২০০৮ সালে নির্বাচনী আইনের চূড়ান্ত সংস্করণের অন্যতম সংযোজন ছিল নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইচ্ছুক এবং উপযুক্ত দলগুলোর বাধ্যতামূলক নিবন্ধন। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও ১৯৭২) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং যুগান্তকারী এই ধারা অধ্যায় ৬ এ-তে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
সুশীল সমাজ, আইনবিশেষজ্ঞ ও ১৭টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে একাধিকবার বিশদ আলোচনার পর আইনে নিবন্ধনের বিষয়টিকে বাধ্যতামূলক করা হয়। এখানে মনে রাখা দরকার, এর আগে আবু সাঈদ (২০০০-০৫) কমিশনও ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের বিষয়টি বাধ্যতামূলক করার উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু বড় রাজনৈতিক দলগুলোর চাপের কারণে তখন বিষয়টি ঐচ্ছিক হিসেবে রেখে দেওয়া হয়।
তখন ভাঙনের মুখে থাকা এরশাদের জাতীয় পার্টি লাঙ্গল প্রতীক ধরে রাখতে নিবন্ধন করেছিল। আর কোনো দল সেই পথ ধরেনি। নিবন্ধন বাধ্যতামূলক না থাকায় ২০০১ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল ৪৫টি দল, আর ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল ৮১টি দল। এসব দলের অধিকাংশই ছিল নামসর্বস্ব।
১৯৯৬ সালের নির্বাচনে ছয়টি দল, যারা একটি আসন পেয়েছিল, তারা ভোট পেয়েছিল শূন্য দশমিক ২৩ শতাংশ এবং বাকি ৭৪টি দল সমষ্টিগতভাবে ভোট পেয়েছিল শূন্য ১ দশমিক ৬৭ শতাংশ এবং বেশির ভাগই শূন্য শতাংশ ভোট পেয়েছিল। ২০০১ সালেই নিবন্ধন ঐচ্ছিক হওয়ার কারণে মোট ৫৩টি দল অংশ নেয়, যার মধ্যে ৮টি দল ছাড়া অন্য দলগুলো একটি আসনও পায়নি। এসব দলের মধ্যেও তিনটি ১ শতাংশের নিচে ভোট পেয়েছিল। অন্যদিকে বাকি ৪৫টি দল মিলে শূন্য দশমিক ৪০ শতাংশ ভোট পেয়েছিল এবং এর মধ্যে ৩৩টি দল শূন্য শতাংশ ভোট পেয়েছিল।