একজন রোগীর পেটের ওপরের অংশে সামান্য ব্যথা ছিল। আল্ট্রাসনোগ্রামের রিপোর্টে ইউরিনারি ব্লাডার বা মূত্রথলিতে একটি ছোট্ট (২ সেমি x ১ সেমি) টিউমারের কথা বলেছে! কী করা যায় এখন?
আরেক রোগীর প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাচ্ছে, কিন্তু কোনো ব্যথা, জ্বালাপোড়া নেই। তাঁর আল্ট্রাসনোগ্রামেও মূত্রথলিতে একটি টিউমার দেখা যাচ্ছে, যা মোটামুটি বড় (৩ সেমি x×৪ সেমি)। এ ক্ষেত্রে কী করণীয়?
প্রথম রোগীর ক্ষেত্রে টিউমারটি খুব ছোট এবং এটি ব্লাডার বা মূত্রথলির মাংসপেশিতেই সীমাবদ্ধ। এটি এন্ডোসকপির মাধ্যমেই অপসারণ সম্ভব।
দ্বিতীয় রোগীর ক্ষেত্রে এন্ডোসকপির মাধ্যমে অপসারণের পরও মূত্রথলিতে কিছুদিন ধরে কেমোথেরাপি দিতে হবে।
এবার তৃতীয় একজনের সমস্যার কথায় আসা যাক। আট থেকে নয় মাস যাবৎ মাঝেমধ্যেই তাঁর প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যেত। দুই সপ্তাহ ধরে সেটা আর বন্ধ হচ্ছে না। সঙ্গে দেখা দিয়েছে কোমরে ব্যথা। ডান পা’টাও গেছে ফুলে। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় মূত্রথলিতে বড় সাইজের একটি টিউমার ধরা পড়েছে, যা পার্শ্ববর্তী অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও লসিকাগ্রন্থিতে ছড়িয়ে পড়েছে। চিকিৎসা কী? আগে কেমোথেরাপি দিয়ে পরে মূত্রথলিটি অপসারণের মাধ্যমে ফেলে দিতে হবে।
ওপরের রোগীদের ঘটনাগুলো থেকে মূত্রথলির ক্যানসারের লক্ষণ ও চিকিৎসা সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পাওয়া যায়।
লক্ষণগুলো সাধারণত কী
বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই রোগ ঘটনাক্রমে ধরা পড়ে। যেমন অন্য কোনো কারণে আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে গিয়ে ধরা পড়তে পারে। তবে প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া, প্রস্রাবের সঙ্গে মাংসপিণ্ডের মতো বের হওয়া, পেটে ব্যথা, কোমরে ব্যথা, পা ফুলে যাওয়া, জন্ডিস—এগুলোও হতে পারে উপসর্গ।
সাধারণত প্রস্রাবের একটি পরীক্ষা আর আল্ট্রাসনোগ্রামের মাধ্যমে রোগটি শনাক্ত করা যায়। তবে ক্যানসারের ব্যাপ্তি কতটা ছড়িয়েছে, তা বুঝতে সিটি স্ক্যান দরকার হয়।
চিকিৎসা কী
- রোগের ধাপ অনুযায়ী এসব চিকিৎসা নেওয়া যায়— এন্ডোসকপির (টিইউআরপি) মাধ্যমে টিউমার
- অপসারণ
- মূত্রথলিতে কেমোথেরাপি
- মূত্রথলি অপসারণ (র্যাডিক্যাল সিস্টেকটোমি)
- কেমো অথবা রেডিওথেরাপি
- পরবর্তী সময়ে দুই থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত নিয়মিত ফলোআপে থাকতে হবে। রোগটি যত প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়ে, চিকিৎসার সফলতা তত বেশি।