাদি কারণে নরম হয়ে যায় চুলের গোড়া।
বর্ষায় চুল বেশি পড়ার কারণ সম্পর্কে শিওর সেল মেডিকেলের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. তাওহীদা রহমান ইরিন জানান, অতিরিক্ত আর্দ্রতার কারণে বাতাসে যে ধুলাবালি, বিষ থাকে তা চুলের ক্ষতি করে। এসব ময়লা চুলের গোড়ায় জমে পোরসকে ব্লক করে দেয়। এ ছাড়া মাথার ত্বক, সিবাম, ঘাম ও শুষ্ক ত্বকের সঙ্গে মিশে প্রদাহ তৈরি করতে পারে। কেননা আর্দ্রতা যে কোনো জীবাণুর জন্য সহনশীল। চুলের ফাঙ্গাস ও ব্যাকটেরিয়া দ্বারা জীবাণুঘটিত রোগও দেখা দিতে পারে।
খুশকি একটি চিরাচরিত সমস্যা। এটি ফাঙ্গাসের কারণে হয়। আবার বর্ষাকালে চুল যদি পরিষ্কার করা না হয় কিংবা শ্যাম্পু ও কন্ডিশনারের অবশিষ্ট অংশ লেগে থাকে, তাহলে খুশকির সমস্যা বাড়ে বলে জানান ডা. তাওহীদা রহমান ইরিন।
বৃষ্টিতে চুল ভিজে গেলে: বৃষ্টির পানিতে বাতাসের যে হাইড্রোজেন থাকে, বর্ষাকালে সেটি চুল দ্বারা শোষিত হয়ে চুলের উপরিভাগের আবরণ কিউটিকল ফুলে যায়। চুল ফ্রিজি ও আঠালো হয়ে থাকে। তাই বৃষ্টির পানিতে চুল ভিজে গেলে চুল শুকিয়ে নেওয়া ভালো। ভেজা চুল যদি না শুকিয়ে ওইভাবে রেখে দেওয়া হয়, তা থেকে চুল পড়ার সমস্যাসহ যাবতীয় সমস্যা দেখা দেয়। ভেজা অবস্থায় চুল না আঁচড়ে, চুল শুকিয়ে আঁচড়াতে হবে। মোটা দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করতে হবে। চুল মোছার ক্ষেত্রে বেছে নিতে হবে মাইক্রোফাইবারযুক্ত সফট টাওয়াল।