নুর আহমদের চায়ের দোকান থেকে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের দূরত্ব সামান্য। দোকানটির কাছেই একটি টিলায় উঠলে দেখা যায়, সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ার পর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের তুমব্রু পাহাড়ে দেশটির বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) চৌকি। অস্ত্র হাতে দুজন বিজিপি সদস্য পাহারা দিচ্ছেন। নিচে ঘাঁটি। সেখানে বসানো আছে ভারী অস্ত্রশস্ত্র।
দোকানটিতে ছিলেন স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা। তাঁদের একজন ছমুদা বেগম (৪৫)। তিনি বলছিলেন, ‘গুলির শব্দে ঘরে থাকতে পারি না। ছেলেমেয়েদের নিয়ে আতঙ্কে থাকতে হয়।’
ছমুদাকে সমর্থন জানিয়ে কৃষক মোহাম্মদ ইউনুস (৪৫) বলেন, গতকাল রোববার সকাল সোয়া ৯টার দিকে বিজিপি চৌকি থেকে মর্টারের দুটি গোলা ছোড়া হয়। বিকট শব্দে এই পাড়ে মাটি কাঁপতে শুরু করে। তিনি বলেন, এভাবে গোলাগুলি চলছে এক মাসের বেশি সময় ধরে। সকাল, দুপুর, বিকেল, রাত—গুলিবর্ষণ চলতেই থাকে। হেলিকপ্টার থেকেও মর্টারের গোলা ছোড়া হয়।
যে চায়ের দোকানটির কথা বলছিলাম, সেটি বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের তুমব্রু সীমান্তের পশ্চিমকুল গ্রামের। মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সঙ্গে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর যুদ্ধ ও গোলাগুলিতে সীমান্তঘেঁষা বাংলাদেশের যে কয়টি গ্রামে মানুষের জীবন উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে কাটছে, তার একটি পশ্চিমকুল। গতকাল সকালে কক্সবাজার থেকে নানা বাধা–বিপত্তি কাটিয়ে ওই গ্রামে গিয়ে শোনা গেল বাসিন্দাদের উদ্বেগের কথা।