যুগপৎ আন্দোলনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা

আজকের পত্রিকা মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী প্রকাশিত: ০৬ জানুয়ারি ২০২৩, ১৫:০১

যুগপৎ আন্দোলনের তৃতীয় অভিজ্ঞতা বর্তমানে হতে যাচ্ছে। এবার জামায়াত যুগপৎ আন্দোলনে এত দিন লুকোচুরি খেললেও অঘোষিতভাবে বিএনপির ১০ 
ও ২৭ দফার সঙ্গেই আছে।


বাংলাদেশের রাজনীতিতে যুগপৎ আন্দোলনের একটি ধারণা ও অভিজ্ঞতা এরই মধ্যে তৈরি হয়েছে। এই রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা কখন, কতটা সুফল দিয়েছে, কতটা হতাশার সৃষ্টি করেছে, তার কোনো পোস্টমর্টেম না করেই কিছু কিছু রাজনৈতিক দল যুগপৎ আন্দোলনকে সরকারের বিরুদ্ধে কার্যকর উপায় হিসেবে বিবেচনা করছে। রাজনৈতিক দলগুলোর বেশির ভাগের মধ্যেই অতীত অভিজ্ঞতাকে অনেক সময় সরলীকরণ করার প্রবণতা রয়েছে। আন্দোলনরত দলগুলোর নিজেদের জোট ও দলের সংখ্যাতাত্ত্বিক বিস্তৃতি দেখিয়ে ক্ষমতাসীনদের জনবিচ্ছিন্ন দেখানোর কৌশল হিসেবে এটিকে ব্যবহার করা হচ্ছে।


বিদেশিদেরও এর মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হয়ে থাকে। সে কারণে যুগপৎ আন্দোলনকে এখন বিরোধীপক্ষ সরকারবিরোধী যেকোনো আন্দোলনের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য কিংবা লাভজনক উপায় হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। কিন্তু রাজনীতিতে দেখার বিষয় হচ্ছে, সরকার পরিবর্তনের ফলাফল কতটা জনগণের কল্যাণে পরবর্তী সময়ে ভূমিকা রাখবে, তা বিবেচনা করা। রাজনীতিবিদেরা তা কতটা বিবেচনা করেন, সেটি ভিন্ন প্রশ্ন।


রাজনীতিসচেতন সবার মনে হয় এখন সময় এসেছে যুগপৎ আন্দোলনের অতীত অভিজ্ঞতার একটি পোস্টমর্টেম করে দেখার। তাহলেই এখন দেশে সরকারের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য নামসর্বস্ব নানা দলের জোট গঠন এবং সরকার পতনের আন্দোলনের ফলাফল সম্পর্কে একটি যথার্থ রাজনৈতিক ধারণা পাওয়া যেতে পারে।


আশির দশকে সামরিক শাসক এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রথমে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলো ১৫ দলীয় ঐক্যজোট গঠন করে। এটিকে অনুসরণ করে বিএনপির নেতৃত্বে সাতদলীয় জোট গঠিত হয়। এই জোটের দলগুলো ছিল মূলত মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনার পরিপন্থী এবং আওয়ামীবিরোধী। জামায়াতে ইসলামীও এর সঙ্গে ছিল। একটি পর্যায়ে এসে ১৫ দলীয় জোটের মধ্যে কয়েকটি বাম ঘরানার দল আলাদা হয়ে পাঁচদলীয় আরেকটি জোট গঠন করে, তবে সিপিবি ও ন্যাপ আওয়ামী লীগের সঙ্গেই ছিল। এর ফলে এরশাদবিরোধী আন্দোলনে তিনটি জোট প্রথমে ভিন্ন ভিন্ন অবস্থানে থেকে দাবি ও কর্মসূচি প্রদান করলেও একটি পর্যায়ে এসে তিন জোটের মধ্যে ধারণা সৃষ্টি হয়েছিল যে এরশাদ সরকারের পতনের জন্য তাদের ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচি প্রণয়ন করতে হবে। সেখান থেকেই যুগপৎ আন্দোলনের ধারণা তৈরি হয়। এই আন্দোলন এগিয়ে নেওয়ার জন্য তিন জোটের মধ্যে লিয়াজোঁ কমিটি নামক একটি ছোট সমন্বয়ক শক্তি তৈরি করা হয়। লিয়াজোঁ কমিটির নেতারা রাজপথের কর্মসূচি প্রদানের ক্ষেত্রে নিজ নিজ জোটের মতামত ও কর্মসূচির সমন্বয় সাধন করতেন। এভাবেই যুগপৎ আন্দোলন একসময় রাজপথের কর্মসূচিতে তিন জোটকে প্রায় একই কাতারে নিয়ে আসে, যা সরকারের বিরুদ্ধে কার্যকর বিরোধী শক্তি হিসেবে মাঠে ভূমিকা রাখে। এরশাদ সরকার একপর্যায়ে বেশ একঘরে হয়ে পড়ে। এরশাদ সরকারের পতনের একটি মাত্র লক্ষ্যেই তিন জোট একমত হয়েছিল এবং ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন সংগঠিত করছিল। কিন্তু তিন জোটের মধ্যে আদর্শগত অবস্থান ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। আট ও পাঁচ দলের মধ্যে আদর্শগত দূরত্বের চেয়ে ব্যক্তিত্বের বিরোধই ছিল প্রধান। এ দুই জোটই স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের ব্যাপারে একমত পোষণ করত। কিন্তু বিএনপির নেতৃত্বাধীন সাতদলীয় ঐক্যজোট ছিল আট ও পাঁচদলীয় জোটের সম্পূর্ণ বিপরীত মতাদর্শী। এ ধরনের পরস্পরবিরোধী মতাদর্শের রাজনৈতিক জোটের যুগপৎ আন্দোলনের ফলে সরকারের পতন ঘটলেও ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র ও রাজনীতির মৌলিক কোনো পরিবর্তন হবে কি না, তা নিয়ে গোড়াতে সুস্পষ্ট কোনো ভাবনা-চিন্তা ছিল বলে মনে হয় না।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us