আগামী জাতীয় নির্বাচনে অনিয়ম ও জালিয়াতি ঠেকাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি সাড়া জাগিয়েছে চারদিকে। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধা দেওয়া ও অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ওপর মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের হঁশিয়ারিতে দেশের সব মহলই নড়েচড়ে বসেছে। এ নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনাও হচ্ছে। এ ভিসানীতির আওতায় রাজনীতিক, বর্তমান ও সাবেক সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিচার বিভাগ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত থাকবেন। এখানে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধা এবং ভোটের অনিয়ম বলতে ভোট কারচুপি, ভোটারদের ভোটের আগে ও পরে ভয়ভীতি দেখানো, সহিংসতার মাধ্যমে জনগণকে সংগঠিত হওয়ার স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার প্রয়োগে বাধা দেওয়া।
পাশাপাশি বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে রাজনৈতিক দল, ভোটার, সুশীল সমাজ বা গণমাধ্যমকে তাদের মতামত প্রকাশে বাধা দিলে তাও এ ভিসানীতির আওতায় পড়বে। উল্লিখিত কর্মকাণ্ড সংঘটিত করার জন্য যারা আদেশ বা হুকুম দেবেন, তারাও হুকুমের আসামির মতো এ ভিসানীতির আওতাভুক্ত হবেন। পাঠক একটু লক্ষ করলেই বুঝতে পারবেন, ২০১৮ সালের সংসদীয় নির্বাচন থেকে শুরু করে এযাবৎ আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে যত উপনির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, ওইসব নির্বাচনেই ক্ষমতাসীন দলের পেটোয়া বাহিনী ও নির্বাচনে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা উল্লিখিত প্রতিটি ঘটনা বারংবার ঘটেছে! সুতরাং এটি সহজেই বোঝা যায়, দলীয় সরকারের অধীনে এতদিন নির্বাচনে, সরকার নিয়জিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ক্ষমতাসীনরা ভোটারদের যেভাবে বাধা দিয়ে এসেছে, মার্কিন এ ভিসানীতি যেন তারই আলোকে রচিত হয়েছে। বিগত দুটো সংসদীয় নির্বাচনসহ অন্য সব নির্বাচনে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য ও প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের নিরপেক্ষ ভূমিকার কথা ভুলে গিয়ে যেভাবে পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ করেছেন, এবার এ ভিসানীতি থেকে তারাও রেহাই পাবেন না।