বৈপ্লবিক প্রক্রিয়া নয়, আমরা বলছি সংস্কারের কথা

সমকাল হাসনাত কাইয়ুম প্রকাশিত: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৩:৩৪

গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম প্রধান নেতা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুম রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক। হাওরের মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন করতে গিয়ে বহুবার কারা নির্যাতিত হাসনাত কাইয়ুম বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাকালীন সহসভাপতি এবং বাংলাদেশ লেখক শিবিরের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তাঁর জন্ম ১৯৬৩ সালের ১ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার শোভারামপুর গ্রামে।


রাষ্ট্র সংস্কার বলতে আপনারা কী বোঝাচ্ছেন- একটু সংক্ষেপে বলুন।


হাসনাত কাইয়ুম: আমরা দু'ভাবে বিষয়টি বলতে পারি। একটি হচ্ছে বাংলাদেশের সংবিধানের প্রথম অংশে 'রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি' নামে যে অধ্যায়টি আছে- সেখানে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদ- অর্থাৎ সাধারণ মানুষের কাছে যেগুলো চার মূলনীতি বলে পরিচিত; এর পাশাপাশি আরও অনেক বিষয় বা নীতি আছে। বাংলাদেশের সংবিধানের সমস্যা হচ্ছে, এ মূলনীতিগুলো বাস্তবায়নে যে ধরনের ক্ষমতা কাঠামো থাকা দরকার; রাষ্ট্রের ক্ষমতা যেভাবে বিন্যস্ত হওয়া দরকার, তা ওইভাবে না হয়ে ব্রিটিশ আমলে যেমনটা ছিল; পাকিস্তান আমলে যেমন ছিল তার চেয়েও খারাপভাবে বিধিবদ্ধ আছে। আমরা বলছি, সংবিধানের 'রাষ্ট্র্র পরিচালনার মূলনীতি' অংশের সঙ্গে ক্ষমতা কাঠামো অংশের যে দ্বন্দ্ব বা বৈপরীত্য আছে, তা দূর করতে সাংবিধানিক ক্ষমতা কাঠামোর পরিবর্তন বা সংস্কার করতে হবে। এ ছাড়া রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য আরও অনেক আইনকানুন আছে। সেগুলোকেও মূলনীতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ করার জন্য সংস্কার করতে হবে। এই পুরো কাজকে আমরা বলি রাষ্ট্র সংস্কার।


অন্য কীভাবে বিষয়টি বলতে পারেন?


হাসনাত কাইয়ুম: অন্যভাবে কিছু বিষয় সুনির্দিষ্ট করার জন্য আমরা বলি; 'নির্বাচন ব্যবস্থা' সংস্কার করতে হবে। সংসদে যেহেতু অন্যায্য আইন তৈরি হয়; তাই সংসদ বা আইন বিভাগকে সংস্কার করতে হবে। আইন প্রয়োগ ও কার্যকরের মাধ্যম হলো বিচার বিভাগ। সেখানে সংস্কার লাগবে। আমাদের প্রশাসন ঔপনিবেশিক আমলের; সেখানে সংস্কার লাগবে। আর সংবিধানে 'স্থানীয় সরকার' নাই; আছে 'স্থানীয় শাসন'। সেখানেও সংস্কার লাগবে। আমাদের সংবিধানে 'মৌলিক অধিকার' বলে একটা অধ্যায় আছে, যেখানে সভা-সমাবেশ করার অধিকার; মতপ্রকাশের অধিকার ইত্যাদি সম্পর্কে বলা আছে। তবে এর প্রায় সবই শর্তসাপেক্ষে; তাই সেগুলো বদলাতে হবে। শর্তগুলো ব্রিটিশ আমলের আইনের বরাতে দেওয়া। আমরা মৌলিক অধিকারকে সেসব ঔপনিবেশিক আইনের শর্তের বাইরে আনতে ও নিরঙ্কুশ করতে চাই। আমাদের যে পাচারকেন্দ্রিক বা পাচারমুখী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা রয়েছে, সেখানেও সংস্কার করতে হবে। মূলত এ সাতটা জায়গায় সংস্কার করা গেলে শিক্ষা, চিকিৎসা, কর্মসংস্থানসহ জীবনযাপনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে দুর্ভোগ আছে, তা কমানো যাবে বলে মনে করি। এই পুরো বিষয়কে আমরা আরেকভাবে বলি রাষ্ট্র সংস্কার।


আপনি রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গ- নির্বাহী, বিচার ও আইন বিভাগ সংস্কারের কথা বললেন। কোনটার ক্ষেত্রে কী সংস্কার লাগবে বলে মনে করেন?


হাসনাত কাইয়ুম: প্রথমত 'সেপারেশন অব পাওয়ার' বা ক্ষমতার ভারসাম্য এবং রাষ্ট্র ও সরকারের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। যেমন সংসদের কাছে সরকারের জবাবদিহি করার কথা। কিন্তু ৭০ অনুচ্ছেদের কারণে সংসদ উল্টো জিম্মি হয়ে আছে সরকারের কাছে। আমরা মনে করি, 'আস্থা ভোট' ছাড়া আর সর্বক্ষেত্রে সংসদ সদস্যদের জনপ্রতিনিধি হতে হবে; এরা এখন দলীয়, প্রকৃতপক্ষে দলীয় প্রধানের প্রতিনিধি হয়ে আছেন। সংসদের 'কার্যপ্রণালি বিধি'ও সংস্কার করতে হবে। নির্বাহী বিভাগ এখন পিরামিড স্টাইলের; এখন তা শুধু নিচ থেকে ওপরের দিকে সর্বশীর্ষে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জবাবদিহি করে। একে জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক করতে হবে। আমাদের বিচার ব্যবস্থা ঔপনিবেশিক। এই ঔপনিবেশিক আইনকানুন অক্ষুণ্ণ রেখে বিচার বিভাগকে স্বাধীন করলেও লাভ হবে না। আইন যাতে মানুষকে মর্যাদা দেয় সে জন্য আইনের যেমন পরিবর্তন লাগবে, তেমনি বিচার বিভাগেরও স্বাধীনতা লাগবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us