রেমাক্রি পেরিয়ে নাফাখুম

আজকের পত্রিকা প্রকাশিত: ২৩ মার্চ ২০২৩, ১১:৫৩

বাস ছুটছে উঁচু-নিচু পাহাড়ি পথ ধরে। এ যেন আকাশের পথ ধরে চলা। দিগন্তরেখা বরাবর দাঁড়িয়ে থাকা পাহাড়গুলো নীলাভ রং নিয়ে জেগে আছে বহুকাল। দূরের পাহাড়গুলো সবুজের চেয়ে নীল রঙে বেশি শোভা পায়। রাস্তার দুধারে চেনা গ্রাম পেরিয়ে চিম্বুক, নীলগিরি, জীবননগরের দীর্ঘ পাহাড় বেয়ে বলিপাড়া ক্যাম্পে স্বল্প চা-বিরতি। ধোঁয়া ওঠা গরম চায়ে চুমুক পর্ব শেষ করে মধ্য দুপুরে বাস পৌঁছায় থানচি বাজারে।


নদী আর পাহাড় যেন একসঙ্গে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে প্রাগৈতিহাসিক কালের সাক্ষী হয়ে। সাঙ্গুতীরে গড়ে উঠেছে থানচি বাজার। জনপদ আর অরণ্য তো আছেই। বাজারে নেমে ব্যাকপ্যাক গুছিয়ে চললাম থানচি বাজার ঘাটের দিকে।


দুপুরে থানচি বাজারে উদর পূর্তি করে যাত্রা করলাম দেশি বোটে চড়ে। সাঙ্গুর পথ ধরে, প্রচণ্ড স্রোতের বিপরীতে ইঞ্জিনের খটখট শব্দে এগিয়ে চলেছে দেশি ইঞ্জিন-নৌকা।


সাঙ্গুর দুপার ঘেঁষে সবুজ বন। আর জেগে ওঠা বালুর চরে বাদামখেত সবুজ মখমলে ভর করে আছে সাঙ্গুর ডানায়। স্বচ্ছ পানি আর ছোট-বড় পাথর যেন এই সাঙ্গুর প্রাণ। আর সাঙ্গু টিকিয়ে রেখেছে এই পুরো জনপদ।


নদীর পাড়ে পাহাড়ি গ্রাম। থানচি থেকে বেশ কিছুটা পথ পেরিয়ে চোখে পড়ে তিন্দু বাজার। বাজারের ঘাটে কিছুক্ষণের বিরতি। নদী আর পাহাড়ের সঙ্গেই জীবন চলে তিন্দুর মানুষের।


ছোট ছিমছাম তিন্দু বাজার। সবুজ পাহাড় যেন আগলে রেখেছে নিসর্গের গ্রাম তিন্দুকে। এর সামনে দিয়ে ছুটে চলা খরস্রোতা সাঙ্গু বারবার আছড়ে পড়ছে পাথরের গায়ে। তিন্দু থেকে বিকেলের দিকে যাত্রা করলাম রেমাক্রির পথে।


কিছু পথ পেরিয়ে গিয়ে দেখা যায়, যুগের পর যুগ সাঙ্গুর বুকে জেগে থাকা বিশাল বিশাল পাথরখণ্ড। বর্ষা কিংবা অন্য যেকোনো সময় তীব্র স্রোতেও অবিচল থেকেছে রাজা পাথর, রানি পাথরসহ অসংখ্য ছোট-বড় পাথরখণ্ড। পাহাড়ের গায়ে হেলান দেওয়া সূর্যের আলোকছটা নদীর বুকে। জলের পথ ধরে নৌকা এগোতে থাকল রেমাক্রির পথে।


আঁকাবাঁকা রৌদ্রোজ্জ্বল পানিপথে কোথাও কোথাও তীব্র স্রোত। তাই বিপদ এড়াতে কিছু জায়গা হেঁটেই যেতে হচ্ছে।


নদীতে ছিপ ফেলে মাছ ধরার অপেক্ষায় পাহাড়ি তরুণ। স্বচ্ছ জলে অনেকে স্থানীয় সনাতনী পদ্ধতিতে ধারালো লোহার শিক দিয়ে মাছ শিকার করে।


এই পথ মিশেছে দুর্গম পাহাড়ে। পাহাড়ের অবিন্যস্ত ঝিরি এসে মিলেছে সাঙ্গুর তীব্র স্রোতে। সাঙ্গুর পথে চলতে চলতে গোধূলিবেলায় নৌকা থামে রেমাক্রি বাজারের ঘাটে। রাতে সেখানেই নিশিযাপন।


পাহাড়ের ওপর রেমাক্রি বাজার। রাত হতেই এই জনপদজুড়ে নেমেছে জোছনার দল। পাহাড় পেরিয়ে চাঁদের আলো ছুঁয়েছে নদীর জল। পাহাড়ের বুকে জেগে থাকা জোছনা ক্রমশ ভরিয়ে দিচ্ছে পুরো লোকালয়। রেমাক্রি খালে বিরামহীন কলকল ধ্বনি মিশে যাচ্ছে সাঙ্গুর জলে, জলের শব্দমালা অদ্ভুত শোনাচ্ছিল নীরব-শব্দহীন অরণ্য ঘেরা জনপদে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us