ব্যাংকে আমানতকারীদের অর্থ কতটা সুরক্ষিত

যুগান্তর ড. আর এম দেবনাথ প্রকাশিত: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১২:১৯

কয়েকদিন আগের কথা। টেলিভিশনে খবর দেখছিলাম আর ঘনঘন চ্যানেল বদলাচ্ছিলাম মনের মতো খবর শোনার জন্য। হঠাৎ নজরে এলো ব্যাংকের খবর। খবর পাঠিকা জানাচ্ছিলেন আমানতকারীদের নানা আকাক্সক্ষার কথা। এ প্রসঙ্গেই বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়া হচ্ছিল। ব্যাংকের আমানতকারীরা কতটুকু সুরক্ষিত। অর্থাৎ কোনো ব্যাংক ‘লালবাতি’ জ্বালালে আমানতকারীরা তাদের আমানতের টাকা ফেরত পাবে তো-এই হচ্ছে প্রশ্ন। অধীর আগ্রহে আলোচনা শুনছিলাম জবাব পাওয়ার জন্য। কিন্তু জবাব কিছু পেয়েছি, কিছু পাইনি।


একজন বলছিলেন, সরকার ব্যাংকগুলোকে লালবাতি জ্বালাতে দেবে না। অতীতে দেয়নি। যে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানই লালবাতি জ্বালানোর পর্যায়ে গেছে, সরকার তখন একে রক্ষা করেছে। আমানতকারীদের টাকা মার যায়নি শেষ পর্যন্ত। এ ধরনের আলোচনা শুনে তৃপ্তি পাচ্ছিলাম না। বারবার মনে হচ্ছিল, কোথায় যেন একটা ‘গ্যাপ’ থেকে যাচ্ছে। এই অতৃপ্ত অবস্থায় কিছু খোঁজখবর নিলাম-আসলে দেশে আমানতকারীদের কী সুরক্ষা আছে, বা আদৌ আছে কিনা। এ নিয়েই আজকের নিবন্ধ।


এক সময় ব্যাংক শুরু হতো ব্যাংক-মালিকদের টাকা দিয়ে। ধনাঢ্য ব্যক্তিরাই ব্যাংকের ব্যবসা করতেন, তারা মানুষকে ঋণ দিতেন। দিতেন নিজের টাকা ধার। আমানত বা ডিপোজিটের গুরুত্ব আসে অনেক পরে। বর্তমানে আমানত আগে, ঋণ পরে। আগে ছিল ঋণ আগে, আমানত পরে। যেহেতু ব্যাংকের শুরুই এখন আমানত ও আমানতকারীদের দিয়ে, তাই স্বভাবতই আমানতকারীদের স্বার্থরক্ষার কথা আসে। এখন আমানতকারীদের স্বার্থ দেখে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর নিয়মনীতির অধীনে চলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা-‘বিজনেস অব ব্যাংকিং’।


বস্তুত ব্যাংকিং ব্যবসা অত্যন্ত নিয়ন্ত্রিত (রেগুলেটেড) ব্যবসা। আর কোনো ব্যবসা এতসব আইন-নিয়ম-কানুন-বিধি মেনে করতে হয় না। এটা করা হয়েছে, যেহেতু আগের দিনের মতো ব্যাংক আর মালিকদের টাকায় চলে না, চলে আমানতকারীদের টাকায়-যাকে বলা যায় পরের ধনে পোদ্দারি। অতএব সাধারণ মানুষ/আমানতকারীদের টাকার সুরক্ষা বাংলাদেশ ব্যাংককে দিতে হয়। এটা তাদের আইনি দায়িত্ব। নানা নিয়ম-কানুন-বিধি-নীতিমালার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা করে। সর্বোপরি রয়েছে ‘আমানত সুরক্ষা আইন’ (ডিপোজিট ইনসিউরেন্স)। এ প্রসঙ্গে পরে আছি।


আমরা জানি, দেশে কিছু লোক থাকে যারা প্রতিদিন ব্যাংকে তাদের সঞ্চয় গচ্ছিত রাখে। আবার কিছু লোক আছে যারা টাকা তোলে প্রয়োজনে। দুইয়ের মধ্যে একটা গভীর সম্পর্ক আছে। ধরে নিতে হয়, যত টাকা জমা হবে, তার চেয়ে কম টাকা তোলা হবে। উলটো হলেই বিপদ। উলটো হলে অর্থাৎ জমা কম তোলা বেশি হলে ব্যাংক ব্যবসা চলবে না। সব ব্যাংক লালবাতি জ্বালাবে/লিক্যুইডেশনে যাবে। কারণ ব্যাংকে গচ্ছিত টাকা ব্যাংক বসিয়ে রাখে না। ওই টাকা যাদের ঋণের দরকার আছে তাদের দেওয়া হয়। এর ওপর ব্যাংক সুদ পায়। ওই সুদের টাকার একটা অংশ প্রশাসনিক খরচ হয়, বাকিটা আমানতকারীদের সুদ হিসাবে দেওয়া হয়। দুইয়ের মাঝেই ব্যাংকের মুনাফা।


এক্ষেত্রে সমস্যা কোথায়? দৃশ্যত সবকিছু ঠিক থাকলে কোনো সমস্যাই নেই। সমস্যা কখন? সমস্যা হয় যখন টাকা জমা হয় কম, তোলা হয় বেশি এবং যদি একসঙ্গে সব আমানতকারী টাকা তুলতে যায়। তখন ব্যাংক চলে না। কারণ ব্যাংকের টাকা তার ঘরে থাকে না। ওই টাকা ঋণ হিসাবে বিনিয়োজিত। এখানেই গোল বাধে। জ্বলে লালবাতি/লিক্যুইডেশন। তবে রক্ষা পায়, যদি ‘লেন্ডার অব দ্য লাস্ট রিসোর্ট’ হিসাবে বিপদে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণ দিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে উদ্ধার করে। এটা হলে কোনো সমস্যা নেই। বস্তুত আমাদের দেশে এ পর্যন্ত অনেক ঘটনা ঘটেছে, যখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক শুধু টাকা দিয়ে নয়, ‘পুনর্গঠন প্রক্রিয়া’, অধিগ্রহণ (টেকওভার) ইত্যাদির মাধ্যমে ব্যাংকগুলোকে বাঁচিয়েছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us