ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড থেকে বেনামে বিপুল অঙ্কের ঋণ বের করে নেওয়ার অভিযোগের তদন্তে নেমেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন কোম্পানি খুলে কিংবা আগে থেকে ঋণ রয়েছে এমন কিছু প্রতিষ্ঠানের নামে বিপুল অঙ্কের ঋণের প্রকৃত সুবিধাভোগী কারা- তা খতিয়ে দেখবে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিশেষত নাবিল গ্রুপের ৭ হাজার ২৬৫ কোটি টাকা ঋণের সুবিধাভোগী অন্য কোনো পক্ষ কিনা, তার তদন্ত হবে। এর আগে গত সেপ্টেম্বরে এ গ্রুপের বিষয়ে তদন্তের উদ্যোগ নিলেও অজ্ঞাত কারণে তা থেমে যায়। এখন নতুন করে বাংলাদেশ ব্যাংকের তিন সদস্যের একটি তদন্ত দল গতকাল থেকে কাজ শুরু করেছে। আর আপাতত নাবিল গ্রুপের নামে ঋণছাড় স্থগিত রাখার মৌখিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, রাজশাহীকেন্দ্রিক নাবিল গ্রুপকে ইসলামী ব্যাংকের বাইরে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক গত জুনে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা এবং সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক গত মে মাসে ১ হাজার ১২০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করে। সব মিলিয়ে এ গ্রুপের নামে অনুমোদিত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা। চলতি বছরের মার্চে তাদের ঋণের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। অল্প সময়ের ব্যবধানে বিপুল অঙ্কের ঋণ বাড়ানোর বিষয়টি সন্দেহের চোখে দেখছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকের মালিকানায় থাকা কোনো পক্ষ বেনামে এসব ঋণ নিতে পারে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অফসাইট সুপারভিশন বিভাগের পর্যালোচনার ভিত্তিতে গত সেপ্টেম্বরে বিষয়টি অধিকতর তদন্তের জন্য পরিদর্শন সংশ্নিষ্ট দুটি বিভাগে পাঠানো হয়।
জানা গেছে, গতকাল ব্যাংক খাতের বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে সরকারের উচ্চপর্যায়ে আলোচনা হয়। এরপর ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ মুনিরুল মওলাকে জরুরিভাবে ডাকা হয় বাংলাদেশ ব্যাংকে। অফিস ছুটির পর রাত অবধি তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকেই ছিলেন। আর গতকাল সকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন অতিরিক্ত পরিচালকের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত দলও শুরুতে গিয়ে এমডির সঙ্গে বৈঠক করে।
সার্বিক বিষয়ে বক্তব্যের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক জি এম আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।