‘পৃথিবীটা অসহ্য রকমের সুন্দর।...কিছু কিছু মানুষ এই পৃথিবীতে থাকা উচিত, যাদের কাজ হচ্ছে পৃথিবীর সৌন্দর্য অ্যাপ্রিশিয়েট করা। তারা কাজকর্ম কিছুই করবে না, শুধু পৃথিবীর সৌন্দর্য দেখে বেড়াবে।’
হুমায়ূন আহমেদের নক্ষত্রের রাত ধারাবাহিক নাটকের সংলাপটি যেন সব ভ্রমণপিপাসু মানুষের মনের কথা। যাঁরা বেড়াতে ভালোবাসেন, যাঁদের রক্তে খেলা করে ভ্রমণের নেশা, একটু অবকাশ পেলেই ‘দে ছুট’ ধরনের পাগলামো আছে যাঁদের ভেতর, এ যেন তাঁদের এক আজন্ম আফসোস—ইশ্, কাজকর্মহীন গোটা জীবন যদি ঘুরে বেড়াতে পারতাম! কিন্তু বাস্তবে তা তো আর হয় না। ছককাটা আঁটসাঁট শিডিউলে বাঁধা জীবন। সময়ের ক্ষুদ্রতম ভাগটুকুও বর্গা দেওয়া অন্যের কাছে। নিজের জন্য সময় কই! তবে এসব কিন্তু ভ্রমণপাগল মানুষদের আটকে রাখতে পারে না। তাঁরা ঠিক ফাঁকফোকর বের করে নেন।
ভ্রমণ বা পর্যটন কেবল পর্যটকের ব্যক্তিগত আনন্দের ব্যাপার নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে অনেক কিছু। পর্যটনশিল্প যেকোনো দেশের জাতীয় অর্থনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ অনুঘটক। সংস্কৃতি বিনিময়ের অপূর্ব মাধ্যম। দূরদেশ থেকে যে পর্যটকেরা আসেন, তাঁরা সঙ্গে করে নিয়ে আসেন নিজেদের সংস্কৃতি। আবার ফেরার সময় পর্যটন অঞ্চলের স্থানীয় মানুষের জীবনযাপন, স্থানীয় ভূখণ্ডের অপরূপ সৌন্দর্যের অভিজ্ঞতা নিয়ে ঘরে ফেরেন। ফলে পর্যটকমাত্রই স্থানীয়দের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ অতিথি। তাঁদের প্রতি আন্তরিক হতে হবে। হতে হবে অতিথিপরায়ণ। যথাসম্ভব সমাদর করতে হবে তাঁদের। তবেই না তাঁরা বারবার ঘুরেফিরে আসবেন!