নিজ নিজ সংস্কৃতি অনুযায়ী আমরা সবাই কিছু না কিছু কুসংস্কারে বিশ্বাস করি। প্রচলিত যেসব ধারনা বা কুসংস্কার চালু আছে তার সবকিছুই প্রমাণিত নয়। গর্ভাবস্থা যেকোনো মায়ের জন্য খুবই স্পর্শকাতর সময় এবং এসময় অনেক ধরনের শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। তাই এই সময়ে গর্ভবতী মায়েরা পরিবারের কাছ থেকে অনেক ধরনের পরামর্শ শোনেন এবং অনেক ক্ষেত্রে মেনে নেন। মনে রাখা প্রয়োজন, কিছু কুসংস্কার যেমন ক্ষতিকারক নয় আবার এটাও ঠিক, অনেক ব্যাপার আছে যা সঠিক কিনা তা প্রসূতি এবং স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ না জেনে পালন করা উচিত নয়। সঠিক প্রসবপূর্ব যত্ন আপনার শিশুকে সুস্থ রাখবে এবং একটি মসৃণ প্রসবে সাহায্য করবে। জেনে নিন গর্ভাবস্থা সংক্রান্ত প্রচলিত কিছু কুসংস্কার সম্পর্কে-
গর্ভবতী মায়ের পছন্দের খাবারের ওপর শিশুর চেহারা নির্ভর করে
প্রচলিত একটি কুসংস্কার হলো, গর্ভবতী নারীর যে খাবারটি খাবার তীব্র ইচ্ছা জাগে, অনেক্ষেত্রে সেই খাবারের সঙ্গে শিশুর কিছু শারীরিক গঠনে মিল থাকতে পারে! যেমন চকলেট বা গাঢ় রঙের খাবার বেশি খেলে শিশুর গায়ের রং কালো হবে, অন্যদিকে দুধের মতো হালকা রঙের খাবার ত্বকের রঙ ফর্সা হবে। কাতল মাছ খেলে শিশুর মুখ বড় হবে, পুটি মাছ খেলে মুখ ছোট হবে এ ধরনের আরও অনেক কুসংস্কার ছড়িয়ে আছে। সত্যি কথা বলতে, খাবার বা পানীয় কোনটাই শিশুর গায়ের রং কিংবা শারীরিক গঠনের ওপর কোনো প্রভাব ফেলে না। শিশুর ত্বকের রঙ মা-বাবার জিনের ওপর নির্ভর করবে। আপনার শিশুর চেহারা কেমন হবে তা প্রসবের পূর্বে খুঁজে বের করার সর্বোত্তম উপায় হলো 4D আল্ট্রাসাউন্ড। শিশুটি সঠিক পুষ্টি পাচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য মায়ের ডায়েট কীভাবে পরিচালনা করবেন সে বিষয়ে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিতে পারলে সবচেয়ে ভালো হয়।
গলার মালা পরা বা তোয়ালে জড়ানো এড়িয়ে চলা
এই কুসংস্কার অনুসারে গলায় বা ঘাড়ে জড়ানো কিছু পরলে শিশুর জন্মের সময় গলায় নাভির কর্ড পেঁচানো হবে, যা অনেক ক্ষতিকর। কিন্তু আদতে এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই। এই কুসংস্কার গর্ভবতী মায়েদের একটি গুরুতর উদ্বেগের কারণ হতে পারে। বিশেষ করে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ত্রৈমাসিকের সময় নাভির কর্ডটি শিশুর ঘাড়ে পেঁচিয়ে যেতে পারে। এটি গর্ভে শিশুর নিজের নড়াচড়ার কারণে ঘটে এবং এর আর কোনো বাহ্যিক কারণ নাই। ডেলিভারির আগে ডাক্তারের কাছে নিয়মিত চেকআপ করালে এবং আলট্রা সাউন্ড করলে এটি সম্পর্কে ধারণা দিতে পারে।